ময়মনসিংহের ধোবাউড়ায় সবুজ ফসলের মাঠে হলুদের হানা এ যেন এক নয়নাভিরাম দৃশ্য। পুলকিত মনে অপলক দৃষ্টিতে সূর্যমুখী ফসলের নয়নাভিরাম দৃশ্যে ফুলে ফুলে মৌমাছি- প্রজাপতির মিতালী। এতে প্রকৃতিপ্রেমী ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের হুমড়ি পড়া ভিড়ে অনেকেই হচ্ছেন সেলফি বন্দি। তাদের মন কেড়ে নিচ্ছে রক্তিম সূর্যের সাথে হলদে সূর্যের সখ্যতার নজরকারা সৌন্দর্য। সূর্যমুখী ফুলের নজরকাড়া সৌন্দর্য মুগ্ধ করে যে কাউকে। তেল হিসেবে এর কদর অনেক। বলা হয়ে থাকে সূর্যমুখী তেল সয়াবিন তেলের চেয়ে বেশি পুষ্টিগুণ সম্পন্ন। সূর্যমুখীর গাছ জ্বালানি হিসেবেও ব্যবহার করা যায়। তাই সূর্যমুখী চাষে একের অধিক লাভ। বিশ্ব বাজারে ভোজ্যতেলের ব্যাপক চাহিদা থাকায়, সয়াবিন, সরিষার তেলের ঘাটতি পূরণে সূর্যমুখী চাষের গুরুত্ব অপরিসীম। এ লক্ষ্যে সারাদেশের ন্যায় ধোবাউড়া উপজেলায় কৃষিবান্ধব সরকারের যুগান্তকারী পদক্ষেপে বাণিজ্যিকভাবে সূর্যমুখী ফুলের চাষ শুরু হয়েছে। প্রথমবারের মতো উচ্চ ফলনশীল জাতের সূর্যমুখী ফুলের চাষ হওয়ায় এলাকায় অনেক কৃষক এ ফুল চাষে মনস্থির করছে। ইতোমধ্যে বেকার যুবক ও স্থানীয় কৃষকদের মাঝে এ ফসল ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। আর সফলতার হাত ছানিতে বাঘবেড় ইউনিয়নের শালকোনা গ্রামের কৃষক মামুন খান রিপনের চোখে-মুখে ফুটে উঠেছে হলুদ ফুলের রঙিন হাঁসি। উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য মতে, উপজেলার ৭ টি ইউনিয়নে মোট ২ হেক্টরের অধিক জমিতে সূর্যমুখী চাষ হয়েছে । এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি জমিতে সূর্যমুখী ফুল চাষ করেছে বাঘবেড় ইউনিয়নের কৃষক মামুন খান রিপন। কৃষক মামুন খান রিপন জানান, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শে নিজ উদ্যোগে ১ একর জমিতে ধান চাষের বদলে সূর্য মুখি ফুলের চাষ করেছি। আশা করছি ন্যায্য দাম পেলে ধানের থেকে আরো বেশি লাভবান হবো। আমি মনে করি এ ফুল থেকে ধানের থেকে কম সময়ের মধ্যে প্রায় ৪০ হাজার টাকা লাভবান হবে। এ ফুলের বীজ যদি সরকারি ভাবে বিক্রি করতে পারি তাহলে ভবিষ্যতে আরো বেশি জমিতে সূর্যমুখীর চাষ করবো। এছাড়া সরকারী পৃষ্টপোষকতা আরো বৃদ্ধি করে আন্তর্জাতিক বাজার সৃষ্টি করা হলে সূর্যমুখী চাষে মানুষ আগ্রহী হয়ে উঠবে। বাঘবেড় ইউপি চেয়ারম্যান ফরহাদ রব্বানী সুমন জানান, অন্য ফসলের তুলনায় খরচ কম, লাভ বেশি হওয়ার কারণে সূর্যমুখী চাষ করছে কৃষকরা। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জানান, কৃষি পূর্ণবাসন, প্রণোদনার আওতায় চলতি বছর ৫০ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখী চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। বাংলাদেশে ভোজ্যতেলের প্রচুর ঘাটতি পূরণে বাইরের দেশ থেকে আমদানি করতে হয়। সে কারণে আমাদের দেশের প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা বিদেশে চলে যায়। সরকার সেটি নিরসনের লক্ষে প্রদর্শনী প্লটের মাধ্যমে এর চাষ শুরু করেছেন।