রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৪৮ পূর্বাহ্ন

মাধবদীতে করোনায় বন্ধ পাওয়ারলোম কারখানা ঝুঁকিপূর্ণ কাজে বাড়ছে শিশু শ্রমিক

আল আমিন মাধবদী (নরসিংদী) :
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২১

করোনার প্রভাব ও ঘন কুয়াশায় প্রচন্ড শীতে মাধবদী ও শেখেরচর বাবুরহাটে শীত বস্ত্রের বিক্রি সামান্য বাড়লেও বভিন্ন জেলার পাইকারি ক্রেতাগণ পাওয়ারলোমে তৈরি কাপড় এবং তৈরি পোশাক নিতে আসা কমে যাওয়ায় এ দু’টি ঐতিহ্যবাহী কাপড়ের হাটে স্থানীয় শিল্প কারখানায় তৈরি কাপড়ের বিক্রিতে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এতে বেশ কিছু বৃহৎ হস্ত তাঁত ও পাওয়ারলোম শিল্প কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে এসব ফ্যক্টরীতে কর্মরত লক্ষাধিক শ্রমজীবী নারী-পুরুষ বেকার হয়ে পড়েছে। মাধবদী, শেখেরচর বাবুরহাট এলাকা স্বাধীনতা উত্তর সময় থেকেই তাঁত ও পাওয়ারলোমে তৈরি কাপড় উৎপাদন ও বৃহৎ বিপনন কেন্দ্র হিসেবে বাংলার ম্যানচেষ্টার হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছে। প্রথমাবস্থায় কাঠের তৈরি হস্ত তাঁত ও পাওয়ারলোমে তৈরি কাপড় সারা দেশে এবং বর্হিবিশ্বের বেশ কিছু দেশে প্রসিদ্ধ আর টেকসই কাপড় হিসেবে সুনামের সাথে রপ্তানি হচ্ছে। বলা দরকার যে প্রাগৈতিহাসিক অধ্যায়ে লক্ষ্য করলে দেখাযায় যে কোন কারখানায় বস্ত্র বা যে কোন পণ্য প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানে অবহেলিত নি¤œ শ্রেণীর শ্রমিকদের শরীরের ঘাম আর বুকের তাজা রক্তই মিশে আছে প্রতিটি পণ্যে। অথচ বর্তমানে কর্মহীন মাধবদী অঞ্চলের শ্রমজীবীদের জীবনে আজও উন্নয়নের ছোয়া লাগেনি। ফ্যাক্টরী মালিকদের সাথে কথা বলার সময় শুধু কি করোনার কারনেই কারখানা বন্ধ? এমন প্রশ্নের উত্তরে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন জানান মাধবদী বাবুরহাটে সম্প্রতি অনেক কারখানায় কাঁচামাল তুলা, রং, সুতা খুচরা যন্ত্রাংশের সমস্যা রয়েছে, সরবরাহ কম এবং যে কাপড় তৈরি হয় তাতে পাইকারি ক্রেতা না থাকায় বিক্রিতে সমস্যায় পরে প্রায় অনেক কারখানাই বন্ধ হয়ে গেছে। ইতিমধেই আরো কিছু বৃহৎ কারখানা বন্ধ করে দেয়ার মৌখিক নোটিশে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে এসব কারখানায় কর্মরত কয়েক হাজার শ্রমজীবী মানুষ। গত এক সাপ্তাহে মাধবদী ও এর আশপাশের বেশ কিছু কারখানায় ঘুরে মালিক পাওয়া না গেলেও দায়িত্বশীল ম্যানেজার বা পরিচালকদের সাথে কথা বলার সময় তারা জানান কারখানা বন্ধ বা খোলা রাখা একান্তই মালিকের ব্যাপার আর বর্তমানে কাপড়ের বিশাল স্টক রয়েছে কারখানায় কিন্তু বাজারে বিক্রি কম এ কারনেই মিল বন্ধ রাখতে হতে পারে। শুধু মাধবদী নয় নরসিংদী সদর উপজেলার সকল কারখানায়ই শ্রমিকদের কোন লিখিত নিয়োগ পত্র নেই। দিনে এবং রাতে উৎপাদনের উপর ভিত্তি করেই মজুরি দেয়া হয় শ্রমিকদের। আর তাই যখন তখন শ্রমিক ছাটাই বা বহিস্কার অথবা কারখানা বন্ধ করলেও কোন অভিযোগ করার জায়গা নেই শ্রমিকদের। অন্যদিকে পাওয়ারলোম ও তাঁত ফ্যাক্টরী গুলি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এখানকার ঢালাই কারখানা, ঝাঁলাই কারখানায় ভারী ও ঝুঁকিপূর্ণ কাজে শিশু শ্রমিকের সংখ্যা দিন দিন বেড়ে চলছে। এসব শ্রমজীবী শিশুরা লেখাপড়া ছেড়ে বাধ্য হয়ে সংসারের হাল ধরছে বলে জানায় কয়েকজন শিশু শ্রমিক। বন্ধ হয়ে যাওয়া এবং চালু থাকা প্রতিটি কারখানার শ্রমিকরাই মানবিক কারনে কারখানা বন্ধ না করার জন্য মালিকদের প্রতি আকুতি জানিয়েছেন সকল কর্মরত শ্রমজীবী মানুষ।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com