ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের পর পরিবারের জিম্মায় ছাড়া পেলেন অভিনেত্রী ও গায়িকা মেহের আফরোজ শাওন এবং অভিনেত্রী সোহানা সাবা। রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্রের অভিযোগে দুজনকে বৃহস্পতিবার রাতে আটক করে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করে ডিবি। জিজ্ঞাসাবাদ করে বিভিন্ন বিষয়ে জানার পর নিজ নিজ পরিবারের জিম্মায় তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। ডিবি সূত্র জানিয়েছে, শাওন ও সাবার বিরুদ্ধে আগে কোনো মামলা ছিল না। শুধুমাত্র রাষ্ট্রবিরোধী অভিযোগ ওঠার পরে তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডিবিতে আনা হয়। তাদেরকে বিভিন্ন বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরে তাদের বিষয়ে
সিদ্ধান্তের জন্য ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা ও নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে আলোচনা করা হয়। সবকিছু বিবেচনায় এনে পরিবারের জিম্মায় তাদেরকে ছেড়ে দেওয়া হয়। শুক্রবার বিকাল ৫টার দিকে শাওন ও সাবার পরিবারের সদস্যরা ডিবিতে আসেন। পরে পরিবারের সদস্যদের জিম্মায় দুজনকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
গত ১৫ জানুয়ারি কলকাতার হোটেল পার্কে অনুষ্ঠিত সভায় সরাসরি এবং ভার্চুয়ালি যারা উপস্থিত ছিলেন তাদের মধ্যে শাওনের নাম উঠে আসে। এরপর তাকে গোয়েন্দা নজরদারিতে রাখা হয়। এরপরই বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে এই অভিনেত্রীকে রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্রের অভিযোগে হেফাজতে নেয় ডিবি। শাওনকে রাজধানীর ধানমন্ডির বাসা থেকে তাকে একটি মাইক্রোবাসে সরাসরি মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়। দেশজুড়ে শেখ মুজিবের ভাস্কর্য ভাঙচুর ও আওয়ামী লীগের নেতাদের বাড়িঘরে ভাঙচুর-আগুন দেওয়ার মধ্যে একইদিন সন্ধ্যায় জামালপুরের নরুন্দিতে শাওনের গ্রামের বাড়িতেও আগুন দেওয়া হয়। এর কিছুক্ষণ পরই তার গ্রেপ্তার হওয়ার খবর আসে। এরপর বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকা থেকে সোহানা সাবাকে আটক করে মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাওয়া শাওন ২০২৪ সালে দ্বাদশ জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনে প্রার্থী হতে ময়মনসিংহ বিভাগ থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছিলেন। শাওনের মা তহুরা আলীও জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত আসনের এমপি ছিলেন। শাওন কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের স্ত্রী। অভিনেত্রী সোহানা সাবাও ডিবির নজরদারিতে ছিলেন। তার বিরুদ্ধে দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের অভিযোগ রয়েছে। আওয়ামী লীগপন্থি শিল্পীদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ‘আলো আসবেই’ এর সক্রিয় সদস্য ছিলেন অভিনেত্রী সোহানা সাবা।