সকাল থেকে রাস্তা আর বাজারের মোড়ে মোড়ে ঘুরছি কোন যাত্রী নাই। লোকজন না পেলে খাবো কি? এমন প্রশ্ন দিনাজপুরের হিলির রিকশা, ভ্যান ও অটোরিকশা চালকদের। সোমবার (১৯ এপ্রিল) সকাল থেকে সারাদিন হিলির বিভিন্ন সড়কের মহিলা কলেজপাড়া, রাজধানী মোড়, চুড়িপট্টি মোড়, শান্তি মোড়, বাসস্ট্যান্ডে, চারমাথা মোড়, হিলি সিপি সহ বাজারের প্রতিটি মোড়ে খালি রিকশা, ভ্যান ও অটোরিকশা নিয়ে চালকরা হাত গুটিয়ে বসে আছে। কারও মুখে কোন হাসি নেই। সবাই যেন কি এক রোগে ভুগছেন। চোখেমুখে হতাসা। মনমেজাজ ভাল নেই তাদের। কেউ মাথায় হাত,কেউ কপালে হাত, কেউ আকাশের দিকে তাকিয়ে, আবার অনেকেই রিকশার হেন্ডেল ধরে অধির আগ্রহে খুব কাছের মানুষের জন্য অপেক্ষায় আছেন। আসলে অপেক্ষা তো একটাই যাত্রীর। কথা হয় ভ্যানচালক বারেক আলীর সাথে, তিনি বলেন, বাড়িতে আমার ৬ জন ছেলে-মেয়ে, প্রতিদিন ২ কেজি চাল লাগে। সারাদিন শহর ঘুরে ৬০ থেকে ৭০ টাকা কামাই হচ্ছে। এই অল্প টাকায় সংসার চালাবো কি করে। রিকশা চালক লিটন বলেন, লকডাউনে বাড়িতে বসে থাকলে, সংসারের অভাব দেখে ভাল লাগে না। তাই রিকশা নিয়ে বাহির হয়েছি, কিন্তু সকাল থেকে ঘুরে বেড়াচ্ছি কোন যাত্রী নাই। অটোবাইক চালক মোস্তফা বলেন, সারাদিনে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা ভাড়া মারতাম। কিন্তু লকডাউন আসার পর ১০০ টাকাও কামাই করতে পারছি না। মাত্র ১০০ টাকা দিয়ে সংসারের কি চাহিদা মেটাবো। একজন ভ্যানচালক রাব্বানী বলেন, গরীব হওয়াটা বিপদ ভাই, যারা ধনী তাদের কোন অভাব নাই, চিন্তাও নাই। সকাল হলে শুরু হয় সংসারের চাহিদা। যা কামাই, তা দিয়ে এক থেকে দেড় কেজি চাল হবে। আর বাঁকি চাহিদা কোথায় পাবো। সরকারি কোন ত্রাণ সামগ্রী তাদের জন্য বরাদ্দ আছে কিনা, এবিষয়ে হাকিমপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ নুর-এ আলমে নিকট জানতে চাইলে, তিনি জানান, এখন পর্যন্ত সরকারি কোন ত্রাণ এই সমস্ত মানুষের জন্য আসেনি। তবে সরকারি যে কোন ত্রাণ সামগ্রী আসলে তাদের দেওয়া হবে।