ঢাকা, নারায়নগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে গোপনে এখানো বরিশালের বিভিন্ন এলাকায় আসছে মানুষ। তার পাশাপাশি সাধারণ মানুষের এখনো অপ্রয়োজনে ঘর থেকে বের হচ্ছে, ফলে শতভাগ সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখাটা কঠিন হয়ে উঠেছে।
অপ্রয়োজনে ঘর থেকে বের হওয়া রোধ আর সামাজিক দুরত্ব নিশ্চিতের লক্ষে পুলিশের পক্ষ থেকে জায়গায় জায়গায় চেক পোষ্ট আর জেলা প্রশাসেনর পক্ষ থেকে ভ্রাম্যমান আদালতের কার্যক্রম নিয়মিতো পরিচালনা করা হচ্ছে। তবে পটুয়াখালী ও বরগুনায় ২ ব্যক্তির করোনয় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর পর গোটা দক্ষিনাঞ্চলেই কিছুটা শঙ্কা বেড়েছে।
যদিও এরইমধ্যে বিভাগের ৬ জেলাতেই অন্যস্থানের মানুষ প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে স্থানীয় প্রশাসন। যানবাহন চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের সাথে সাথে সড়ক পথে নজরদারি বাড়ানো হলেও এখন নৌ-পথে পন্যবাহি নৌ-যান আর ছোট ছোট ট্রলারে চেপে মানুষ আসছে বরিশালে। বিভাগের বরিশাল ও ঝালকাঠি জেলাসহ বিভিন্ন জেলার বিভিন্ন এলাকা ও গ্রাম ব্যক্তি উদ্যোগে পুরোপুরি লগডাউন করা হয়েছে।
তবে দাবি উঠেছে প্রশাসনিকভাবে বরিশালকে লক ডাউন করার। করোনায় যাতে বরিশালে কোনো নাগরিক আক্রান্ত না হয়, সেই বিষয়টিকে মাথায় রেখেই এই দাবী তোলা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন অনেকে। বরিশাল নগরের নাজিরমহল্লাসহ মেট্রোপলিটনের বেশ কিছু স্থানে এলাকাবাসীর উদ্যোগে লক ডাউন করা হয়েছে। যেটাকে সাধুবাদ জানিয়েছেন প্রশাসনের লোকজনও। তবে এতে করে জরুরী সেবা কার্যক্রম যাতে ব্যহত না হয় সেদিকেও খেয়াল রাখার আহবান জানিয়েছে প্রশাসন। কবি ও সাংবাদিক সৈয়দ মেহেদি হাসান বলেন, গতরাতেও ভোলা থেকে প্রায় ৩০ জনের মানুষ বরিশালে ট্রলার যোগে আসে। নৌপথে নির্বিঘ্নে আসলেও সড়কে উঠতেই পড়ে থানা পুলিশের সামনে।
তারা তাদের প্রথমে জীবানুনাশক স্প্রে দেয়, পরে জিজ্ঞাসাবাদ করে নির্ধারিত গাড়িতে সামাজিক দুরত্ব নিশ্চিত করে পরবর্তী গন্তব্য’র উদ্দেশ্যে পাঠিয়ে দেয়। যা অনেকটাই তরিঘরি করে। এরআগের রাতে উজিরপুরে ৮ বাড়ি বিশেষ নজরদারীর আওতায় আনে প্রশাসন। কারণ ৭ জন্য ব্যক্তি নারায়নগঞ্জ থেকে গোপনে সেখানে চলে এসেছেন। বরগুনার আমতলী, ভোলা ও পটুয়াখালীর বিভিন্ন স্থানে নারায়নগঞ্জ ও ঢাকা থেকে মানুষ নৌ-পথে গোপনে চলে আসছে। যা সত্যিই আমাদের জন্য উদ্বেগ ও শঙ্কার কারণ।
বরিশাল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি পুলক চ্যাটার্জী বলেন, মাদারীপুরে প্রচুর প্রবাসী রয়েছে। যারা আমাদের জেলায় অবাধে প্রবেশ করছে। তাছাড়া মাদারীপুরের শিবপুর আমাদের জেলা থেকে বেশি দুরে নয়। এছাড়াও পটুয়াখালীর দুমকিতে নারায়নগঞ্জ থেকে আসা এক ব্যক্তি করোনায় আক্রান্ত হযে মারা গেছে এবং বরগুনার আমতলীতে আওয়ামী লীগের এক নেতাও করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। তার জানাযায় অনেক লোক হয়েছে এবং তার মরদেহ খোলা অবস্থায় ছিলো। আমতলী ও দুমিকি এলাকা লক ডাউন করা হলেও লক ডাউন করার আগে লোকজন যদি আমাদের জেলায় এসে থাকে তাহলে সেটা আমাদের জন্য দুশ্চিন্তার। তাই বরিশাল জেলা অনতিবিলম্বে লক ডাউন করা উচিৎ।
বিভাগের কেন্দ্রস্থল বরিশাল, তাই এখানে আতংকের কারণ বেশি, সেজন্য অতিদ্রুত বরিশাল লক ডাউন হওয়া প্রয়োজন বলে জানিয়ে বরিশাল সচেতন নাগরিক কমিটির সভাপতি অধ্যাপিকা শাহ সাজেদা বলেন, এদেশের মানুষ না খেয়ে মরবে না। অতএব এই এপ্রিল মাস লক ডাউন অবস্থায় যেন বরিশালকে রাখা হয়। বরিশাল জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়র রহমান বলেন, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে যে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে সেটাই আমরা কঠোর ভাবে পালন করছি। অপ্রয়োজনে কেউ বাহিরে বের হলে তাকে আইনের আওতায় আনা হচ্ছে। আবার জেলায় প্রবেশেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
এমআইপি/প্রিন্স/খবরপত্র