জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে বাংলাদেশ ও ভারত সরকারের যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত হচ্ছে তার বায়োপিক ‘বঙ্গবন্ধু’। ভারতীয় নির্মাতা শ্যাম বেনেগালের পরিচালনায় এ সিনেমায় বঙ্গবন্ধুর চরিত্রে অভিনয় করবেন আরিফিন শুভ। গত শনিবার (৯ জানুয়ারি) শুভসহ সিনেমাটির অভিনয়শিল্পীদের একাংশ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত করেন। সে সাক্ষাতে প্রধানমন্ত্রীর ব্যবহারে মুগ্ধ হয়েছেন বলে জানালেন আরিফিন শুভ।
শুভ বলেন, ‘আমরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দু-আড়াই ঘণ্টা ছিলাম। ওই সময়ে তার সঙ্গের স্মৃতি আজীবন স্মরণীয় হয়ে থাকবে। অনুপ্রেরণীয় কিছু স্মৃতি থাকবে। উনি একজন অসাধারণ ব্যক্তিত্বের মানুষ। কিন্তু ওনার সঙ্গে আলাপ করলে বুঝা যায় কতটা সহজ-সরল। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তো ওনার প্রজ্ঞা, জ্ঞান অতুলনীয়। কিন্তু এর বাইরে একজন সাধারণ মানুষ হিসেবেও ওনার রসবোধ, ব্যবহার অসাধারণ। সত্যিই আমি মুগ্ধ।’
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতে বঙ্গবন্ধুর ছোট কন্যা শেখ রেহানাও উপস্থিত ছিলেন। এ নিয়ে শুভ বলেন, ‘ওনাদের সঙ্গে এবারের আলাপটা অনেকটা পারিবারিক আবহে হয়েছে। তারা দুজন বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে অনেক স্মৃতিচারণ করেছেন। বই পড়ে কিংবা অন্যের মুখে শুনে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে অনেক কিছু জানলেও ওনার সন্তানের (শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা) মুখে শোনাÍএ অনুভূতি অন্যরকম।’ গত শনিবার বিকেল ৩টা থেকে আড়াই ঘণ্টা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতে শুভ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন নুসরাত ফারিয়া, নুসরাত ইমরোজ তিশাসহ ২০ জন শিল্পী।
সাক্ষাত শেষে সবাই প্রধানমন্ত্রীকে ঘিরে কথা বলছিলেন। তখন শুভ একটু দূরে ছিলেন। তখন প্রধানমন্ত্রী তাকে ডাক দেন। এ নিয়ে শুভ বলেন, করোনার কারণে আমি ভিড়ে এড়াতে দূরে দাঁড়িয়ে ছিলাম। তখন তিনি বলেন, ‘আমার আব্বা কোথায়?’ এমন একজন অসাধারণ ব্যক্তিত্বের এ ধরণের সেন্স অব হিউমার সত্যিই অতুলনীয়।
ফিরে আসার আগে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাকে ডেকে শুধু বললেন, “আমার আব্বার চরিত্রটা ভালোভাবে করো।”
‘বঙ্গবন্ধু’র শুটিং শুরু হবে ২৫ জানুয়ারি থেকে ভারতের মুম্বাইয়ে। এর আগে ১৯ জানুয়ারি বাংলাদেশ শিল্পীদের একটা অংশ ভারত যাবেন। শুভও যাবেন একই সময়ে ।
তিনি জানান, ভারতে গিয়ে ২০ থেকে ২৪ জানুয়ারি তারা শেষ পর্যায়ের ওয়ার্কশপে অংশ নিবেন। এর আগে দেশে বসে তিনি বঙ্গবন্ধুর উপর লেখা বিভিন্ন বই, আর্কাইভে থাকা ওনার বিভিন্ন ভিডিও ফুটেজ ও ওনাকে কাছ থেকে দেখেছেন এমন মানুষদের সাক্ষাৎকার দেখছেন। মোটামুটি এভাবেই নিজেকে প্রস্তুত করছেন ‘বঙ্গবন্ধু’ চরিত্রের জন্য। গত বছরের ১৭ মার্চ সিনেমাটির মহরত বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত হবার কথা থাকলেও করোনার কারণে তা বাতিল করা হয়। ভারতের মুম্বাই ফিল্ম সিটিতে ২৫ জানুয়ারি থেকে ১০ এপ্রিল পর্যন্ত টানা শুটিং চলবে ‘বঙ্গবন্ধু’র। শুভর অংশ শেষ হবে ৯ এপ্রিল। এরপর বাকি অংশের শুটিং হবে বাংলাদেশে। ‘বঙ্গবন্ধু’ এ বছরই মুক্তি দেওয়ার ইচ্ছে সরকারের। দেশে ফেরার পর আরিফিন শুভ নতুন একটি সিনেমার শুটিংয়ে অংশ নিবেন। তবে ওই সিনেমার শুটিংয়ের ব্যাপারে এখনই কিছু বলতে চান না শুভ।