শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারী ২০২৫, ০৮:৫৩ অপরাহ্ন

সর্বস্তরে নৈতিক শিক্ষার বিকল্প নেই

মোহাম্মদ ইমাদ উদ্দীন
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারী, ২০২৫

ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষা তথা ইসলামী শিক্ষা অন্যান্য শিক্ষার তুলনায় গুরুত্ব অপরিসীম। নিঃসন্দেহে ইসলামী শিক্ষায় সর্বোত্তম শিক্ষা। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন ইরশাদ করেন- ‘তোমাদের মধ্যে যারা ঈমান এনেছে এবং যাদেরকে ইলম দান করা হয়েছে আল্লাহ তাদের মর্যাদা বাড়িয়ে দেবেন বহুগুণ।’ (সূরা মুজাদালাহ-১১)
রাসূলুল্লাহ সা: ইরশাদ করেন, ‘তোমাদের মধ্যে সর্বোত্তম সেই ব্যক্তি যে কুরআন শিক্ষা করে এবং অপরকে শিক্ষা দেয়।’ (বুখারি-২/৭৫২)
হাদিস শরিফে এসেছে, ‘আল্লাহ তায়ালা ওই ব্যক্তির চেহারা উজ্জ্বল করে দেন, যে আমার কোনো হাদিস শুনেছে, অতঃপর অন্যের কাছে পৌঁছে দিয়েছে।’ (সুনানে আবু দাউদ-২/৫১৫)
ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষা এক প্রকার ইবাদতও বটে। হাদিস শরিফে এসেছে, ‘ইলম শিক্ষা করার জন্য পথচলা, হাঁটা, কষ্ট করা ইত্যাদিও ইবাদত। এগুলোর মর্যাদা আল্লাহর কাছে অত্যন্ত বেশি।’ (বুখারি-১/৩৭, মুসলিম-৪/২০৭৪)
ইলম অর্জনকারীর জন্য মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন নিজেই জিম্মাদার। হাদিসে এসেছে, ‘যে ইলম অনুসন্ধানে বের হয় সে ফিরে আসা পর্যন্ত আল্লাহর রাস্তায় থাকে।’ (জামে তিরমিজি-২/৯৩)
নৈতিকতাসমৃদ্ধ জনশক্তি তৈরির লক্ষ্যে সব ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীর জন্য নিজ নিজ ধর্মীয় শিক্ষার সুনিশ্চিত করতে হবে। আপসোস! ৯০-৯৫ শতাংশ মুসলিম দেশে শিক্ষার সর্বস্তরে ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষা এখনো নিশ্চিত হয়নি।
ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষার অভাবে তরুণ প্রজন্মসহ বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষ নানা ধরনের অনৈতিক কাজে জড়িয়ে পড়ছে। বিশেষ করে শিক্ষার সর্বস্তরে ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষা না থাকায় তরুণ প্রজন্ম বেপরোয়া হয়ে উঠছে। এমন অনৈতিক কার্যকলাপ থেকে আগামী প্রজন্মকে রক্ষা করতে হলে শিক্ষার সর্বস্তরে ধর্মীয় শিক্ষা বাধ্যতামূলক করতেই হবে। অথচ ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষা তথা ইসলামী শিক্ষার বাধ্যকতার ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ সা: ইরশাদ করেছেন, ‘ইলম (ধর্মীয় জ্ঞান) অর্জন করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর ফরজ।’ (ইবনে মাজাহ-২২৪)
বর্তমানে মাধ্যমিকের সিলেবাসে ধর্মীয় শিক্ষা রাখলেও পরীক্ষা না হওয়ার সিদ্ধান্তে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের কাছে গুরুত্ব কমে যাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে গেছে। সত্য বলতে, বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থায় ইসলামী শিক্ষাকে অনেকটাই গুরুত্বহীন করে দেয়া হয়েছে। দেশের ভবিষ্যৎ ছাত্রছাত্রীদেরকে নাস্তিক্যবাদের দিকে ঠেলে দিতেই ইসলামী শিক্ষা নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে সুকৌশলে। জাতীয় শিক্ষাক্রমে ইসলামবিরোধী ও হিন্দুত্ববাদী শিক্ষা সংযোজন করে ইসলামী শিক্ষা বিনাশ করার চক্রান্তে মেতে উঠেছে। কৌশলে নাস্তিক্যবাদী সিলেবাস বাস্তবায়নে মরিয়া হয়ে উঠছে।
বর্তমানে সমাজের প্রায় সর্বস্তরে এখন মূল্যবোধ ও নৈতিকতার অবক্ষয় বিদ্যমান; যা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে রাষ্ট্র। আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায়, বিশেষ করে পাঠ্যক্রমে ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষার দুর্বলতাই এর মূল কারণ বলে মনে করেন দেশের প্রথম সারির ইসলামী চিন্তাবিদ, শিক্ষাবিদ ও সচেতন নাগরিকরা। আগামী প্রজন্মকে সৎ, সাহস, সুনাগরিক, নীতিবান ও দ্বীনদার হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে এবং সমাজের নৈতিক অবক্ষয় রোধে জাতীয় শিক্ষা কার্যক্রমের প্রাইমারি স্তর থেকে সর্বোচ্চ মাস্টার্স পর্যন্ত তথা শিক্ষার সর্বস্তরে ইসলামী শিক্ষার বিকল্প নেই।
লেখক : সংগঠক ও কলামিস্ট




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com