তৈরি পোশাক কারখানায় কর্মরত নারীরা চাকরি হারানোর ভয়ে গর্ভধারণের খবর প্রতিষ্ঠানকে জানান না বলে জানিয়েছে ইন্ডাস্ট্রিয়াল বাংলাদেশ কাউন্সিল (আইবিসি)। নারীদের নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করতে নারী শ্রমিকদের পূর্ণ বেতনে ৬ মাসের মাতৃত্বকালীন ছুটিসহ ১০টি দাবিও জানিয়েছে সংগঠনটি। গতকাল রোববার (৭ মার্চ) দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এ দাবি জানায় আইবিসি।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক কামরুল হাসান বলেন, ‘নারীর প্রতি সকল প্রকার সহিংসতা বন্ধ করতে হবে। নারীর ক্ষমতায় সমতা এবং উন্নয়নের মূলধারায় পূর্ণ অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে।’
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, ‘তৈরি পোশাক কারখানার নারী শ্রমিকরা ছুটি পায় চার মাস অথচ সরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত নারীরা পাচ্ছেন ছয় মাসের। নারী শ্রমিকদের গর্ভধারণের খবর মালিকের নিকট পৌঁছালে নারী শ্রমিকদের চাকরিচ্যুতির হুমকিতে পড়তে হয়। কোনো অর্থিক সুবিধা ছাড়াই গর্ভধারণকারী নারী শ্রমিককে বের করে দেয়া হয়।’
এ সময় তারা বলেন, রাত দশটার পর কোনো নারী শ্রমিককে দিয়ে কাজ করানাে যাবে না, সরকারের এমন নির্দেশনা থাকার পরও জোরপূর্বক দিন-রাত, বিরতিহীনভাবে কাজ করানাে হয়। সে তুলনায় তাদের মজুরি ও খাওয়ার সুব্যবস্থা মালিক পক্ষ করে না।’ সংগঠনটির অন্যান্য দাবির মধ্যে রয়েছে সরকার কর্তৃক আইএলও কনভেনশন ১৯০ অনুস্বাক্ষর বা অনুমােদন করা, ট্রেড ইউনিয়নের প্রতিটি স্তরে ৪০ শতাংশ নারী প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা, নারী শ্রমিকদের প্রতি অসম্মানজনক আচরণ ও যৌন হয়রানি বন্ধ করা, নারী শ্রমিকদের জন্য প্রভিডেন্ট ফান্ড ও গ্রাচুইটিসহ সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, সরকারি নির্দেশ মােতাবেক কোনো নারী শ্রমিককে রাত দশটার পর কাজ না করানাে, প্রতিটি কারখানায় শিশু পরিচর্যা কেন্দ্র থাকতে হবে এবং শিশুদের জন্য সুষম খাদ্য ও সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করা, নারী-পুরুষের সমান অধিকার নিশ্চিত করা, কর্মজীবী নারীদের সন্তানদের জন্য বিনা খরচে লেখাপড়ার সুযােগসহ মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য বৃত্তির ব্যবস্থা করা, সকল কারখানায় আইএলও কনভেশন ৮৭ ও ৯৮ মােতাবেক গণতান্ত্রিক ট্রেড ইউনিয়ন গঠনসহ ফ্রিডম-অব-অ্যাসােসিয়েশন নিশ্চিত করা।