৭০ বছর বয়সী আমেনা বেওয়া শরীর বয়সের ভারে নুয়ে পড়েছে। চোখেও ঠিকমতো দেখতে পান না। নাতিকে সঙ্গে করে দুপুরে তিনি এসেছিলেন লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার তুষভান্ডার আর এম এম পি স্কুল মাঠে। শীতে কাঁপতে কাঁপতে আমেনা বেওয়া বলেন, ‘বয়স হয়ে গেছে, কাজকর্ম করতে পারি না। ছেলের সংসারে আছি। ছেলের আয় রোজগারও কম। কোনোমতে চলতেছি। ঠান্ডার কাপড় কিনার টাকা কই। একজন একটা স্লিপ দিয়ে বলল, এইটা দেখালি কম্বল দিবে। খুব উপকার হলো কম্বলটা পেয়ে। বুধবার (৮ জানুয়ারি) দুপুরে উপজেলার তুষভান্ডার আর এম এম পি স্কুল মাঠে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রায় ৫ হাজার ৭০০ জন অসহায় দরিদ্র ও শীতার্ত মানুষের হাতে একটি করে কম্বল তুলে দেন-উপজেলা নির্বাহী অফিসার সিপাত আনোয়ার তুমপা ষাটোর্ধ্ব রহিমা বেগম বলেন, কনকনে শীতে ঝুপড়ি ঘরে থাকা যায় না, চারপাশ দিয়ে শীতের বাতাস ঢোকে। তাই কোনোরকম রাত পার করে থাকি। কষ্টের যেন শেষ নেই। আমরা শীতের গরম কাপড় কিনতে পারি না। এই কম্বল পেয়ে খুব অনেক অনেক খুশি। তার মতো আব্দুর গফুর বলেন, এই শীতে একটি কম্বল যে কত দরকার তা একমাত্র শীতে কষ্ট পাওয়া মানুষগুলোই ভালো জানে। শীতের রাতে খুব কষ্ট করে রাত পার করছিলাম। আজ কম্বল পেয়ে চিন্তা মুক্ত হলাম, নিশ্চিন্তে রাতে ঘুমাতে পারব। কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার সিফাত আনোয়ার তুমপা বলেন, শীতে ছিন্নমূল ও দরিদ্র মানুষদের অনেক কষ্ট হয়। তাদের অনেকের শীতবস্ত্র কেনার সামর্থ্য নেই। অনেকে খোলা আকাশের নিচে রাত কাটায়। তাদের শীত নিবারণের কোনো ভালো ব্যবস্থা থাকে না। এজন্য উপজেলায় এবার ৫ হাজার ৭০০ জন অসহায়, দুস্থ ও দরিদ্রদের তালিকা করা কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। এ সময় উপজেলা প্রশাসন ও ইউনিয়ন পরিষদের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র প্রতিনিধিবৃন্দ এবং বিভিন্ন গণ্যমান্য রাজনৈতিক ব্যক্তিসহ বিভিন্ন পেশাজীবী ব্যক্তিবৃন্দ সহায়তা করেছেন।