বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ০৪:১৭ অপরাহ্ন
শিরোনাম ::
তীব্র গরমে কালীগঞ্জে বেঁকে গেছে রেললাইন, ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক মেলান্দহ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী হাজী দিদার পাশা জনপ্রিয়তায় এগিয়ে শ্রীপুর পৌরসভার উদ্যোগে খাবার পানি ও স্যালাইন বিতরণ অভিবাসী কর্মীদের পুনঃএকত্রীকরণে কর্মশালা রায়পুরায় উপজেলা চেয়ারম্যান পদে প্রার্থিতা ঘোষণা আলী আহমেদের কমলগঞ্জের মিরতিংগা চা বাগানে অবস্থান কর্মসূচি ও প্রতিবাদ সভা অব্যাহত পলাশবাড়ীতে প্রচন্ড গরমে ঢোল ভাঙ্গা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে তরমুজ বিতরণ জুড়ীতে টিলাবাড়ি ক্রয় করে প্রতারিত হওয়ার অভিযোগ আনারসের পাতার আঁশ থেকে সিল্ক কাপড় তৈরির শিল্পকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে-সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ডা. দীপু মনি রাউজানে পথচারীদের মাঝে যুবলীগের ফলমূল ও ছাতা বিতরণ

শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা : ৭ জনের জামিন স্থগিতাদেশ আপিলেও বহাল

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় রবিবার, ৩০ মে, ২০২১

সাতক্ষীরার কলারোয়ায় ২০০২ সালে তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেতা এবং বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলার মামলায় নিম্ন আদালতে সাজাপ্রাপ্ত জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবদুস সাত্তারসহ সাতজনকে হাইকোর্টের দেয়া জামিন স্থগিত করে চেম্বারজজ আদালতের দেয়া আদেশ বহাল রেখেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
পাশাপাশি এ বিষয়ে লিভ টু আপিল আবেদন করার জন্যে পক্ষের আইনজীবীকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। সেই সঙ্গে লিভ টু আপিলের বিষয়ে শুনানির জন্য আগামী ২০ জুন দিন ধার্য করেছেন আপিল বিভাগ। বিষয়টি নিশ্চিত করেন রাষ্ট্রপক্ষের অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম মুনীর।
রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন শুনানি নিয়ে গতকাল রোববার (৩০ মে) প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের ভার্চুয়াল বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে আজ রাষ্ট্রপক্ষের শুনানিতে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন, তার সঙ্গে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম মুনীর। আসামিপক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার এএম মাহবুব উদ্দিন খোকন।
অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম মুনীর বলেন, আপিল বিভাগ চেম্বারজজ আদালতের জামিন স্থগিতাদেশ তিন সপ্তাহের জন্য বহাল রেখেছেন। একই সঙ্গে লিভ টু আপিল শুনানির জন্য আগামী ২০ জুন দিন ধার্য করেছেন।
এর আগে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন শুনানি নিয়ে গত বৃহস্পতিবার (২৭ মে) আপিল বিভাগের বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর চেম্বার জজ আদালত এই আদেশ দেন। আদালতে ওইদিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন, তার সঙ্গে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম মুনীর। আসামিপক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার এএম মাহবুব উদ্দিন খোকন। অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘জামিন স্থগিত ও বাতিল চেয়ে করা আবেদনের বিষয়ে আজ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালতে শুনানি নিয়ে বিচারক এই আদেশ দেন।’ প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ ওই আদেশ বহাল রেখেছেন গতকাল রোববার। এর আগে গত ২৫ মে এ মামলায় সাতজনকে জামিন দেন হাইকোর্ট। ওই আদেশ স্থগিত চেয়ে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। সেই আবেদনের শুনানি নিয়ে চেম্বার আদালত হাইকোর্টের দেয়া জামিন স্থগিত করে আদেশ দেন।
হাইকোর্টে জামিন দেয়ার পর সেই আদেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় আবেদন করা হয়। আজ সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম মুনীর বলেছিলেন, ‘জামিন স্থগিত ও বাতিল চেয়ে করা আবেদনের বিষয়ে আজ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে চেম্বারজজ আদালতে শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।’ গত ২৫ মে এ মামলায় নিম্ন আদালতে সাজাপ্রাপ্ত সাতক্ষীরা জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সাত্তারসহ সাতজনকে জামিন মঞ্জুর করে আদেশ দেন হাইকোর্ট। এ মামলায় সাজাপ্রাপ্ত ১৮ আসামির জামিন চেয়ে করা আবেদন শুনানি নিয়ে হাইকোর্টের বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের দ্বৈত ভার্চুয়াল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
হাইকোর্ট থেকে জামিন পাওয়া অ্যাডভোকেট আবদুস সাত্তার ছাড়া অন্যরা হলেন- গোলাম রসুল, আইনজীবী আব্দুস সামাদ ও জহিরুল ইসলাম, রাকিব, শাহাবুদ্দিন ও মনিরুল ইসলাম। বাকিদের (১১ জন) জামিনের বিষয়ে রোববার (৩০ মে) আদেশ দেয়া হবে বলে দিন ঠিক করেন আদালত। এর আগে গত সোমবার (২৪ মে) এই জামিন আবেদনের ওপর শুনানি শেষে আদেশের জন্য মঙ্গলবার (২৫ মে) দিন ঠিক করেছিলেন আদালত। সেদিন জামিন আবেদনকারীদের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন ব্যারিস্টার এএম মাহবুব উদ্দিন খোকন, অ্যাডভোকেট গাজী মহসীন। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম মুনীর, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ইয়াহিয়া দুলাল ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মুহাম্মদ শাহীন মৃধা।
২০০২ সালে কলারোয়ার এক মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী ধর্ষণের শিকার হন। ওই বছরের ৩০ আগস্ট শেখ হাসিনা সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ওই মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীকে দেখে মাগুরায় যাচ্ছিলেন। কলারোয়া উপজেলা বিএনপি অফিসের সামনে তার গাড়িবহর পৌঁছালে একদল সন্ত্রাসী লাঠিসোটা, ধারালো অস্ত্র, বোমা ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। তারা গুলিবর্ষণ করে এবং বোমা বিস্ফোরণ ঘটায়। তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা প্রাণে রক্ষা পেলেও তার গাড়িবহরে থাকা সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক ইঞ্জিনিয়ার শেখ মুজিবর রহমান, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেত্রী ফাতেমা জাহান সাথী, জোবায়দুল হক রাসেল, শেখ হাসিনার ক্যামেরাম্যান শহীদুল হক জীবনসহ অনেকেই আহত হন। বেশ কয়েকজন সাংবাদিকও এ ঘটনায় আহত হন। ওই দিনই কলারোয়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোসলেম উদ্দিন বাদী হয়ে মামলা করেন। মামলা তদন্ত শেষে সাতক্ষীরা-১ (তালা-কলারোয়া) আসনের তৎকালীন সংসদ সদস্য বিএনপি নেতা হাবিবুল ইসলামসহ ৫০ জনের বিরুদ্ধে ২০১৫ সালে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। আসামিদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগে বলা হয়, শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে এই হামলা হয়েছে। এরপর মামলার আসামি রাকিবের আবেদনে ২০১৭ সালের ২৩ আগস্ট হাইকোর্ট মামলার কার্যক্রমের ওপর স্থগিতাদেশ দেন। একই সঙ্গে রাকিবের ক্ষেত্রে মামলার কার্যক্রম কেন বাতিল করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়। পরে রাকিবকে জামিন দেয়া হয়। রাকিবের আবেদন ছিল- যখন ঘটনার কথা বলা হয় তখন অর্থাৎ ২০০২ সালে তার বয়স ছিল ১০ বছর। সুতরাং তার বিচার হতে হলে শিশু আইনে হবে। বড়দের সঙ্গে দায়রা জজ আদালতে করা যাবে না। এরপর গত বছরের ৮ অক্টোবর ওই রুল খারিজ করে রায় দেন আদালত। এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন রাকিব। এ আবেদনে আপিল বিভাগ তিন মাসের মধ্যে নিম্ন আদালতে বিচার সম্পন্ন করার নির্দেশ দেন। এরপর বিচার শেষে সাতক্ষীরার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত গত ৪ ফেব্রুয়ারি এ মামলায় সব আসামিকে সাজা দিয়ে রায় দেন। রায়ে হাবিবুল ইসলামকে কয়েকটি ধারায় ১০ বছরের কারাদ- দেয়া হয়। এছাড়াও সাতক্ষীরা জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সাত্তারসহ অন্য আসামিদের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেয়া হয়। পরে অ্যাডভোকেট আবদুস সাত্তারসহ ১৮ আসামি জামিনের জন্য হাইকোর্টে আবেদন করেন।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com