সিরাজগঞ্জের চলনবিল অধ্যুষিত তাড়াশের খিরা সারা দেশের মানুষের চাহিদা পুরন করে খিরার কদর বৃদ্ধি করেছে। সরেজমিন গিয়ে দেখা যায় উপজেলার বারুহাস ইউনিয়নের দিঘরীয়া গ্রামের বিখ্যাত খিরার আড়তে খিরা চাষীরা প্রতি নিয়ত ভটভটি, নছিমন, অটোভ্যান, মহিষের গাড়ীতে করে এলাকার কৃষক তাদের উৎপাদিত মনকে মন খিরা আড়তে নিয়ে আসছেন। ঢাকা, খুলনা, বগুড়া, নাটোর, সিলেট, টাংগাইল চিটাগাং সহ বিভিন্ন শহর থেকে পাইকারগণ ট্রাক নিয়ে খিরা ক্রয় করতে এসেছেন এই আড়তে। আড়তের পাশের রাস্তায় সারি সারি ট্রাক, পিকাব ভ্যান ও ইঞ্জিন চালিত ভডভডি,নছিমন দারিয়ে রয়েছে খিরা বহনের জন্য। খিরা বহন করে নিয়ে সারাদেশে সরবরাহ করা হচ্ছে এই তাড়াশের খিরা। প্রতিদিন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত মানুষের ঢল নেমে থাকে এই আড়তে। কৃষকরা প্রতিমন খিরা ৭শ থেকে ৭শ ৫০টাকা মন দরে বিক্রি করছেন। যা তাদের উৎপাদন খরচের চেয়ে অনেক বেশি। চলনবিল অধ্যুষিত তাড়াশ উপজেলায় চলতি বছরে খিরা চাষ করে ব্যাপক সফলতা পেয়েছে কৃষক। সেই সাথে খিরার আশাতীত মুল্যে পাচ্ছেন তারা। খিরা চাষি দিঘরিয়া গ্রামের সিদ্দিক মিয়া জানান, গত বছরের বন্যায় আমি রোপা-আমন চাষ করে প্রচুর ক্ষতি গ্রস্থ হয়ে পরি। কিন্তু এবার খিরা চাষ করে সফলতা পেয়েছি। মনোহরপুর গ্রামের কৃষক ফিরোজ জানান, আমার ২বিঘা জমিতে খিরা চাষ করতে ব্যয় হয়েছে ১৭হাজার টাকা। বর্তমানে আড়তে যে দামে খিরা বিক্রি করছি তাতে আমি প্রতি বিঘা ৩৫ থেকে ৪৫ হাজার টাকার খিরা বিক্রি করতে পারবো। খিরার আড়তে কর্মরত আবুল বাসার জানান, দিঘরীয়া গ্রামে খিরার আড়ত হওয়ার কারনে এলাকার প্রায় ৩শ লোকের কর্মের ব্যবস্থা হয়েছে। ওই শ্রমিকগণ সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত খিরা পানিতে পরিস্কার ও বস্তায় প্যাকেট করে দিয়ে প্রতি জন শ্রমিক ৫শ থেকে ৬শ টাকা আয় করে থাকে। ঢাকা থেকে আগত ট্রাক চালক বাবলু জানান, আড়তের পরিবেশ ভাল তবে বারুহাস বাজারের ট্রাক শ্রমিকের নাম করে প্রতিটি গাড়ী থেকে ৫শ থেকে ৬শ টাকা জোর পুর্বক খাজনা আদায় করছে। টাকা কম দিতে চাইলে খারাপ ব্যবহার করে। এ ব্যাপারে বারুহাস ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি করিম মেম্বর জানান, আমরা গাড়ী প্রতি ৩শ থেকে ৪শ টাকা নিয়ে থাকি। খারাপ ব্যবহার সম্পর্কে বলেন, আমার কোন শ্রমিক কর্তৃক খারাপ ব্যবহারের প্রমাণ পেলে শ্রমিক আইন অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। তাড়াশ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লুৎফুন্নাহার লুনা বলেন, তাড়াশ উপজেলায ৩শ ৫০ হেক্টর জমিতে উচ্চ ফলনশীল রোগ বালাইমুক্ত খিরার আবাদ করা হয়েছে। আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় ফলন ভাল হয়েছে। দাম ও ভাল পাওয়ায় কৃষক অনেক খুশি।