দিনাজপুরের বীরগঞ্জে ঘরের ছাদের উপর কমলা চাষ করে সফলতা পেয়েছেন কাহারোল উপজেলার জয়নন্দ ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক নীল রতন সাহা নিপু। শীত মৌসুমে চায়না থ্রি জাতের কমলার আবাদ করেছেন তিনি। ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা ইউটিউব দেখে নীল রতন সাহা নিপু ও তার স্ত্রী সুলেখা দেওয়ান বাগানের পরিচর্যা করে এবার ফলনও বাম্পার পেয়েছে তিনি। সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শুধু কমলার গাছ নয়। বাড়ির ছাদে রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির ফুলের গাছ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার কমলা বাগানের ছবি ছড়িয়ে পড়লে পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের সেতাবগঞ্জ রোডস্থ এলাকার নিত্যান্দ সাহার ছেলে নীল রতন সাহা নিপুর ঘরের ছাদের বাগান দেখতে প্রতিদিনই দূর দূরান্ত থেকে আসছে অনেকেই। বাগানের গাছে গাছে সবুজ পাতার আড়ালে ঝুলছে পাকা রসালো কমলা। বাগান দেখতে আসা দশরত রায় বাবুল জানান, সারাজীবন আমরা বাজার থেকে কমলা কিনেছি। তবে আজ এই বাগান দেখে পরিকল্পনা করছি, আমিও একটি কমলা বাগান করবো। ছাদে কমলার বাম্পার ফলন দেখে আমি মুগ্ধ হয়েছি। এভাবে যদি সবাই ঘরের ছাদে কমলা গাছ লাগায়, তাহলে বাজার থেকে কমলা কিনতে হবে না। ফরমালিনমুক্ত ও রাসায়নিক কীটনাশক ছাড়াই কমলা পেতে পারি আমরা। নীল রতন সাহা নিপু জানান, এক সময় আমি সিলেটে চাকরি করতাম। সেখানে দেখেছিলাম অনেক বাসার ছাদে কমলা এবং মালটার গাছ। সেই থেকে আমার মনে ইচ্ছা জাগে আমিও আমার বাসায় এই ধরনের একটি কমলার বাগান তৈরি করব। আমার এক বন্ধু দিনাজপুর বিএডিসি এর ডিডি ডা. মোজাফফর হোসেনের কাছ থেকে পরামর্শ নিয়ে সেখান থেকে চায়না থ্রি জাতের তিনটি কমলার চারা এনে বাগানে রোপণ করি। অতিরিক্ত রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহার ছাড়াই এবছর দুটি গাছে প্রায় ১০০টি বেশি কমলা ধরেছে। নিয়মিত নিজের তৈরি প্রাকৃতিক সার ব্যবহার করি। মাত্র ২ বছরের ব্যবধানে বাগানে চোখ ধাঁধানো কমলার ফলন পেয়ে অনেক খুশি। তিনি আরো বলেন, গত বছরের চেয়ে এ বছর কমলার ফলন অনেক বেশি। এক একটি গাছে ৮০ থেকে ৯০টি কমলা ধরছে। উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শরিফুল ইসলাম জানান, মাঠ ফসল চাষাবাদের পাশাপাশি ছাদ কৃষি সম্প্রসারণের জন্য কৃষি বিভাগ কাজ করছে। বিশেষ করে বাড়ির ছাদে বিভিন্ন সবজি লাউ, খাটো জাতের সিম, বরবটি, পুঁইশাক, বেগুন, টমেটো, মরিচ ও বিভিন্ন ফল আম, মাল্টা, কমলা, পেয়ারা, লেবু, আমড়া, ড্রাগন ফ্রুট চাষে উদ্বুদ্ধ ও পরামর্শ প্রদান করছি। শৌখিন চাষি তিনি বাড়ির ছাদে কমলা চাষ করে সফল হয়েছে আমরা এ বিষয়ে কারিগরি সহায়তা প্রদান করছি। কমলা চাষের এ সফলতা উপজেলার অন্যান্য বাসাবাড়ির ছাদে ছড়িয়ে দিতে আমরা চেষ্টা করছি।