বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ একটি জাতীয় পত্রিকাকে বলেন,খাদ্যের যোগান না দিয়ে সরকার যদি বলে ঘরে থাকো তাহলে তো মানুষ ঘরে থাকবে না। লকডাউনও সফল হবে না। ঘরে ঘরে খাদ্যের যোগান দেয়া সরকারের পক্ষে কঠিন কাজ নয়। কারণ বাংলাদেশে যে পরিমাণ দুর্নীতি হয়, যে পরিমাণ টাকা লোপাট হয় সে হিসেবে লকডাউনের সময় খাদ্য যোগান দিতে সে পরিমাণ অর্থ ব্যয় হবে না। মানবজমিন-এর সঙ্গে আলাপকালে অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ আরও বলেন, সরকার শুধু বড় ব্যবসায়ীদের বিষয় বিবেচনা করে। নিম্নমধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্তদের কথা বিবেচনা করে না। লকডাউনে সব বন্ধ কিন্তু ব্যবসায়ীদের স্বার্থ রক্ষায় পোশাক কারখানা খোলা রাখা হয়েছে। যানবাহন ছাড়া এই কর্মীরা কীভাবে যাওয়া-আসা করবে।
সকল কারখানা কি তাদের কর্মীদের যাতায়াতের জন্য পরিবহনের ব্যবস্থা করবে? প্রতিদিন তো এই শ্রমিকরা শ’ শ’ টাকা খরচ করে কারখানায় যেতে পারবে না। জনস্বার্থের প্রতি বিবেচনাহীন পদক্ষেপ নেয়ায় জনগণের করোনায় যে ভোগান্তি তার চেয়ে বেশি ভোগান্তি হয় সরকারের এ ধরনের সিদ্ধান্তের ফলে। একদিকে করোনা কমছে না অন্যদিকে লকডাউনের নামে মানুষের ভোগান্তি। এ পর্যন্ত সরকারের খণ্ডিত কোনো লকডাউনই সফল হয়নি। গত বছর মার্চে করোনা শুরু হওয়ার পর মানুষের খাদ্য নিশ্চিত করা, নতুন জীবিকা সৃষ্টি- এ সব বিষয়ে আমরা সরকারের কাছে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব রেখেছিলাম। কিন্তু সরকার এসব আমলে নেয়নি। করোনা তো একদিন-দুইদিনের বিষয় না। এটা কতদিন থাকবে তা কেউ বলতে পারে না। সরকারের দরকার ছিল করোনা নিয়ে লিখিত পরিকল্পনা গ্রহণ করা। যখন করোনা বেড়ে যায় তখন লকডাইন দেয়। আবার কমে গেলে মনে হয় দেশে আর করোনা নাই। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ লকডাউনের সময় জনগণকে কীভাবে সাহায্য-সহযোগিতা করেছে সেই আলোকে আমাদের দেশে লকডাউন পরিচালনা করা গেলে তবেই লকডাউন সফল হবে।