পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার ময়দানদিঘী ইউনিয়নের গাইঘাটা গ্রামে হাবিবুর রহমান (১৭) নামে এক কিশোর করোনা উপসর্গ সর্দি, জ্বর ও গলাব্যথা নিয়ে মারা গেছে। তার করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করেছেন জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। আজ সোমবার বিকেলে উপজেলা প্রশাসনের নির্দেশে করোনা রোগীদের মতোই সতর্কতা অবলম্বন করে তার দাফন সম্পন্ন করা হয়। একই সাথে ঐ বাড়িটি লকডাউন করে দেওয়া হয়েছে। যদিও ঐ কিশোরের পরিবার থেকে দাবি করা হচ্ছে, সে দীর্ঘদিন ধরে জন্ডিসে ভুগছিলেন। পুলিশ ও পারিবারিক সুত্রে জানা যায়, ঐ কিশোর রবিবার বিকেলে সর্দি, জ্বর ও গলা ব্যথায় অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সন্ধ্যায় সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। তবে ঐ কিশোরের পরিবারের লোকজন হাসপাতালে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলেছেন।
এদিকে ঐ কিশোরের এক ভাই সম্প্রতি মালদ্বীপ থেকে বাড়ি ফেরেন। আরেক ভাইও কয়েকদিন আগে সিরাজগঞ্জ থেকে বাড়ি ফেরেন। তারা হোম কোয়ারেন্টিনে ছিলেন। তাই সর্দি, জ্বর ও গলাব্যথা নিয়ে ঐ কিশোরের মৃত্যু হলে স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
মৃত কিশোরের বাবা ফজলু জানান, আমার ছেলে দীর্ঘদিন ধরে জন্ডিসে ভুগছিল। আমরা আগে তা টের পাইনি। কয়েকদিন আগে টের পেয়ে আমরা স্থানীয় চিকিৎসকদের পরামর্শ নিয়ে ওষুধ খাওয়াচ্ছিলাম। গত রবিবার বিকেলে সে আরো অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানে দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক ও নার্সরা আমার ছেলেকে ভাল করে দেখেনি। শ্বাসকষ্ট হলেও তারা করোনা সংক্রমণের ভয়ে অক্সিজেন দেয়নি। চিকিৎসায় গাফিলতির কারণেই তার ছেলের মৃত্যু হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।
পঞ্চগড় সিভিল সার্জন ডাঃ ফজলুর রহমান বলেন, ঐ কিশোর দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন বলে তার পরিবার জানিয়েছে। তারপরও আমরা তার করোনা সংক্রান্ত পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করেছি। পরীক্ষার পরেই নিশ্চিত হওয়া যাবে সে করোনায় আক্রান্ত ছিল কি-না। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সোলেমান আলী জানান, করোনা রোগীদের মতোই সতর্কতার সাথে ঐ কিশোরের লাশ দাফন করা হয়েছে। বাড়িটি লকডাউন করা হয়েছে। কেউ যেন তাদের বাসায় না যায় এবং তাদের বাসা থেকেও কেউ যেন বের না হয় সে জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।