পুরান ঢাকার লালবাগ শাহী মসজিদ। ঢাকার পুরনো মসজিদগুলোর মধ্যে লালবাগ শাহী মসজিদ সবচেয়ে বড়। এটি ফররুখ সিয়ার মসজিদ নামেও পরিচিত। মুঘল আমলের অন্যতম এক নিদর্শন। পুরান ঢাকার লালবাগ কেল্লার দক্ষিণ-পূর্ব কোণে অবস্থিত এটি। সুবাদার আজিম-উস-শানের প্রতিনিধি হিসেবে তৎকালীন ঢাকার উপ-শাসক সম্রাট আওরঙ্গজেবের প্রপৌত্র ফররুখ সিয়া ১৭০৩ সালে মসজিদটি নির্মাণ করেন। মসজিদের ডিজিটাল বোর্ডে নির্মাণ সাল প্রদর্শন করা রয়েছে।
খাজা আব্দুল গণির উদ্যোগে ১৮৭০ সালে প্রথম লালবাগ শাহী মসজিদের সংস্কার করা হয়। পরে আরও কয়েকদফায় সংস্কারকাজ হয়। যার ফলে কেল্লার ভেতরের দিকের প্রবেশপথ ছাড়া আর কিছু দেখে অনুমান করার উপায় নেই যে এটি এতো পুরনো মসজিদ। মসজিদের প্রায় প্রতিটি অংশই সংস্কার করা হয়েছে। এতোবার সংস্কারের কারণেই হয়তো প্রতœতত্ত্ব অধিদফতর মসজিদটিকে পুরাকীর্তি হিসেবে সংরক্ষণ করেনি। তাছাড়া বাংলাপিডিয়া বা ঢাকার ইতিহাসভিত্তিক বইগুলোতেও এ মসজিদ সম্পর্কে উল্লেখযোগ্য তেমন তথ্য নেই। আশির দশকে মসজিদটিকে সম্পূর্ণ মেরামত করা হয়। তখন মসজিদের পূর্বদিকে সমতল চুন-সুরকির ঢালাই ছাদসহ বড় সম্প্রসারণের কাজ করা হয়।
বেশ উঁচু প্লাটফর্মের ওপরে নির্মিত এটি। প্রবেশপথের পাশেই কবরস্থান। ভেতরে ঢুকলেই চোখে পড়বে বিশাল ওজুখানা। ভেতরের দেয়াল, মেঝে থেকে শুরু করে সব জায়গায় আধুনিকতার ছোঁয়া। পাশেই একটি মাদ্রাসা। তবে মাদ্রাসাটি আলাদাভাবে পরিচালিত হয়। মসজিদটি পরিচালিত হচ্ছে একটি কমিটির মাধ্যমে। যাবতীয় ব্যয়ভার কমিটির মাধ্যমেই নির্বাহ করা হয়।
দানবাক্সের টাকা থেকেও আনুষাঙ্গিক ব্যয় বহন করা হয়। ইমাম, মুয়াজ্জিন, খাদেমসহ মোট ২২ জন বেতনভুক্ত কর্মচারী রয়েছে মসজিদটিতে। ধর্মীয় বিভিন্ন অনুষ্ঠানে মসজিদটি ভরপুর হয়ে যায়। একসঙ্গে প্রায় ৮ হাজার মানুষ এখানে নামাজ পড়তে পারেন। লালবাগ কেল্লা ঘুরতে আসা হাজারো পর্যটক কেল্লার পরপরই দেখতে আসেন মসজিদটি।