পার্শ্ববর্তী ভারতে শুরু হয়েছে করোনা মহামারি। সেই দেশ থেকে প্রতিদিন দুই শতাধিক পণ্যবাহী ট্রাক আসছে দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দরে। আর এতে করে ঝুঁকিপূর্ণ হচ্ছে এই বন্দর, আবার আতঙ্কে রয়েছে বন্দরবাসী। অনুসন্ধানে জানা গেছে, গত সোমবার ভারতে করোনা ভাইরাসে সংক্রামিত হয়েছে প্রায় সাড়ে তিন লাখ মানুষ। আবার সংক্রমণে মৃত্যু হয়েছে ২ হাজার ৮১২ জনের। ভারত থেকে প্রতিদিন ২০০ থেকে ২২০ টি পণ্য বাহী ট্রাক প্রবেশ করছে হিলি বন্দরে। পণ্য বাহী ট্রাকে আসা চালক হেলপাররা মিশে যাচ্ছে বন্দরে কর্মরত ৬৭০ জন শ্রমিক, কর্মচারী-কর্মকর্তারা। তাতে তারা করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভবনা বেশি এবং ঝুঁকিপূর্ণ। হিলি চারমাথার একজন পথচারী রফিকুল ইসলাম বলেন, ভারত থেকে যে হারে করোনা বাড়ছে আর মরছে, তাতে আমরা আতঙ্কে আছি। হিলি সিপি মোড়ে একজন ভ্যান চালক শহিদুল ইসলাম বলেন, ভারত থেকে এই পথে প্রতিদিন গাড়ি আসছে, এরা তো মাল নিয়ে আসছে, সাথে করে আনছে করোনা ভাইরাস। হাকিমপুর প্রেসক্লাবের সাধারন সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বুলু বলেন, গতকাল ভারতে আক্রান্তর সংখ্যা সাড়ে তিন লাখ, আবার মৃত্যুর সংখ্যা ২হাজার ৮১২ জন। এমনোবস্থায় দোশটি থেকে হিলি স্থলবন্দরে পণ্য আমদানি স্বাভাবিক থাকলে, আমাদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। হাকিমপুর পৌরসভার মেয়র জামিল হোসেন চলন্ত বলেন, হিলি দেশের একটা গুরুত্বপূর্ণ স্থলবন্দর। এই বন্দর দিয়ে করোনা মহামারীর মধ্যেও আমদানি-রপ্তানি স্বাভাবিক রয়েছে। সম্প্রতি ভারতে করোনা সংক্রমণ ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে করে আমরা চরম ঝুঁকির মধ্যে আছি। যেহেতু প্রতিদিন এখানে ভারতীয় ট্রাক ড্রাইভার ও হেলপাররা আসে। তাই হিলি বাসীর কথা চিন্তা করে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে সাময়িক আমদানি-রপ্তানি বন্ধের জন্য প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, আজকে হিলি পোর্ট কর্তৃপক্ষ, উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সাথে বসবো এবং পোর্ট বন্ধের বিষয়ে আলোচা করবো। হাকিমপুর (হিলি) স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা ডা.তৌহিদ আল হাসান জানান, যেহেতু হিলি হাসপাতাল পোর্ট কেন্দ্রিক এলাকা। এই পোর্ট দিয়ে ভারত থেকে প্রতিদিন পণ্য সহ লোক আসছেন। করোনা সংক্রমণে ঝুঁকিপূর্ণ, তাই আজ আমরা একটা মিটিং ডেকেছি। সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নিয়ে উপর মহলে অবগত করবো। তিনি আরও জানান, আমি ঢাকাতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে বিষয়টি জানিয়েছি। হাকিমপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো?হাম্মদ নুর-এ আলম জানান, পৌর মেয়র আমদানি-রপ্তানি বন্ধের জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে প্রস্তাব দিয়েছেন। এই প্রস্তাবটি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে যাবার পর সরকারী যেকোন নির্দেশনা আসলে সেটা আমাদের পক্ষে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে। এবিষয়ে হিলি স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানি কারক গ্রুপের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান হারুন উর রশিদ হারুন বলেন, ভারতের করোনার মহামারি অনেক গুন বৃদ্ধি পেয়েছে। যা বাংলাদেশের জন্যেও ঝুঁকিপূর্ণ এবং আতঙ্ক। হিলি একটা ভারতীয় সীমান্তবর্তী এলাকা ও স্থলবন্দর, তাই আমরা আরও ঝুঁকিতে আছি। আমি বিভিন্ন প্রশাসনিক দপ্তরে যোগাযোগ করছি, যাতে সাময়িক ভাবে ভারত থেকে এই বন্দরে আমদানি বন্ধ রাখে।