চট্টগ্রামের ব্যাংকার ও তরুণ ব্যবসায়ী মোর্শেদ চৌধুরীকে হুমকি প্রদান ও মানসিক চাপ প্রয়োগে আত্মহত্যায় বাধ্য করার দায়ে হুইপ পুত্র শারুন চৌধুরীসহ প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্যে থাকা সকল অভিযুক্তকে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন ব্যাংকারের স্ত্রী ইশরাত জাহান চৌধুরী।
গতকাল শনিবার (২৪ এপ্রিল) সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সাংবাদিক সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন তিনি। এসময় তিনি বিচারের দাবিসহ কিছু সুনির্দিষ্ট অভিযোগ তুলে ধরেছেন। সাংবাদিক সম্মেলনে মোর্শেদ চৌধুরীর স্ত্রীর পাশাপাশি তার মা নুর নাহার ও কন্যা মোবাশ্বিরা জাহান চৌধুরী জুমও উপস্থিত ছিলেন।
লিখিত বক্তব্যে ইশরাত জাহান চৌধুরী বলেন, হুইপ পুত্র শারুনের পার্টনার পারভেজ সাকিব গং আমার স্বামীকে ২৫ কোটি টাকা ঋণ দেয়। তার বিপরীতে মোর্শেদ তাদের প্রায় ৩৮ কোটি টাকা পরিশোধ করে। তা সত্ত্বেও শারুন চৌধুরীর সেই সহযোগিরা অলিখিত চেক ও স্ট্যাম্পের ভয় দেখিয়ে আরো টাকা দিতে চাপ দেয়। নানাভাবে হুমকি দেয়। ফ্ল্যাটে হামলা চালায়। পাসপোর্ট কেড়ে নেয়। জীবনযাত্রা সংকুচিত করে ফেলে। অতিষ্ঠ হয়ে মোর্শেদ দেশ ত্যাগ করতে চাইলেও তাদের কারণে সফল হননি। ফলে তিনি আত্মহত্যার পথ বেছে নেন।
‘আত্মহত্যার প্ররোচনাকারী কারা’? এমন প্রশ্নে ব্যাংকার মোর্শেদের স্ত্রী বলেন, সুইসাইড নোট অনুযায়ী আত্মহত্যায় প্ররোচনাকারী হিসেবে মামলায় অভিযুক্ত যুবলীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শহীদুল হক চৌধুরী রাসেল, চিটাগাং চেম্বারের সাবেক দুই পরিচালক জাবেদ ইকবাল, তার ভাই পারভেজ ইকবাল ও নাইম উদ্দিন সাকিব। এছাড়াও বিভিন্ন সূত্রে শারুন চৌধুরী ও আরসাদুল আলম বাচ্চু গং-দের নামও উঠে আসে।
শারুনের সঙ্গে এই লেনদেন নিয়ে মোর্শেদের কথা হয়। ব্যবসায়ী আজম খানের উপস্থিতিতেও শারুন, সাকিব, পারভেজ, জাভেদ গংয়ের বৈঠক হয়। বাসায় মোর্শেদকে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়।
ইশরাত জাহানকে প্রশ্ন করা হয় – ‘শারুন কীভাবে কী কী চাপ দিয়েছে?’ এসময় তিনি বলেন, শারুন চৌধুরী ফোন করে চট্টগ্রামের রেডিসন হোটেলে দেখা করতে বলে। শারুন সরাসরি বিনিয়োগ না করেও কেন সাকিব-পারভেজের হয়ে হস্তক্ষেপ করছেন, চাপ প্রয়োগ করছেন, তা জানতে চেয়েছিল আমার স্বামী মোর্শেদ। মোর্শেদ জানতে চেয়েছিল, ‘আপনার সাথে তো কোন লেনদেন নেই। আপনি কেন মাঝখানে কথা বলছেন?’ পাল্টা উত্তরে শারুন চৌধুরী বলেন, ‘লেনদেন আছে কি নেই, তা নিয়েও এখন কথা হবে। আগে আসেন। মিট করেন।’
রেডিসনে যাওয়ার হুমকির রাতে ২৯ মে ২০১৯ তাদের ফ্ল্যাটে সন্ত্রাসীরা হামলা চালায়। এ উভয় ঘটনার মধ্যে যোগসূত্র থাকতে পারে।’ ‘ওই রাতে ব্যবসায়ী আজম খানের বাসায় মোর্শেদকে ডেকে নেওয়া হয়, সেখানে শারুনও উপস্থিত ছিলেন বলে জানান ইশরাত।