সিরাম ইনস্টিটিউটের তৈরি টিকা ভারতের বাইরে রফতানির নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে দেশটির সরকার। এমন খবর প্রকাশ হওয়ার পর উদ্বেগ তৈরি হয়েছে বাংলাদেশে। এ ব্যাপারে গতকাল সোমবার এক প্রেস ব্রিফিংয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, ‘আমরা এ বিষয় নিয়ে সকাল থেকেই কাজ করছি। পুরোপুরি খবর আমরা এখনো অবহিত নই। ইতোমধ্যে বেক্সিমকোর সাথে আলোচনা হয়েছে। আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাথেও আলোচনা হয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আবার ভারতে যে আমাদের মিশন আছে, তাদের সাথে আলাপ করেছে এবং আমাদের মিশন ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাথে আলোচনা করেছে। উনারা আশ্বস্ত করেছেন, আমাদের সাথে যে চুক্তি হয়েছে ওই চুক্তি ব্যহত হবে না।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমরা বিষয়টি নিয়ে এতগুলো জায়গায় আলোচনা করেছি। আমরা আশ্বস্ত যে, এটি কোনো সমস্যা হবে না। সমাধান আমরা আশা করি পেয়ে যাব। এ বিষয়ে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি।’
উল্লেখ্য, কয়েক মাসের জন্য অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন রফতানিতে উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সেরাম ইনস্টিটিউটের উপর নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত সরকার। মার্কিন বার্তা সংস্থা এপি’কে দেয়া সাক্ষাতকারে সিরাম ইনস্টিটিউটের প্রধান নির্বাহী আদর পুনেওয়ালা এ কথা জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘রোববার ভারতের নিয়ন্ত্রণ সংস্থা তাদের ভ্যাকসিনের জরুরি অনুমোদন দিয়েছে। তবে শর্ত হচ্ছে ভারতের সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সিরাম ইনস্টিটিউট ভ্যাকসিন রফতানি করা যাবে না। আমরা এ মুহূর্তে শুধু ভারত সরকারকে ভ্যাকসিন সরবরাহ করতে পারবো। ভ্যাকসিন মজুদ না করারও নির্দেশ দেয়া হয়েছে।’ পুনেওয়ালা আরো বলেন, ভারতের অন্তভ্যরীণ বাজারে ভ্যাকসিন বিক্রি করা থেকেও সিরামকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে। অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রেজেনেকার টিকার ১০০ কোটির বেশি ডোজ উৎপাদন এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সরবরাহের জন্য অক্সফোর্ড ও অ্যাস্ট্রাজেনেকা এবং গেটস ফাউন্ডেশন ও গ্যাভির সাথে আংশীদারিত্ব চুক্তি রয়েছে সিরাম ইনস্টিটিউটের।
বাংলাদেশ আগামী মাসের শুরুতে যে ৫০ লাখ ডোজ টিকা পাবে বলে আশা করা হচ্ছে তা ওই সিরাম ইনস্টিটিউটের কাছ থেকেই পাওয়ার কথা। প্রতি মাসে ৫০ লাখ ডোজ হিসেবে পুরো তিন কোটি টিকা কেনার সিদ্ধান্ত জানায় সরকার। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক জানিয়েছিলেন, প্রতি ডোজ টিকার ক্রয়মূল্য চার ডলার। সব খরচ মিলিয়ে দাম পড়বে পাঁচ ডলার। বাংলাদেশী টাকায় হিসাব করলে ৪২৫ টাকার মতো।