সোমবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৫, ০৬:৩৩ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম ::
কৃষকের আশার আলো কালীগঞ্জে ‘সমলয়’ পদ্ধতিতে বোরো ধান চাষে বাড়ছে আগ্রহ কমলগঞ্জে গরিব ছাত্রছাত্রীদের মেধা বৃত্তি প্রদান রূপসী শেরপুর স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের পূর্ণাঙ্গ কমিটি জলঢাকায় বিএনপির বিক্ষোভ সমাবেশ নগরকান্দায় বাস ও ট্রাকের সংঘর্ষে নিহত ২, আহত ২৫ পতিত ফ্যাসিস্ট সরকার রাষ্ট্রীয় সকল প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করেছিল-ডা. মাজহার গত ১৫ বছর গণমাধ্যম সাদাকে সাদা এবং কালোকে কালো বলতে পারে নি-বিএফইউজের মহাসচিব কাদের গনি শহীদ নূর আলী কলেজে নবীনবরণ উৎসব উলিপুরে সাদপন্থীদের কার্যক্রম বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ শরণখোলা সরকারি ডিগ্রি কলেজে পিঠা উৎসব : তিন লক্ষাধিক টাকার পিঠা বিক্রি

জিআই স্বীকৃতি পেলো শেরপুরের ছানার পায়েস

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ৫ ডিসেম্বর, ২০২৪

ভৌগোলিক নির্দেশক বা জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে শেরপুরের ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন মিষ্টান্ন ছানার পায়েস। গতকাল বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) শিল্প মন্ত্রণালয়ের পেটেন্ট, শিল্প-নকশা ও ট্রেডমার্ক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. মুনির হোসেন সই করা এক নিবন্ধন সনদে ছানার পায়েসকে ৪৩তম জিআই পণ্য হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এর আগে গেল বছর জেলা ব্র্যান্ডিং বাস্তবায়ন কমিটির বৈঠকে ছানার পায়েসকে জিআই পণ্য হিসেবে নিবন্ধনের সুপারিশ করা হয়। এ নিয়ে শেরপুর জেলার স্থানীয় সুগন্ধি চাল তুলশী মালাসহ দুটি পণ্য জিআই স্বীকৃতি পেল। স্থানীয়দের তথ্যমতে, ব্রিটিশ আমলে জেলার ঘোষপট্টিতে প্রথম ছানার পায়েস তৈরি হয়। সে সময়ে জমিদাররা ঘোষপট্টিতে বানানো ছানার পায়েস বিশেষ পদ্ধতিতে কলকাতায় নিয়ে যেতেন। এছাড়া আত্মীয়-স্বজন কিংবা অন্য জমিদারের কাছে উপঢৌকন হিসেবেও এ পায়েস পাঠাতেন তারা।
বিয়ে, জন্মদিন, ঈদ, পূজা, অতিথি আপ্যায়নসহ সবখানেই ছানার পায়েসের সুখ্যাতি রয়েছে। এক সময় হাতে গোনা দু-একটি দোকানে এই মিষ্টি তৈরি হলেও এখন জেলার অন্তত ৫০টি দোকানে ছানার পায়েস তৈরি হয়। এসব দোকানে প্রতিদিন গড়ে বিক্রি হয় প্রায় ২০০-৪০০ কেজি ছানার পায়েস।
দুধ, চিনি, ময়দা ও এলাচ দিয়ে এই প্রসিদ্ধ ছানার পায়েস তৈরি হয়। প্রথমে উচ্চমাত্রার তাপে দুধ জ্বাল দিয়ে ঘন করে ক্ষীর করা হয়। এরপর আলাদাভাবে দুধ থেকে ছানা কেটে তাতে সামান্য ময়দা মিশিয়ে ছোট ছোট গুটি করা হয়। এই গুটি চিনিমিশ্রিত শিরায় ভিজিয়ে আগে তৈরি করা ক্ষীরে ছেড়ে হাল্কা আঁচে জ্বাল দেওয়া হয়। এভাবেই তৈরি হয় সুস্বাদু ছানার পায়েস। এক কেজি ছানার পায়েস তৈরির জন্য দুই কেজি দুধ, আধা কেজি চিনি, সামান্য পরিমাণ ময়দা ও ১০-১৫ গ্রাম এলাচের প্রয়োজন হয় বলে জানান কারিগররা। পৌর শহরের নিউমার্কেটের ‘অনুরাধা মিষ্টান্ন ভা-ারে’র কালিপদ ঘোষ দীর্ঘ ৩৫ বছর ধরে মিষ্টি তৈরির কাজ করেন।
তিনি বলেন, আমাদের এখানে খাঁটি দুধ দিয়ে তৈরি করা হয় ছানার পায়েস। তাই স্বাদটা একটু ভিন্ন, চাহিদাও ব্যাপক। এক কেজি ছানার পায়েস তৈরির জন্য দুই কেজি দুধ, আধা কেজি চিনি, সামান্য পরিমাণ ময়দা ও ১০-১৫ গ্রাম এলাচ লাগে। অনুরাধা মিষ্টান্ন ভা-ারের স্বত্বাধিকারী বাপ্পি দে জানান, শেরপুরের ঐতিহ্যবাহী ছানার পায়েসের চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলছে। জেলার বাইরে থেকে কোনো ভ্রমণপিপাসু শেরপুরে এলে, ফেরার সময় ছানার পায়েস সঙ্গে করে নিয়ে যান। ছানার পায়েস জিআই স্বীকৃতি পাওয়ায়, এর কদর আরও বাড়বে। এটি আমাদের ঐতিহ্যের স্মারক।
বিক্রেতাদের তথ্যমতে, বর্তমানে প্রতিকেজি ছানার পায়েস ৩৮০-৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। জন্মদিন, ঈদ, বিয়েসহ বিভিন্ন পার্টিতে ছানার পায়েসের প্রচুর অর্ডার আসে। জেলার ঝিনাইগাতী, শ্রীবরদী, নকলা ও নালিতাবাড়ী উপজেলাতেও পাওয়া যায় এই মিষ্টি।
শেরপুর শহরের চারু সুইটস, অনুরাধা, দুর্গাচরণ মিষ্টান্ন ভা-ার, নিউ প্রেমানন্দ, প্রেমানন্দ গ্র্যান্ড সন্স, অমৃত গোপাল মিষ্টান্ন ভা-ার, নন্দ গোপাল, মা ভবতারা মিষ্টান্ন ভা-ার, হোটেল আবির নিবির, হোটেল হৃদয়, হোটেল নূর রহমান ও বল্লব মিষ্টান্ন ভা-ারে ছানার পায়েস পাওয়া যায়। জেলার পাঁচ উপজেলাতেও বিভিন্ন মিষ্টির দোকানে ছানার পায়েস বিক্রি হয়। শেরপুরের জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমান বলেন, শেরপুরের প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী খাবার হিসেবে ছানার পায়েসের বেশ সুনাম রয়েছে। দেশে-বিদেশে এ মিষ্টির বেশ কদর রয়েছে। ছানার পায়েস তৈরি ও বিপণনের সঙ্গে অনেকেই জড়িত। এটিকে জিআই পণ্য হিসেবে নিবন্ধনের ফলে এর কদর আরও বাড়বে।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com