জেলার সদর উপজেলার রনবিজয়পুর গ্রামের মরহুম সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের ছেলে সৈয়দ মাহমুদ হাসান ডাবলু (৩৭)মুরগি পালনে সফলতা পেয়েছেন।মুরগির ডিম বিক্রি করে প্রতিমাসে আয় করেন দেড় লাখ টাকা।
চরম প্রতিকুলতার মধ্য দিয়ে আজ থেকে ২০ বছর আগে মাত্র ৪’শ পোলট্রি মুরগির বাচ্চা এনে এই ফার্মের সুচনা করেন। কিন্তু অনুকুল আবহাওয়া আর লবনাক্ততার কারণে খুব একটা সুবিধা করতে পারে নাই।পরে ব্যবসার ধরন পরিবর্তন করে লেয়ার মুরগির বাচ্চা তোলেন তার ফার্মে এরপর থেকে আস্তে আস্তে তার লেয়ার ফার্ম বৃদ্ধি পেতে থাকে। ফার্ম পেশাকে বেছে নিয়ে তিনি তিনি যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর থেকে তিন মাসের ট্রেনি নেন। এছাড়া পর পর তিন বার ৫০ হাজার টাকা থেকে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋন গ্রহন করে আজ তিনি সফলতার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছেন।
এখন তিনি সরাসরি রংপুর নারিস হ্যাচারি থেকে লেয়ার মুরগির বাচ্চার অর্ডার দেন। বর্তমানে তার পাঁচটি সেডে সাড়ে ছয় হাজার লেয়ার মুরগি রয়েছে। এরমধ্যে ৩২’শ বাচ্চা ব্রোডিং নার্সিং বিশেষ তত্ত্বাবধানে ২৮ দিন পর দ্বিতীয় সেডে স্থানান্তর করা হয়। পর্যায়ক্রমে পাঁচ টি শেডে এভাবেই বাচ্চা ও মুরগির যতœ নেয়া হয়। পাঁচ মাস পর থেকে দু”বছর ডিম দিতে থাকে এরপর ঐ মুরগি বিক্রি করে দেয়া হয়।
বারো মাসের শুধু শীত মৌসুমের ৩ মাস ছাড়া ডিমের দাম ভালো পান বলে এই সফল খামারি জানান, তিনি দিনরাত পরিশ্রম করেন সঙ্গে তার বোন নওশীন শারমিন (২৬) সহ আরও ৪ জন কর্মচারী কাজ করে। ডাবলু সফল তরুণ উদ্যোক্তা হিসেবে ২০২৫ সালে জাতীয় যুব পুরস্কারে ভূষিত হন। তার দেখাদেখি রনবিজয়পুরের অনেক যুবক লেয়ার মুরগির ফার্ম করে স্বাবলম্বী হয়েছেন।
তিনি তার পেশায় খুব যতœশীল।নিয়মিত প্রতি বারে মুরগির সেডে ঢোকার সময় স্প্রে করেন কোন জীবানু যেন আক্রমণ করতে পারে।শিশুর প্রতি যেমন মা খুবই যতœশীল তেমনি খামারি সফল উদ্যোক্তা ডাবলু গভীর রাতেও কাজ করেন। ঘন ঘন লোডশেডিং থাকায় শীতে মুরগির বাচ্চার গরম তাপমাত্রায় কমতির কারনে চরম উদ্বেগ উৎকন্ঠায় দিনকাটে তার। কারণ প্রতিটি মুরগির বাচ্চার দাম অধিক। স্থানীয় ভাবে প্রাইভেট ভ্যাটেনারি ডাক্তার নিয়মিত সেডের মুরগিকে ভ্যাকসিন দিয়ে নিরাপদে রাখে।
ডাবলুর ফার্ম থেকে ব্যবসায়ীরা অগ্রীম অর্ডার দিয়ে ডিম মুরগি কিনে তারাও লাভবান হচ্ছেন বলে বাজারের মুরগির ব্যবসায়ী মুকুলও জাকির জানান।
সদর উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মো. সোহরাব হোসেন বাসসকে জানান, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর থেকে যুবকরা হাঁস মুরগি পালন ও মাছ চাষের উপর প্রশিক্ষণ নিয়ে এখন অনেকে স্বাবলম্বী। এদের মধ্যে ডাবলু অন্যতম তরুন সফল উদ্যোক্তা।
জেলা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর উপপরিচালক মো. আব্দুল কাদির বাসস কে জানান, যুব সমাজকে আলোকিত করতে সরকার নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। যুবকরা বিশেষ প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত হয়ে মাছ মাংস ডিম উৎপাদন করে মানুষের আমিষ ও প্রোটিনে চাহিদা মিটাচ্ছে।
অনেক কম বয়সী নারী তাদের আত্মকর্মসংস্থান হিসেবে শিশু বাচ্চা নিয়ে ক্লাসের পাঠদানে মনোনিবেশ করে বলেই সার্টিফিকেট অর্জন ও ঋন গ্রহন করে পোলট্রি, লেয়ার মুরগি পালনে নেমে পড়েন।ডাবলুর সফলতা আর জাতীয় যুব পুরস্কার তাকে অনেক সম্মান এনে দিয়েছে। এইচ এস সি পাস ডাবলু বলেন, শিক্ষা যেমন অপরিহার্য তেমনি চাকরির পিছনে না ঘুরে আজ তিনি প্রতিমাসে প্রায় দেড় লাখ টাকা আয় করছেন।