সুস্বাদু আমের জেলা মেহেরপুরে শুরু হয়েছে আম সংগ্রহের কাজ। জেলা কৃষি বিভাগের নির্ধারিত ১৬ মে থেকে আম সংগ্রহের দিন হলেও অপুষ্টতার কারণে আমচাষিরা নির্ধারিত সময়ের ৪/৫ দিন পর আম নামানো শুরু করেছে। কৃষি বিভাগ আশা করছেন মেহেরপুর জেলায় এবার ১৬শ কোটি টাকার আম বেচা কেনা হবে। আমচাষিদের মতে স্মরণকালে আম লিচু চাষের এমন অনুকূল পরিবেশ দেখা যায়নি। অনুকূল পরিবেশের কারণে আমের বাম্পার ফলন হয়েছে। একারণে এবার আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করছেন জেলা কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তর। করোনার লকডাউনে ২৪ মে সড়ক যোগাযোগ চালু হওয়াতে আমের ব্যাপারীদের উপস্থিতি বেড়েছে। ফলে দাম না পাওয়ার আশঙ্কা দূর হয়েছে।
মেহেরপুরের গত ৫ বছর পর এবার আমের ব্ম্পাার ফলন হয়েছে । প্রাকৃতিক দুূর্যোগ না থাকার কারণে আমের ভারে ডাল নুয়ে পড়েছে। তবে অনাবৃষ্টির কারণে এবার আম বিগত বছরগুলোর মতো মোটা হতে পারেনি। বর্তমানে ঝড়ের আশঙ্কায় আম বাজারজাতের হিড়িক পড়ে গেছে। কারণ আমচাষিদের মধ্যে ভয় ভর করেছে ‘ইয়াস’ ঝড়। জেলা কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে এবার মেহেরপুর জেলায় ২ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে ছোট বড় আমের বাগান রয়েছে। ৩৩ হাজার টন আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা আছে। অনুকূল আবহাওয়ার কারণে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশী উৎপাদনের আশা। মেহেরপুর জেলার বিখ্যাত বনেদিজাতের আম বোম্বাই, হিমসাগর এবং নেংড়ার সঙ্গে রয়েছে ফজলি, আমরুপলিসহ সুস্বাদু বিভিন্ন জাতের আমচাষ হচ্ছে। মেহেরপুর জেলার বিভিন্ন আম বাগানে ঘুরে দেখা গেছে বাগান মালিকরা আম ভাঙ্গার কাজ শুরু করে দিয়েছে। আঁটি আমের সাথে বোম্বাই আম ভাঙ্গার কাজ চলছে পুরোদমে।
সদর উপজেলার গোভিপুর গ্রামের অমচষি মুকুল বিশ^াস বলেন- ঢাকা, সিলেট, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জেলা থেকে আম ব্যবসায়ীরা আাগাম এসে বাগানে ভিড় জমায়। কিন্তু মহামারি করোনার কারণেএবার ব্যবসায়ীরা দেরিতে এসছে। দেরিতে আসলেও মেহেরপুরের আমের চাহিদা থাকায় কোন প্রভাব পড়বে না।
আম চাষি বজলুর রহমান জানান- এবছর তার চারটি বাগান কেনা আছে। ফলন ভালো হয়েছে। আম সংগ্রহের উপযোগী হয়েছে কিন্তু বাইরের ফড়িয়াদের উপস্থিতি বেড়েছে লকডাউনে বন্ধ থাকা সড়ক যোগাযোগ স্বাভাবিক হওয়াতে। ব্যাপারীদের উপস্থিতির সাথে বেড়েছে আমের ক্রেতার চাহিদা।
আম ব্যবসায়ী শাহিনুর জামান জানান- মেহেরপুরের আম সুস্বাদু হওয়ায় এখানকার আমের ব্যাপক চাহিদা। করোনাকালীন লকডাউনের মধ্যেও মেহেরপুরের আম কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে ঢাকা, চট্টগ্রাম, বরিশালসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রি হচ্ছে।
স্থানীয় বাজারে প্রতি মণ বোম্বাই আম বিক্রি হচ্ছে ১২ থেকে ১৬শ টাকা। এছাড়াও আটি আম বিক্রি হচ্ছে ৮শ থেকে ১ হাজার টাকা মন। অনলাইনেও আম বিক্রি করছেন অনেকে।
জেলা কৃষি স¤প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক স্বপন কুমার খাঁ জানান, মেহেরপুরে ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে আটি, বোম্বাই ও হিমসাগর আম সংগ্রহের কাজ। আজ ২৫ মে গোপালভোগ, আগামী ২৮ মে ল্যাংড়া ও ৫ জুন থেকে ২৫ জুলাই পর্যন্ত হাইব্রিড জাতের আম সংগ্রহের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। চলতি মৌসুমে মেহেরপুরে প্রায় ৩৩ হাজার টন আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্র ধরা হয়েছে।