শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:৫১ অপরাহ্ন

রৌমারীর যোগাযোগ ব্যবস্থা বেহাল

শওকত আলী মন্ডল রৌমারী (কুড়িগ্রাম) :
  • আপডেট সময় সোমবার, ২ আগস্ট, ২০২১

অনিয়ম ও দূনির্তীর কারনে কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার যোগাযোগ ব্যবস্থা বেহালদশায় পরিনিত হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার কাঁচা-পাকা প্রায় ৭৬টি সড়কের সংস্কার জন্য প্রতি বছর বরাদ্ধকৃত অর্থ নয়ছয় কাজ করে আত্মসাৎ হয়ে যায়। ফলে যোগাযোগে চরম দূর্ভোগে পড়েছে এলকাবাসী। দীর্ঘ দিন ধরে রাস্তাগুলো সংস্কার না করায় ভাঙ্গাচুড়া রাস্তাগুলো দিয়ে যানবাহন চলাচল ব্যহত হচ্ছে। ফলে উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের জনসাধারন যোগাযোগে চরম দূর্ভোগ পোহাচ্ছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিনই ৬টি ইউনিয়নের মানুষ, চিকিৎসা, সরকারী বিভিন্ন সেবা, হাট-বাজারের কাজে আসছেন উপজেলা সদরে। সোমবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দাঁতভাঙ্গা, শৌলমারী, বন্দবেড়, রৌমারী সদর, যাদুরচর ও চর শৌলমারী ইউনিয়নের গ্রামীণ গুরত্বপূর্ণ কাঁচা-পাকা ছোট বড় প্রায় ৭৬টি সড়ক গত ৩ বছর আগের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সবচেয়ে জনগুরুত্বপূর্ণ রাস্তা গুলো হচ্ছে, রৌমারী সদর ইউনিয়নের নটানপাড়া জামে মসজিদ থেকে রতনপুর আব্দুল রশিদের বাড়ি পর্যন্ত ৩ কি.মি.পাকারাস্তা। রৌমারী সদর বিওপি থেকে ইজলামারী নৌকা ঘাট পর্যন্ত চার কিলোমিটার পাকারাস্তা। কর্তিমারী বাজার হইতে চুলিয়ারচর পর্যন্ত ৬ কিলোমিটার পাকারাস্তা। শুতিরপার ভুন্দুর বাড়ি থেকে মোল্লারচর বিওপি পর্যন্ত দুই কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা। বকবান্দা হইতে চুলিয়ারচর পর্যন্ত তিন কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা। কান্দাপাড়া গ্রামের বাঁশের ব্রীজ থেকে মনোখার বাড়ি পর্যন্ত দুই কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা। ঠনঠনিপাড়া ডিসি রাস্তা থেকে কড়াইকান্দি পর্যন্ত এক কিলোমিটার কাঁচারাস্তা। বন্দবেড় ইউনিয়নের থানা মোড় ডিসি রাস্তা থেকে পশ্চিমে পাখিউড়া ব্রীজ পর্যন্ত পাঁচ কিলোমিটার পাকারাস্তা। রৌমারী প্রেসক্লাব থেকে কুটিরচর জামে মসজিদ পর্যন্ত পাকা রাস্তা তিন কিলোমিটার, বন্দবেড় মদাব্যাপারির নৌকাঘাট থেকে দক্ষিণে বাঘমারা পর্যন্ত এক কিলোমিটার পাকা রাস্তা। কুটিরচর স্কুল থেকে বলদমারা পর্যন্ত চার কিলোমিটার কাঁচারাস্তা, কুটিরচর খেয়া ঘাট হইতে ফলুয়ারচর পর্যন্ত দুই কিলোমিটার কাঁচারাস্তা। শৌলমারী ইউনিয়নের শৌলমারী প্রাইমারী স্কুল হইতে বেহুলারচর পর্যন্ত ৪ কিলো মিটার কাঁচা রাস্তা, কলমেরচর হইতে মাঠের ভিটা পর্যন্ত ৪ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা, চর বোয়ালমারী হইতে বড়াইকান্দি বাজার পর্যন্ত ৬ কিলো মিটার কাঁচা রাস্তা। উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়নে কাঁচা পাকা মিলে মোট ২৮ কি.মি. রয়েছে। এর মধ্যে চলাচলের অযোগ্য রাস্তাগুলো হচ্ছে- ইউনিয়ন পরিষদ মোড় থেকে যাদুরচর পূর্বপাড়া আমির হামজার বাড়ি পর্যন্ত ১কি.মি.কর্ত্তিমারী বাজার পুর্বপাশ থেকে কাশিয়াবাড়ি কুড়ার মাথা পর্যন্ত ২কি.মি.যাদুরচর আবুল হাশেমের বাড়ি থেকে পুর্বপাড়া কাদেররের বাড়ি পর্যন্ত ১কি.মি.যাদুরচর জামে মসজিদ থেকে উত্তরে ওয়াহেদের বাড়ি পর্যন্ত ১কি.মি.গোলাবাড়ি ডিসি রাস্তা থেকে কাশিয়াবাড়ি দক্ষিনে কালু শেখের বাড়ি পর্যন্ত ১কি.মি.যাদুরচর হাইস্কুল থেকে উত্তরে গার্লস স্কুল পর্যন্ত ১কি.মি.লালকুড়া পাকা রাস্তা থেকে জিঞ্জিরাম নদী পর্যন্ত ১কি.মি.রাস্তা। একই অবস্থা অন্যান্য ইউনিয়নের। এসব রাস্তার সংস্কারের সময় নিম্ন মানের কাজ হওয়ায় মাঝখানে, দুই পাশের পার্কিং এর ইট, খোয়া ও মাটিসহ রাস্তা ধসে পড়ে রাস্তার প্রশস্থতা কমে গেছে। কোথাও রাস্তার মাঝখানের পাথরসহ খোয়া উঠে বড় বড় খানা খন্দের সৃষ্টি হয়েছে। কোনো কোনো রাস্তায় আবার ব্রীজ কালভার্ডের সংযোগ সড়ক ভেঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে। ওইসব এলাকার বাসিন্দারা জানান, রাস্তার অবস্থা বেহালদশা হওয়ায় জনসাধারণ ও যানবাহন চলাচলের মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে। জীবনের ওপর ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন এলাকার মানুষ। শৌলমারী ইউনিয়নের শুতিরপার গ্রামের আবু আসাদ, বন্দবেড় ইউনিয়নের সামাদ খাঁন, যাদুরচর ইউনিয়নের আনিছুর রহমান, সদও ইউনিয়নের আব্দুল আজিজ অভিযোগ করে বলেন, প্রতি বছর সরকারি বরাদ্দ এলজিএসপি, এলজিইডিসহ বিভিন্ন প্রকল্প দেওয়া হলেও নাম মাত্র কাজ করে অর্থ আত্মসাত করা হয়। অনিয়ম দূর্নীতি নিয়ে বিভিন্ন দপ্তরে একাধিক বার অভিযোগ দিলেও কার্যকরি কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। অনেক ক্ষেত্রে কর্মসৃজন কর্মসূচি (মঙ্গা) এর শ্রমিক দিয়ে আইওয়াস করে কিছু কাজ করা হয়েছিল। এ বিষয়ে রৌমারী উপজেলা বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আজিজুর রহমান বলেন, টিআর ও খাবিখা প্রকল্প দিয়ে রাস্তার কাজ করা হয়েছে। এবং কিছু কাজ চলমান রয়েছে। বরাদ্দ কম থাকায় সব রাস্তার কাজ এক সাথে করা সম্ভব হয়নি এবং এখানকার মাটি গুলি বেলে-দোআঁশ হওয়ায় একটি বৃষ্টির পানিতে মাটি সরে গিয়ে রাস্তা ভেঙ্গে যায়। আরো কাজের জন্য প্রকল্প প্রনয়ন করা হয়েছে। বরাদ্দ পেলে বাকি রাস্তার কাজ গুলোর কাজ করা হবে। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশল (ভারপ্রাপ্ত) কুড়িগ্রাম এলজিইডির সিনিয়র প্রকৌশলী মো. মামুন খাঁন বলেন, উপজেলার পাকা রাস্তা রয়েছে ৬৫ কিলোমিটার ও কাঁচা রাস্তা রয়েছে ৪৮৯ কিলোমিটার। আমি ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব পেয়েছি। বর্তমানে ৪টি প্যাকেজে ৭টি রাস্তার কাজ চলমান রয়েছে। কাজ গুলো শেষ হলে জনগণ কিছুটা হলেও সুবিধা পাবে।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com