বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১১:৩৯ অপরাহ্ন

প্রয়োজনীয় সংস্কার ছাড়া জাতীয় নির্বাচন নয় : অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, ‘সংস্কার ছাড়া জাতীয় নির্বাচন করা যাবে না। নির্বাচন করার জন্য যে সংস্কার লাগে সেটুকুর জন্য জামায়াতে ইসলাম দিতে প্রস্তুত।’
তিনি বলেন, ‘সেটি করতে অনেক সময় লাগবে এবং সেটি নির্বাচিত সরকারের কাজ। তবে অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কার করে নির্বাচনের পক্ষে জামায়াত।’ গতকাল বৃহস্পতিবার আগারগাওস্থ নির্বাচন ভবনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পারওয়ার ইসির সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের কাছে তিনি এ কথা বলেন।
এর আগে, অধ্যাপক মিয়া গোলাম পারওয়ারের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিন, চার নির্বাচন কমিশনার, ইসি সচিরে সাথে প্রায় দু’ঘণ্টা বৈঠক করেন।
জামায়াত সেক্রেটারি বলেন, ‘অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করার লক্ষ্যে সুন্দর আলোচনা হয়েছে। আমরা লিখিত প্রস্তাবও দিয়েছি। আন্তরিকতা ও সৌহার্দপূর্ণ পরিবেশে আলোচনা করেছি। তারা সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। সক্ষমতা, সীমাবদ্ধতা নিয়েও আলোচনা করেছি। ২৩টি সুনির্দিষ্ট বিষয়ে আলোচনা করেছি।’
নিবন্ধন নিয়ে আলোচনা হয়েছি কি না? জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটা আদালতের বিষয়। আমরা আশা করি, ন্যায় বিচার পাবো। আশা করি, সুবিচার পাবো।’
দলের প্রতীকের বিষয়টি নজরে আনলে তিনি বলেন, ‘আমাদের দলীয় প্রতীক তো আছেই। আশা করি, আমরা আদালত থেকে ন্যায় বিচার পাবো।’
জামায়াতের সেক্রেটারি বলেন, ‘জনগণের আকাঙ্খা স্থানীয় নির্বাচন আগে হোক। আমরা জনগণের এই আকাঙ্খাকে সমর্থন করি। আমরা আনুপাতিক নির্বাচন চেয়েছি, কালো টাকা মুক্ত করে অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য। আরপিওতে ৯১ (এ) সংশোধন করে ইসির ক্ষমতা খর্ব করা হয়েছিল। সেটা বহাল করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘প্রবাসী ভোটারদের ভোট নিশ্চিত করতে হবে। ভোটার তালিকা হালনাগাদে হয়রানি নিরসনের অনুরোধও করেছি।’
তিনি আরো বলেন, ‘সংবিধানে প্রতিটি নাগরিকের দল করার অধিকার আছে। নিবন্ধন শর্ত কঠিন করে সেই অধিকার খর্ব করা হয়েছে। সেটা সহজ করার জন্য বলেছি। সরকারি চাকরি থেকে অবসরের তিন পর নির্বাচনে অংশ নেয়ার বিধান আনতে বলেছি।’
ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের প্রস্তুতিতে একমত কি না? জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘মাস আমাদের কাছে বিষয় না। বিষয় হলো প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষ করতে হবে। ৩০০ আসনে প্রার্থী দেয়ার সক্ষমতা জামাতের আছে। আমরা প্রস্তুত।’
জাতিসঙ্ঘের মানবাধিকার কমিশনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে তারা গুম, খুন নিয়ে যে তদন্ত করেছে সেখানে জামায়াতের পক্ষ থেকে তারা কোনো সহযোগিতা পায়নি। এই বিষয়ে আপনাদের দলের অবস্থান কি? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এটি নিয়ে গতকালকে আমরা গণমাধ্যমে কথা বলেছি। এই তথ্য সঠিক নয়। আমরা চেক করে দেখেছি। আমরা জাতিসঙ্ঘ হিউম্যান রাইটস কমিশনের সাথে তথ্য, যত ফ্যাক্স, যত মেইল সব আমরা রেসপন্স করেছি। এই তথ্যটা কিভাবে এসেছে আমরা চেক করবো। আমরা তথ্য যাচাই করেছি, তথ্যটা সঠিক নয়।’
ইসি কর্মকর্তারা জানান, ‘নিবন্ধন বাতিলের আগে নির্বাচন কমিশনে দলটির সর্বশেষ যোগাযোগ হয়েছিল ২০১২ সালের ২ ডিসেম্বর। সে সময় নিবন্ধন বাঁচাতে দলটি গঠনতন্ত্রে সংশোধন এনে জমা দিয়েছিল। ওই দিন তৎকালীন আইনবিষয়ক সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট জসীম উদ্দিন সরকার সংশোধিত গঠনতন্ত্রের মুদ্রিত কপি কমিশনে জমা দেন। পরবর্তীতে ২০১৩ সালের ১ আগস্ট আদালত জামায়াতের নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করে রায় দিলে নির্বাচনে অংশ নেয়ার পথ বন্ধ হয়ে যায়। ২০১৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচন বিএনপির সাথে বর্জন করে। ২০১৫ সালে নির্বাচন কমিশন স্থানীয় নির্বাচনের প্রতীকের তালিকা থেকে দাঁড়িপাল্লা বাদ দিলে স্থানীয় নির্বাচনেও জামায়াতের ভোটে অংশ নেয়ার পথ বন্ধ হয়ে যায়। ২০১৭ সালের এসে সংসদ নির্বাচনের প্রতীকের তালিকা থেকেও দলটির প্রতীক বাদ দেয় ইসি।’
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে কেএম নূরুল হুদার কমিশন দলটির নিবন্ধন বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করে। তৎকালীন ইসি সচিব মো: হেলালুদ্দীন আহমদের ২০১৮ সালের ২৮ অক্টোবর স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ২০০৮ সালের ৪ নভেম্বর দলটিকে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ অনুযায়ী নিবন্ধন দেয়া হয়েছিল।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com