বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, দীর্ঘ ৯ মাসের মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে বিশ্বমানচিত্রে স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম লক্ষ্য ছিল গণতন্ত্র, আইনের শাসন, মানবাধিকার, বাক-স্বাধীনতা, বেঁচে থাকার অধিকার ও অর্থনৈতিক মুক্তি। দুঃখের বিষয় আমরা মহান মুক্তিযুদ্ধের লক্ষ্যসমূহ হারাতে বসেছি। খুলনায় ছাত্র সংগঠনের সাবেক সদস্যদের নিয়ে আয়োজিত প্রীতি সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, জনগণের প্রত্যাশা ছিল স্বাধীন দেশে তারা তাদের মৌলিক অধিকারের নিশ্চয়তা পাবে, নিজের পছন্দের প্রার্থীকে নির্বাচিত করার ভোটাধিকার পাবে, ইজ্জত ও সম্মান নিয়ে বেচে থাকার গ্যারান্টি পাবে, সভা-সমাবেশ, চলাফেরা ও কথা বলার অধিকার পাবে।
শহীদ আমান, শহীদ রহমাতুল্লাহ, শহীদ মুন্সি হালিম, শহীদ আবুল কাশেম পাঠান, শহীদ শেখ বেলাল উদ্দীনের এ খুলনা মহানগরীর ইসলামী আন্দোলনের ঐতিহ্যকে পুনরুদ্ধার করতে সকলকে দুর্বারগতিতে জেগে উঠতে আহ্বান জনান তিনি।
তিনি বলেন, পরকালীন মুক্তিই মুমিন জীবনের একমাত্র সফলতা। সে লক্ষ্যে আমাদের সকলকে ছাত্রজীবনে ইসলামের রঙে রাঙ্গানো অতীতকে ধারণ করে বৃহত্তর অঙ্গনে দ্বীন প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন নিয়ে ঐক্যবদ্ধ ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে হবে। দেশ ও জাতির প্রয়োজনে যেকোনো ধরনের ত্যাগ স্বীকার করতে প্রস্তুত থাকতে হবে। বর্তমান প্রযুক্তি ও চ্যালেঞ্জের এ সময়ে একমাত্র যুবসমাজই একটি আধুনিক সভ্যতা ও কল্যাণকর রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দায়িত্ব পালন করতে পারে। খুলনা মহানগরীর সাবেক ছাত্রদেরকে এই ঐতিহাসিক ভূমিকা পালনের মাধ্যমে পরকালীন মুক্তি নিশ্চিত করার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
তিনি আরো বলেন, সারাদেশে জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী ছাত্রশিবিরসহ বিরোধী দলের হাজার হাজার নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করে মাসের পর মাস জেলখানায় আটকে রাখা হয়েছে। বহু সংখ্যক নেতা ও কর্মীকে ক্রসফায়ার দিয়ে হত্যা করা হয়েছে। শতশত নেতা-কর্মীকে রিমান্ডে নিয়ে শারীরিক, মানসিকভাবে নির্যাতন চালিয়ে পঙ্গু করা হয়েছে। গুম করা হয়েছে অসংখ্য নেতা-কর্মীকে।
গুম হওয়া ব্যক্তিদেরকে পরিবারের কাছে অবিলম্বে ফিরিয়ে দেয়ার জন্য তিনি সরকারের প্রতি আহ্বান জানান ও তাদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন এবং জামায়াতের শীর্ষ নেতৃবৃন্দসহ বিরোধী দলের সকল নেতা-কর্মীর মুক্তি দাবি করেন।
খুলনা মহানগরী, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা জামায়াতে ইসলামীর যৌথ উদ্যোগে নগরীর একটি মিলনায়তনে আয়োজিত এ প্রীতি সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন জামায়াতে ইসলামীর মহানগরী আমির মাওলানা আবুল কালাম আজাদ। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন দলের সাংগঠনিক সেক্রেটারি মুহাদ্দিস আব্দুল খালেক ও ঢাকা উত্তরের আমির মো: সেলিম উদ্দীন।
আরো বক্তৃতা দেন, খুলনা উত্তর জেলা আমীর মাওলানা এমরান হোসাইন, দক্ষিণ জেলা আমির মাওলানা গোলাম সরওয়ার, মহানগরী নায়েবে আমির মাস্টার শফিকুল আলম, সেক্রেটারি অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান, সহকারী সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ শাহ আলম, অ্যাডভোকেট শেখ জাহাঙ্গীর হুসাইন হেলাল, অধ্যাপক নজিবুর রহমান, উত্তর জেলার সহকারী সেক্রেটারি অধ্যাপক মিয়া গোলাম কুদ্দুস, অধ্যাপক আবু রুবাবা, মুর্কারম বিল্লাহ আনসারী, আজিজুল ইসলাম ফারাজী, মিম মিরাজ হোসেন, ইসলামী ছাত্রশিবিরের মহানগরী সভাপতি মোশাররফ হোসেন আনসারী ও দক্ষিণ জেলা সভাপতি মো: আবু ইসহাক।