বগুড়ার শেরপুরে অটোরিকশা চালকদের নিকট থেকে আবারও চাঁদা আদায় শুরু হয়েছে। মালিক সমিতির নামে সাড়ে চার মাস পর শহরের একাধিক পয়েন্টে সড়কে চলাচলকারি ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা চালকদের নিকট থেকে চল্লিশ টাকা করে প্রতিদিন চাঁদ নেওয়া হচ্ছে অভিযোাগ উঠেছে। এতে করে চালকদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। এমনকি এই চাঁদাবাজি বন্ধের দাবিতে আন্দোলন কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নেমেছেন তাঁরা। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল দুপুরে চাঁদা বন্ধের দাবি জানিয়ে মহাসড়কে বিক্ষোভ করেছেন ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা চালক। পৌর এলাকার হাজীপুর থেকে বের হওয়া ওই বিক্ষোভ মিছিলটি মহাসড়কের ধুনটমোড় এলাকায় গিয়ে সমাবেশের মাধ্যমে সমাপ্ত করেন। এসময় চাঁদা আদায় বন্ধে আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর দৃষ্টি আর্কষন করে বক্তব্য রাখেন তাঁরা। পাশাপাশি সাধারন অটো চালকরা বিভিন্ন শ্লোগান দেন। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিগত ০৫আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামীলীগের নেতৃত্বাধীন সরকারের পতন ঘটে। এরপর এই উপজেলায় চলাচলকারি প্রায় চার হাজার অটোরিকশা থেকে লাখ লাখ টাকা চাঁদা আদায় বন্ধ হয়ে যায়। এছাড়া অন্যান্য পরিবহন থেকেও চাঁদা আদায় বন্ধ হয়। ফলে পরিবহন চালকদের মধ্যে স্বস্থি ফিরে আসে। এভাবে সাড়ে চার মাস চাঁদা আদায় বন্ধ থাকে। কিন্তু বর্তমানে এই সেক্টরটি হাত বদল হয়ে নতুন করে গঠিত হয় মালিক সমিতি। আর ওই সমিতির নামে চলতি মাসের ১৯ডিসেম্বর থেকে অটোরিকশা চালকদের নিকট থেকে আবারো চাঁদা আদায় শুরু করা হয়েছে। ভুক্তভোগী অটোরিকশা চালক সোলায়মান আলী আক্ষেপ করে বলেন, ভেবেছিলাম ৫আগষ্টের পর থেকে চাঁদাবাজদের হাত থেকে মুক্তি পেলাম। কিন্তু হঠাৎ করে আবার এই চাঁদা আদায় শুরু হওয়ায় কষ্টও পেয়েছি। তাই প্রতিবাদ জানাতে রাস্তায় নেমেছি। চাঁদা আদায় বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত প্রতিবাদ আর আন্দোল চালিয়ে যাবো। মাঠ ছাড়বেন বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি। আবুল কাশেমসহ একাধিক চালক অভিযোগ করে বলেন, অভাবের সংসার আমাদের। তাই কোনো উপায় অন্ত না দেখে পেটের দায়ে ভাড়া নিয়ে অটোরিকশা চালাই। কিন্তু রাস্তায় নামলেই প্রতিদিন চল্লিশ টাকা করে চাঁদা দিতে হয়। এটি আমাদের ওপর বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। চাঁদাবাজদের নিকট থেকে মুক্তি চান বলে মন্তব্য করেন তাঁরা। জানতে চাইলে শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম এ প্রসঙ্গে বলেন, চাঁদা আদায়ের কোনো তথ্য জানা নেই। সুনির্দিষ্ট করে অভিযোগ পেলে আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আশিক খান এ প্রসঙ্গে বলেন, পৌরসভা থেকে টার্মিনাল ইজারা দেওয়া হয়েছে। তবে কার্যাদেশ এখনো দেওয়া হয়নি। সেটি আসছে জানুয়ারি থেকে কার্যকর হবে। সেখানে প্রতি অটোরিকশার জন্য ১০ টাকা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। এরবাইরে আর কোনো টাকা নেওয়ার সুযোগ নেই। তাই আগামি দু-একদিনের মধ্যে খোঁজখবর নিয়ে ওই বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে দাবি করেন তিনি।