রবিবার, ১২ জানুয়ারী ২০২৫, ০৫:০০ পূর্বাহ্ন

দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ার দাবানল ভয়াবহ রূপ নিয়েছে

খবরপত্র ডেস্ক :
  • আপডেট সময় শনিবার, ১১ জানুয়ারী, ২০২৫

দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ার দাবানল ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। এরই মধ্যে ১ লাখ ৮০ হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে এবং অন্তত ১০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। দমকলকর্মীরা এখনো আগুন নেভানোর কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে প্রবল বাতাসের কারণে আগুন আরও দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই দাবানল আর্থিক ক্ষতির দিক থেকে ইতিহাসের অন্যতম ব্যয়বহুল হতে চলছে। দাবানলে ক্ষতিগ্রস্ত প্যাসিফিক প্যালিসেডস এলাকায় গড়ে একেকটি বাড়ির মূল্য প্রায় ৪০ লাখ ডলার। এরই মধ্যে বেশ কয়েকজন হলিউড তারকা আগুনে তাদের বাড়ি হারিয়েছেন। অন্যদিকে, উত্তরাঞ্চলীয় ইটনের দাবানল অপেক্ষাকৃত কম ধনী এলাকাগুলোতে ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠান জেপি মর্গান চেজ জানিয়েছে, দাবানলের কারণে আর্থিক ক্ষতি পাঁচ হাজার কোটি ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে, যার মধ্যে দুই হাজার কোটি ডলার বিমার আওতায় থাকবে।
বিমা বাজারের সংকট: এই দাবানল ক্যালিফোর্নিয়ার ভঙ্গুর বিমা ব্যবস্থার ত্রুটিগুলো আরও প্রকট করে তুলেছে। বিমা কোম্পানিগুলো ঝুঁকি এড়াতে রাজ্যের বাজার থেকে সরে যাচ্ছে। ২০২২ সালে রাজ্যের চতুর্থ বৃহত্তম গৃহবিমা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান অলস্টেট পলিসি বিক্রি বন্ধ করে দেয়। চলতি বছরের মার্চে স্টেট ফার্ম ৩০ হাজার বিমা পলিসি বাতিল করেছে, যার মধ্যে ১ হাজার ৬০০ পলিসি ছিল প্যাসিফিক প্যালিসেডস এলাকার।
যে কারণে এতটা ভয়াবহ হয়ে উঠলো লস অ্যাঞ্জেলেসের দাবানল: বিমা কোম্পানিগুলো সরে যাওয়ার কারণ হিসেবে দাবানলের ঝুঁকির যথাযথ মূল্যায়ন করতে না পারাকে দায়ী করা হচ্ছে। ১৯৮৮ সালের একটি ব্যালট আইনের কারণে বিমা কোম্পানিগুলো দাবানলের ঝুঁকি অনুযায়ী প্রিমিয়াম বাড়াতে পারেনি। ফলে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে দাবানলের ঝুঁকি বাড়লেও বিমা কোম্পানিগুলো এই ঝুঁকি নিতে রাজি হয়নি। ফলস্বরূপ, ক্যালিফোর্নিয়ার অনেক বাসিন্দা বাধ্য হয়ে ফেয়ার (ফেয়ার অ্যাক্সেস টু ইনস্যুরেন্স রিকোয়্যারমেন্টস) প্ল্যানে নির্ভরশীল হয়েছেন। এই অলাভজনক প্রতিষ্ঠানটি বিমার শেষ ভরসা হিসেবে কাজ করে। প্যাসিফিক প্যালিসেডস এলাকায় এটির সম্ভাব্য ক্ষতিপূরণের পরিমাণ ৩০০ কোটি ডলার, যা গত এক বছরে ৮৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে এই প্ল্যানে সর্বোচ্চ ক্ষতিপূরণের পরিমাণ ৩০ লাখ ডলারের বেশি নয়। ফলে অনেক ধনী ব্যক্তি বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে পারেন। এমন পরিস্থিতিতে যারা ক্ষতির মুখে পড়েননি, তারাও ঝুঁকিতে রয়েছেন। ফেয়ার প্ল্যান যদি ক্ষতিপূরণের ব্যয় মেটাতে ব্যর্থ হয়, তাহলে এর চাপ রাজ্যে থাকা বেসরকারি বিমা কোম্পানিগুলোর ওপর পড়বে। তবে আশার কথা হচ্ছে, গত ২ জানুয়ারি থেকে ঝুঁকির মডেলভিত্তিক মূল্যায়নের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর ফলে ভবিষ্যতে দাবানলের ঝুঁকি আরও সঠিকভাবে মূল্যায়ন করা সম্ভব হবে। সূত্র: দ্য ইকোনমিস্ট




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com