সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপির ছোট ভাই বসুরহাট পৌরসভা নির্বাচনে আ’লীগের মনোনীত মেয়র পদপ্রার্থী আবদুল কাদের মির্জা বলেন, আগামী ১৬তারিখে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশে ও দেশের বাহিরে অনেক আলোচনা ও সমালোচনা হচ্ছে, অনেক বিতর্কের জম্ম দিয়েছে। সে জন্য আজকে আমি আমার বক্তব্য উপাস্থাপনের জন্য এ সমাবেশের আয়োজন করে আপনাদেরকে কষ্ট দিচ্ছি। সভায় বসুরহাট নির্বাচন সুষ্ঠু অবাধ ও নিরপেক্ষ চায়। আমি আবারও বলছি আমার স্পষ্ট বক্তব্য আমি অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করব, ভোট ডাকাতির বিরুদ্ধে কথা বলব। এ নির্বাচন নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হচ্ছে। একরামুল করিম চৌধুরী ধানের শীষের প্রার্থী কামাল উদ্দিন চৌধুরীর কাছে ১কোটি টাকা পাঠিয়েছে, নির্বাচনে আমাকে হারানোর জন্য। আপনাদেরকে টাকা দিলে আপনারা খেয়ে ফেলবেন, ভোট ১৬ তারিখ ঠিকমত দিবেন। তিনি জনগণের উদ্দেশ্যে বলেন, ভোটের দিন কোন অনিয়ম হলে আপনারা বাঁশের লাঠি তৈরী করবেন, ভোট চোরদের খতম করবেন। একেবারে মেরে ফেলবেন না। গিরার নিছে লাঠি দিয়ে পিঠিয়ে পা ভেঙ্গে দিবেন। আমরা রূপালী চত্বরে তাদেরকে বেঁধে টাঙ্গিয়ে রাখব। মির্জা বলেন, একরাম পুত্র, রাজপুত্র আইকন। রাজপুত্র আমাদের এলাকায় এক কুলাঙ্গার সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যানের মাধ্যমে অস্ত্র পাঠিয়েছে। আমি প্রশাসনকে বলেছি কিন্তু অদৃশ্য শক্তির ইশারায় অস্ত্র উদ্ধার হয়নি। আমি সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করে বাংলাদেশের মানুষকে প্রমাণ করে দিতে চাই গণতন্ত্র কি জিনিস? ভোটাধিকার কি জিনিস? বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা দিয়েছেন, এদেশের মানুষের ভাতের ও ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা জন্য। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মানুষকে অর্থনৈতিক মুক্তি দিয়েছেন, অর্থাৎ ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করেছেন, ভোটের অধিকার এখনও পূর্ণাঙ্গভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়নি। এরশাদ বিরোধী আন্দোলনের সময় ডাঃ মিলনকে বাম রাজনীতিবিদরা গুলি করে হত্যা করেছে, আন্দোলনকে চাঙ্গা করার জন্য। এখানে ভোটকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য কাউকে মেরে হত্যাকান্ড সংগঠিত করতে পারে। তিনি আরও বলেন, নোয়াখালীর ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার সাংবাদিকরা গতকাল আমার নিকট থেকে ইন্টারভিউ নিয়েছে, কিন্তু দেখিয়েছে নোয়াখালির তথাকথিত আওয়ামীলীগ নেতার ইন্টারভিউ। কাদের মির্জা বলেন, আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন ও মাহবুব-উল-আলম হানিফ আওয়ামীলীগে উড়ে এসে জুড়ে বসেছে। তারা কিসের রাজনীতি করেন, তিনি ফরিদপুরের এমপি নিক্সন চৌধুরীকে উদ্দেশ্যে বলেন, আপনি বলেছেন, আমরা নাকি চুনো পুটি, চুনো পুুটিদের কথা কে শুনে? শেখ হাসিনার কাছে যাওয়ার ওদের সুযোগ ও যোগ্যতা নেই। এমপি সাহেব আপনার বয়স কত? আমার ৪৭ বছরের রাজনীতির বয়স আপনার হবে নাকি। ঠিক আছে আমরা চুনো পুটি, আমরা গ্রামে থাকি। আপনি আমাদের জাতীয় নেতা ও ত্যাগী নেতা জাফর উল্যাহ চৌধুরীর সাথে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে পেশী শক্তি প্রয়োগ করে, কেন্দ্র দখল করে, ভোট ডাকাতি করে, আন্ডু, পান্ডু ও গান্ডুদের ব্যবহার করে এমপি নির্বাচিত হয়েছেন। শেখ হাসিনার কাছে যেতে আপনার মত রাঘব-বোয়ালের দরকার হবে না, আমরা নিজেরাই যেতে পারব। আপনি একরাম চৌধুরী ও নিজাম হাজারীর অনুসারী, এসব এমপিরা পুলিশের ছত্রছায়ায় রাতে নারী, মদ ও জুয়া খেলা নিয়ে মত্ত থাকেন। আপনারা সিদ্ধান্ত নিন, ওদের আস্তানা খুঁজে বের করে, এদের বিরুদ্ধে গণ বিষ্ফোরণ গড়ে তুলুন, যাতে তারা এ অপরাধগুলো করতে না পারে। তিনি বলেন, গোপালগঞ্জ আ’লীগের এমপি ফারুক খানের নাম ধরে বলেন, যেখানে ৯৯ভাগ লোক আ’লীগের সমর্থক, সেখানে তিনি এমপি। দুর্ণীতির কারণে নিজের মন্ত্রীত্বটা ধরে রাখতে পারেনি। আমার নেতা ওবায়দুল কাদের আমাকে বলেন, কেন্দ্রীয় নেতাদের সমালোচনা না করার জন্য। আমাকে খোঁচালে আমি কি বসে থাকব নাকি? তিনি আরও বলেন, এক সাংবাদিক নেতা আমাকে ফোন করে বলেন আমাকে নাকি কেন্দ্রীয় নেতা বানাতে চায়, আমার কেন্দ্রীয় নেতা হওয়ার খায়েশ নেই, এমপি হওয়ার খায়েশ নেই, আমার যোগ্যতা হলো আমার এলাকা, আমি কোম্পানীগঞ্জ আ’লীগের একজন সদস্য হয়ে থাকতে চাই। যাদের কেন্দ্রীয় নেতা হওয়ার খায়েশ আছে তারা চামচামি করুক। মির্জা কাদের বলেন, আমি নোয়াখালীর অপরাজনীতির বিরুদ্ধে কথায় একরাম চৌধুরীর মাথা নষ্ট হয়ে গেছে। সে বুঝতে পেরেছে নোয়াখালীতে টেন্ডার বাণিজ্য, চাকুরী বাণিজ্য বন্ধ হয়ে যাবে, তবে আমার এ প্রতিবাদে নোয়াখালীর কিছু কিছু নেতার কদর বেড়েছে, কবিরহাটের ও কিছু নেতার কদর বেড়েছে। একরাম তাদের খোঁজ খবর নিচ্ছে। শেখ হাসিনা বিশ্ব ব্যাংককে চ্যালেঞ্জ করে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করেছে। শেখ হাসিনার উন্নয়নে বাংলাদেশ বিশ্বের রোল মডেল, শেখ হাসিনা আগামী ৩বছর ক্ষমতায় থাকে ও সুস্থ থাকে, তাহলে বাংলাদেশে উন্নয়নের কাজ করার মত কোন জায়গা থাকবে না। তিনি বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বসুরহাট রূপালী চত্বরে পথসভায় এসব কথা বলেন। পথসভাটি জনসমুদ্রে রূপ নেয়। কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আ’লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা খিজির হায়াত খানের সভাপতিত্বে, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আজম পাশা চৌধুরী রুমেলের সঞ্চালনায় পথসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ শাহাব উদ্দিন, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক নুর নবী চৌধুরী, আ’লীগ গোলাম শরীফ চৌধুরী পিপুল, আ’লীগের কেন্দ্রীয় নেতা ইস্কান্দার মির্জা শামীম, যুবলীগের কেন্দ্রী নেতা নুরুল করিম জুয়েল, যুক্তরাষ্ট্রের আ’লীগ নেতা রমেশ চন্দ্র নাথ, নাজমুল হক নাজিম, বসুরহাট পৌরসভা আ’লীগের সভাপতি জামাল উদ্দিন, আমেরিকান প্রবাসী আইয়ুব আলী, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যা আরজুমান পারভীন রুনু, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা মহিলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক নাজমা আক্তার শিফা, বসুরহাট পৌরসভা মহিলা আ’লীগের সভাপতি পারভিন মুরাদ, সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াছমিন মুক্তা প্রমুখ। আবদুল কাদের মির্জা আরও বলেন, যদি আমার এলাকার কোন কর্মী ও ভোটারকে রাস্তায় বাঁধা দেওয়া হয়, বাড়িঘর পুড়ানো হয়, খড়ের গাধায় আগুন লাগনো হয়, যদি এখানে রক্ত ঝরে, যদি ভোটে অনিয়ম হয়, যদি জাল ভোট দেওয়া হয় তবে এর দায়-দায়িত্ব নোয়াখালীর ডিসি, এসপি ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে নিতে হবে।