মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল চায়ের রাজধানী খ্যাত ও দেশের পর্যটন এলাকা হিসেবে পরিচিত। বছরজুড়ে শ্রীমঙ্গলে দেশি-বিদেশী পর্যটকদের পদচারণে মুখরিত হয় শ্রীমঙ্গল উপজেলা। শ্রীঙ্গলের পর্যটন এলাকা যেমন দেশি-বিদেশী পর্যটকদের আকর্ষণ এর চেয়ে এক মাত্র আকর্ষণ শ্রীমঙ্গলের ১০ লেয়ারের চা। এই বিশ্বখ্যাত ১০ লেয়ারের চায়ের আবিষ্কারক শ্রীমঙ্গলের কাকিয়াছড়া চা বাগানের চা ব্যবসায়ি রমেশ রাম গৌঢ়। রমেশেরে আবিষ্কারের এই ১০ লেয়ারের চায়ের একটি কাঁচের গ্লাসে এক এক করে ১০ টি স্তর থাকে। ১০ লেয়ারে এই চায়ের স্বাদ একটু অন্য রকম। মানুষ যখন কর্মপরিসরে ক্লান্তিবোধ করে তখন শরীরের সতেজতা ফিরিয়ে আনতে মন্ত্রের মত কাজ করে এক কাপ গরম চা।
আর সেটা যদি হয় বিশ্বের প্রথম কালার চায়ের আবিস্কারক রমেশ রাম গৌঢ় এর ১০ লেয়ারের রঙ্গিন চা তাহলে তো আর কথাই নেই। তবে রমেশের চা খেতে হলে আপনাকে আসতে হবে দেশের অন্যতম পর্যটন খ্যাত এলাকা মৌলভীবাজার জেলার চায়ের রাজধানী শ্রীমঙ্গলে। বিভিন্ন কালার চায়ের আবিস্কারক রমেশ রাম গৌঢ় প্রতিনিয়ত ব্যতিক্রমী কিছু করার ভাবনায় বিভোর ছিলেন। আর তার সাধনা, ভাবনা বিফল হয়নি। আর সেই সাধনার ফলে তৈরী করেন ২০০২ সালের ২ জানুয়ারি প্রথম আবিস্কার করলেন এক পাত্রে দুই কালার চা। দেশি-বিদেশী প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় প্রচারের মাধ্যমে পর্যটকরা ছুটে আসেন শ্রীমঙ্গলে তার দুই কালার চা এর স্বাদ নিতে। তাতে উৎসাহিত হয়ে রমেশ দুই কালার থেকে আবিস্কার করেন পাঁচ লেয়ার (কালার) চা পরবর্তীতে তিনি ৭ টি রং এ ১০টি লেয়ারের চা আবিস্কার করে বিশ্বব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি করেন।
পরবর্তিতে তিনি স্থান পরিবর্তন করে দোকানের নাম দেন নীলকন্ঠ চা কেবিন। দিন দিন রমেশের কালার চায়ের জনপ্রিয়তা বেড়েই চলছে। এখন দেশ বিদেশের পর্যটক ছাড়াও প্রতিদিন শ্রীমঙ্গলের অনেক চা পিপাসুরা রমেশের চা কবিনে ভীড় জমান প্রতিনিয়ত। তবে সবাই যে রমেশের কালার চায়ের টানে সেখানে যায় শুধু তা নয় রমেশের চায়ের দোকানে ১০ লেয়ার ছাড়াও আরও ৮/১০ রকমের চা পাওয়া যায়। রমেশের এই কৃতিত্ব ছড়িয়ে পরেছে দেশে বিদেশে। রমেশ এর সাথে কথা বলে জানা যায়, তিনি বলেন, আমার আবিষ্কারের চায়ের প্রথম সফলতা দুই কালারের চা, আস্তে আস্তে আমি আবিষ্কার করি ৫,৭, এবং সর্বশেষ ১০ কালারের চা। রমেশ জানায় তার এই চায়ের কোন ক্ষকিকারক কোন মেডিসিন বা ক্যামিক্যাল নাই, আমার এই আবিষ্কাকৃত চা গবেষণা করেছে বাংলাদেশ চা গবেষণার কেন্দ্র।এর আগে ৭ লেয়ারের চায়ের স্বাদ নিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, এছাড়াও বাংলাদেশের বিভিন্ন মন্ত্রী পরিষদের সদস্যরা, বিচার বিভাগের জর্জ, সচিব, ডিসি, এডিসি, বিজিবি মেজর কর্ণেল, র্যাব কমিশনার, পুলিশ প্রধান, সেনাবাহিনীর মেজর কর্ণেল, নাট্য অভিনেতা, চলচিত্র অভিনেতারা এই চায়ের স্বাদ নিতে এসেছেন শ্রীমঙ্গলে। বর্তমানে রমেশের দুটি চায়ের কেবিন রয়েছে ১ টি শ্রীমঙ্গল বিজিবি ক্যাম্পে, আরেকটি শ্রীমঙ্গল শহর থেকে মাত্র ১ কিলোমিটার দূরে কাটাবটের তল নাম স্থানে নীলকন্ঠ চা কেবিন।