উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ হচ্ছে দেশ
সারাবছর দেশে পেঁয়াজ চাষাবাদ না হওয়ায় এতো দিন আমদানির উপর নির্ভর ছিলো বাংলাদেশ। সিংহভাগ পেঁয়াজই আমদানি করা হতো পাশ্ববর্তী দেশ ভারত থেকে, যা বাংলাদেশে ভারতের আধিপত্য বিস্তারের অন্যতম হাতিয়ার হয়ে ওঠেছিলো। নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য পেঁয়াজ নামক এই অস্ত্র দিয়ে নানান রকম চাপে রাখার চেষ্টা করা হতো বাংলাদেশকে। মানে হুটহাট করে পেঁয়াজ রপ্তানি করে বন্ধ করে দিতো কিংবা হুমকি দিতো। গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতনের পর ভারতে পাশাপাশি চীন, পাকিস্তান ও তুরস্ক থেকেও পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়। এতেই ভারতের পেঁয়াজ চাষিদের কপালে কপাল পুড়তে শুরু করে। কমতে থাকে পেঁয়াজ নিয়ে ভারতের দাদাগিরি!
এদিকে মৌসুমী পেঁয়াজের পাশাপাশি গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ উৎপাদনেও সফলতা পেয়েছে বাংলাদেশের কৃষকরা। ফলে সারাবছরই বাংলাদেশে পেঁয়াজ উৎপাদন হবে। এর মধ্য দিয়ে পেঁয়াজ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ হচ্ছে দেশ। বাংলাদেশকে আর পেঁয়াজে আমদানি নির্ভর হতে হবে না।
কৃষি অধিদপ্তরের তথ্য মতে, বংপুর ও রাজশাহী বিভাগের বিভিন্ন জেলা, ফরিদপুরসহ দেশের অনেক জায়গায় গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ ‘নাসিক এমপিপি-৩ ও বিপ্লব’ চাষাবাদ শুরু হয়েছে। উৎপাদন খরচ কম ও মুড়িকাটা জাতের তুলনায় উৎপাদনও ২০-২৫ শতাংশ বেশি হওয়ায় কৃষকদের আগ্রহ সৃষ্টি করেছে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ। এতে সফলতাও পেয়েছেন দেশের চাষিরা। শুধু গ্রীষ্মকাল নয়, সারাবছরই এই পেয়াজ চাষাবাদ করা যাবে। ফলে আর পেঁয়াজ আমদানি করতে হবে না বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
অপরদিকে পেঁয়াজ উৎপাদনে বাংলাদেশ স্বয়ংসম্পূর্ণ হচ্ছে- এই খবরে ভারতের কৃষকদের মাথায় হাত! কারণ বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের কৃষকদের সিংহভাগ পেঁয়াজই বাংলাদেশে রফতানি করা হতো। এবার তারা এই পেঁয়াজ কোথায় বিক্রি করবে? করোনার সময়ে আমদানি রফতানি বন্ধ থাকায় পেঁয়াজ পচে যাওয়ার সেই স্মৃতি তাদের আবারও নাড়া দিচ্ছে। সেটা ছিলো সাময়িক, এবার তো স্থায়ী বন্ধ হবে। এতে একদিকে পুড়বে ভারতীয় কৃষকদের কপাল। অন্যদিকে পেঁয়াজ নিয়ে বাংলাদেশের সাথে ভারতের দাদাগিরি বন্ধ হবে।