বগুড়ার ধুনটে শ্রাবণী আক্তার খুশি (১৫) নামের এক তরুণীকে নিয়ে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। ওই তরুণীর বাবার দাবি, শ্রাবণী মেয়ে থেকে ছেলে রূপান্তরিত হয়েছে। এরপর তার নাম পাল্টে রাখা হয়েছে ওমর ফারুক শ্রাবণ।
ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার কালেরপাড়া ইউনিয়নের সরুগ্রাম পূর্বপাড়া গ্রামে। শ্রাবণী ওই এলাকার খোকন মিয়ার বড় মেয়ে। এলাকাবাসী জানান, শ্রাবণী আক্তার খুশি স্থানীয় এক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী। গত এক বছর ধরে তার মধ্যে ছেলেদের মতো আচরণ লক্ষ্য করা যায়। এরপরই শ্রাবণীকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যায় তার পরিবার। গত শনিবার শ্রাবণী ‘মেয়ে থেকে ছেলে হয়েছেন’ খবর চাউর হলে এলাকার সাধারণ মানুষ তাদের বাড়িতে ভিড় করেন।
শ্রাবণী আক্তার খুশি বলেন, ‘‘মেয়ে থেকে ছেলে হওয়ায় আমার কোনো দুঃখ নেই। বাবার কাজে সহযোগিতা করতে পারব ভেবে ভালো লাগছে।’’
শ্রাবণীর বাবা খোকন মিয়া বলেন, ‘‘মেয়ের আচরণে পরিবর্তন লক্ষ্য করার পর থেকে নিয়মিত ডাক্তারি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করিয়েছি। ছয় মাস নানা ধরনের পরীক্ষা শেষে শ্রাবণী মেয়ে থেকে ছেলে রূপান্তরিত হয়েছে প্রমাণিত হয়েছে।’’
তিনি বলেন, ‘‘গত বৃহস্পতিবার পরীক্ষার প্রতিবেদন পাওয়ার পর বাড়িতে আসি। পরে মুরব্বীদের উপস্থিতিতে শ্রাবণীকে ছেলেদের পোশাক পড়িয়ে দিই। শনিবার মাথার চুল কেটে দেওয়ার পর ওর নাম পরিবর্তন করে ওমর ফারুক শ্রাবণ রাখা হয়েছে।’’
খোকন মিয়া আরো বলেন, ‘‘আমার তিনটি মেয়ে ছিল। ছেলে না থাকায় অনেক রকমের কথা শুনতে হয়েছে। এখন বড় মেয়ে ছেলে হিসেবে রূপান্তরিত হওয়ায় আমি খুব খুশি।’’ স্থানীয় ইউপি সদস্য পলাশ মিঞা বলেন, ‘‘স্থানীয়দের মাধ্যমে বিষয়টি শুনেছি। তবে, খোকন মিয়ার বাড়িতে এখনো যাওয়া হয়নি।’’
ধুনট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাইদুল আলম বলেন, ‘‘এ রকম কোনো খবর আমাদের জানা নেই।’’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইউরোলজি এন্ড এন্ড্রোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. এম এ বাতেন বলেন, ‘‘কেউ একটি নির্দিষ্ট জেন্ডারের অর্গান নিয়ে পৃথিবীতে আসলে অটোমেটিক অন্য জেন্ডারে ট্রান্সপ্লান্ট হওয়ার সুযোগ নেই। তবে, অনেকের যৌনাঙ্গ এবং প্রসাবের রাস্তায় ডেভলপমেন্টাল এনোমালি থাকে।’’ উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘অনেকের প্রসাবের রাস্তা মলদারের সামনে থাক। অনেকের আবার দুটো অ-কোষ অ-থলিতে আসে না, আলাদাও হয়ে থাকে। অথচ ওই ব্যক্তিটি পুরুষ। সেক্ষেত্রে তার শারীরিক গঠন ছেলেদের মতো হবে।’’ বেসরকারি মার্কস মেডিকেল কলেজের হরমোন বিশেষজ্ঞ ডা. নাজমা আক্তার বলেন, “জন্মের সময় মেয়ে বাচ্চার শরীরে ছেলেদের হরমন বেশি আবার ছেলে বাচ্চার শরীরে মেয়েদের হরমোন বেশি থাকলে কিছু বৈশিষ্ট্য প্রকাশ পেতে পারে। শিশু জন্মের পর এ ধরনের লক্ষণ প্রকাশের পরপরই পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা প্রয়োজন।’’