দেশ স্বাধীনের ৫০ বছরেও পাইনি কোন সরকারি সুযোগ-সুবিধা বীরাঙ্গনা রেজিয়া বেওয়া। ১৯৭১ সালে ঘটে যাওয়া ৯ মাসের যুদ্ধ, যাকে আমরা মুক্তিযুদ্ধ বলে থাকি। যে যুদ্ধের মাধ্যমে আমরা স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছি।এই যুদ্ধে অনেকের অনেক অবদান রয়েছে, লক্ষ লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে ও নারীদের নির্যাতনের এর বিনিময়ে আমরা পেয়েছি এই স্বাধীনতা। মুক্তিযুদ্ধের পর সম্মান হারা নারীদের কে বীরাঙ্গনা নামে অবিহিত করা হয়। এখন কার অনেক ছেলে-মেয়ে জানে না বীরাঙ্গনা মানে কি? যাদের ভূমিকা দেশ স্বাধীন হওয়ার ক্ষেত্রে অনেক বেশি ছিলো। বীরাঙ্গনা বলতে আমরা ধর্ষিতা নারীকে বুঝায় কিন্তু বীরাঙ্গনা অর্থ একটি দেশের জন্য যে নিজের সম্মান ত্যাগ করেছে, সেই নারীকে বীরাঙ্গনা বোঝায়, যিনি বীরের মতো ত্যাগ করেছেন। সীমাহীন দুঃখ, কষ্ট, যন্ত্রণা এবং মানবেতর জীবন যাপনের ৫০ বছর। সমাজে লজ্জা অপমান মাথায় নিয়ে দীর্ঘ দিন পাড়ি দিয়েছেন ঘোড়াঘাট পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের খন্দকারটোলা গ্রামের রেজিয়া বেওয়া। মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে পাকিস্থানি হায়নাদের হাতে সর্বস্ব রেজিয়া বেওয়া। দীর্ঘ নয় মাস পর স্বাধীনতা ছিনিয়ে নেয় বীর বাঙ্গালীরা। সবার মধ্যে শুরু হয় বিজয়ের উল্লাস, তবে পাকিস্থানি সেনাদের হাতে সর্বহারা এমন কিছু নারী ছিলেন তারা সে উল্লসে শরিক হতে পারেনি। তাদের বীরাঙ্গনা খেতাব দেওয়া হয়। কিছু দিন লোক মুখে আলোচনা হবার পর আর কেউ খোজ রাখেনা এই বীরাঙ্গনার। আর তাইতো বেচে থাকার সংগ্র্রামে জীবন চলে ভিক্ষা করে। এক মেয়েকে নিয়ে এখন পর্যন্ত ঝুলি কাধে নিয়ে সারা দিন ঘুরে বেরায়। রেজিয়া বেওয়া এর মেয়ে মালেকা বেগম বলেন, বয়স বাড়ায় স্মৃতিশক্তির অনেকটা হারিয়েছেন। আপবাদ বঞ্চনা নিয়ে এভাবে কেটে গেছে ৫০টি বছর। এখন বয়স হয়েছে, শরীরে নানা রোগ বাসা বেধেছে। প্রায় অসুস্থ হয়ে পরে এসময় আরোও বলেন, আজ স্বাধীনতার এতো বছর হয়ে গেছে এখনো সরকারি কোনো সুযোগ-সুবিধা পান নাই আমার মা। ঘোড়াঘাট উপজেলা প্রাপ্তন ডেপুটি কমান্ডার মো: মজিবর রহমান (বীরমুক্তি যোদ্ধা) বলেন, তাদের দুরবস্থা দেখে ঘোড়াঘাট উপজেলা প্রশাসন কে অবগত করে আমরা কাজ পাত্র উপজেলার মাধ্যমে অনেক দিন আগে মন্ত্রানালয়ে পাঠিয়েছি এবং তাদের স্বীকৃতিসহ সরকারি সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করার জন্য কাজ করে যাচ্ছি।