আসন্ন পবিত্র রমজান মাস কে সামনে রেখে লালমি ও বাংগী চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার চাষীরা। অনেক আশা নিয়ে পবিত্র রমজান মাসে রোজাদারদের ইফতারীতে লালমি ও বাংগী যাতে পৌছে দিতে পারে সেই লক্ষ্যে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় খেতের পরিচর্যা নিয়ে ব্যাস্ত সময় পার করছেন চাষীরা। রমজান মাসের প্রথম দিন থেকেই এসব লালমি ও বাংগী ক্রেতার হাতে পৌছে যাবে বলে আশাবাদী তারা। ইতিমধ্যেই গাছে ফল এসেছে। রমজানের প্রথম দিন থেকেই উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারে পাওয়া যাবে এসব লালমী ও বাংগী। এছাড়া দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পাইকারী মহাজনেরা এসে এসব ফল কিনে ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় নিয়ে যায়। স্থানিয় কৃষক শেখ জাফর জানান, এবছর আবহাওয়া অনুকুলে থাকায়, সময় মত সার,বীজ, কীটনাশক প্রয়োগ করায় ফলন ভাল হবে বলে আশাবাদী। আরেক কৃষক মোঃ বাদশাহ জানান প্রতি বিঘা ৪২ শতক জমিতে লালমি আবাদে খরচ হয় ২৫ /৩০ হাজার টাকা। ফলন ভাল হলে বিঘা প্রতি ১ লক্ষ থেকে ১ লক্ষ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় হয়। তবে গাছে মুছি(ফল) আসার পর কুয়াশার কারনে অনেক মুছি শুকিয়ে লাল হয়ে নস্ট হয়ে যায়। ফলে লোকসানের সম্ভবনাও থাকে। আরেক কৃষক সায়েদুল জানান বালিয়া পোকা ও সাদা মাছির আক্রমন ঠেকাতে সময় মত কীটনাশক প্রয়োগ করতে না পারলে উৎপাদন কমে যেতে পারে, তাতে অনেক সময় চাষীদের লোকসান গুনতে হয়। দড়ি কৃষ্ণপুর গ্রামের কৃষক শেখ মোস্তাকিম বলেন সরকারীভাবে আমাদের প্রতি যদি কৃষি বিভাগ সু-দৃষ্টি দেয় তাহলে সদরপুরে লালমি উৎপাদন আরো ভাল হতো। এ ব্যাপারে উপজেলার কৃষিকর্মকর্তা নীটুল রায় বলেন, এবছর উপজেলার মোট ৪৭৫ হেক্টর জমিতে লালমি আবাদ করা হয়েছে। সরকারীভাবে লালমি আবাদে কোন প্রকার আর্থিক সহায়তা বা প্রনোদনার ব্যাবস্থা না থাকলেও কৃষকদের সকল প্রকার পরামর্শ ও দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়। তাছাড়া কৃষকরা যাতে করে তাদের উৎপাদিত লালমি ভাল দামে বিক্রি করতে পারে এবং কোন ধরনের প্রতিবন্ধকতা সৃস্টি না হয় সেদিকেও আমাদের দৃস্টি থাকবে বলে জানান তিনি। উল্লেখ্য প্রতি বছর রমজান মাসকে সামনে রেখে উপজেলার কৃষ্ণপুর, কাটাখালি, যাত্রাবাড়ি, শৈলডুবী, মজুমদার বাজার, নয়ারচর, শ্যামপুর সহ বিভিন্ন এলাকায় লালমির আবাদ হয় অস্থায়ী বিক্রির হাট বসে। এসব অস্থায়ী হাট থেকে পাইকাররা ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের আড়তে নিয়ে যায়। অনেক আগে থেকেই ফরিদপুর জেলার সদরপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় উন্নতমানের লালমি ও বাংগীর আবাদ করে আসছেন কৃষকরা। স্থানীয় কৃষকরা প্রতিবছর রমজান মাস আসার আগেই অনেক আশা আকাঙ্ক্ষা নিয়ে এসব লালমি উৎপাদনে ব্যাস্ত সময় পার করেন।