শরীয়তপুরের নড়িয়ার কীর্তিনাশা নদীর উপর ভাষা সৈনিক ডাঃ গোলাম মাওলা উড়াল সেতুর এপ্রোচ ডিজাইনের পরিবর্তন করার দাবী করেছে এলাকাবাসী। বর্তমান ডিজাইনে সেতু নির্মাণ করা হলে এলাকাবাসীর সুযোগ-সুবিধা বঞ্চিত হবে ও সেতু পদ্মানদীর ভাঙ্গন ঝুঁকিতে থাকবে বলেও আশংকা তাদের। পাশাপাশি সরকারের অধিক রাজস্ব ব্যয় হবে। এলজিইডি বলছে ঢাকা থেকে বিশেষজ্ঞ কনসালটেন্ট এসে সরেজমিন সার্ভে করে ডিজাইন করে দিয়েছে। তাদের দেয়া ডিজাইন অনুযায়ী প্রকল্প দাখিল করা হয়েছে। নড়িয়া এলজিইডি ও ¯’ানীয় বাসিন্দারা এবং ব্যবসায়ীরা জানায়, শরীয়তপুরের নড়িয়া বাজারের পশ্চিম পাশের্^ পদ্মানদীর অতিব নিকটবর্তী কীর্তিনাশা নদীর উপর ভাষা সৈনিক ডাঃ গোলাম মাওলা সেতুটি বিনষ্ট হওয়ার কারনে ৪/৫ বছর যাবৎ যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এ সেতুর উপর দিয়ে যানবাহন চলাচল করতে না পারায় নড়িয়া বাজারের ব্যবসায়ী সহ এলাকার কয়েকটি ইউনিয়নের জনসাধারনের চলাচলে বিরাট ক্ষতি হ”েছ। গত ২/৩ বছর পূর্বে এলজিইডি এ সেতুটির পাশর্^ দিয়ে নুতন করে সেতু নির্মাণের কাজ হাতে নেয়। সেখানে জনসাধারনের সুবিধা মতে পূর্বের সেতুর ডিজাইন অনুযায়ী প্রায় ১৫ কোটি টাকা ব্যয় ধরে ১৪৫ মিটার একটি সেতু নির্মাণের জন্য দরপত্র আহবান করে। ডিজাইন অনুযায়ী সেতুর পূর্ব পাশের এপ্রোচ ছিল ব্রীজ থেকে সরাসরি বাজারের মেইন সড়ক। দরপত্রের সর্বনি¤œ দরদাতা হিসেবে নাভানা গ্রুপ ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠাকে কার্যাদেশ দেয়া হয়। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কার্যাদেশ পেয়ে সেতুর পশ্চিম পাশের পিলার ও নদীর মাঝ খানের একটি পিলার নির্মাণ কাজ শেষ করে। সেতুর কাজ চলমান অব¯’ায় গত দুবছর পূর্বে পদ্মার ভয়াবহ ভাঙ্গনের ফলে নড়িয়া পৌর এলাকা সহ মোক্তারেরচর, কেদারপুর ও নড়িয়া বাজারের বেশ কিছু এলাকা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। সেতুটির মাত্র ৫০০ গজ দুরে চলে আসে পদ্মানদী। সেতুটি ভয়াবহ ভাঙ্গনের ঝুকিতে পড়ে যায়। এ অব¯’ায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সেতুর কাজ বন্ধ করে দেয়। এরপর তারা আর কাজ করেনি। দীর্ঘদিন পরে থাকার পর এলজিইডি পুনরায় নুতন ভাবে ডিজাইন করে ৩১ কোটি ২১ লাখ টাকায় ব্যয় ধরে ৩২৭ মিটার একটি সেতু নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করে। এ ডিজাইনে মূল সেতুর সাথে ফ্লাইওভার করে (ভায়া ডাক) কীর্তিনাশা নদীর পূর্ব পাড়ে এসে বামদিকে মোড় দিয়ে কীর্র্তিনাশা নদীর পাড় ঘেষে সোজা উত্তর দিকে গোডাউন ঘাট হয়ে পোস্ট অফিসের পাশদিয়ে বাজারে ঢুকবে এপ্রোচ। এতে করে ¯’ানীয় অনেক লোকের বাসাবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্র¯’ হবে। পাশাপাশি সেতুটি পদ্মানদীর ভাঙ্গনের ঝুকিতে পড়বে। কেননা গোডাউন ঘাট থেকে পদ্মা নদী মাত্র ৪০/৫০ গজ দুরে। যেখানে পানির গভীরতা হবে কমপক্ষে ১৫০ ফিট। এ ছাড়া ভায়া ডা এর প্রতিটি পিলার কীর্তিনাশা নদী থেকে মাত্র ১০/১৫ ফিট দুরে পড়বে।বর্তমান ডিজাইন অনুযায়ী এ সেতুটি নির্মিত হলে সরকারের অনেক বেশী টাকা ব্যয় বাড়বে। সেতুটি ভাঙ্গনের ঝুকি থাকবে। পাশাপাশি এলাকার ব্যবসায়ী সহ জনসাধারন বিরাট ক্ষতির মুখে পড়বে। তাই এলাকার জনসাধারন সেতুর ডিজাইন পরিবর্তন করে পুর্বের ডিজাইনে সেতু নির্মাণের দাবী জানিয়েছেন। এ ব্যাপারে নড়িয়া বাজারের ব্যবসায়ী আবদুর রহমান সেক, বাবুল চৌকিদার, জিন্নাত আলী পেদা বলেন, নুতন ডিজাইনে সেতু নির্মাণ করা হলে সেতুটি ভাঙ্গন ঝুঁকিতে পড়বে। এলাকাবাসী সহ আমাদের ঘরবাড়ি ও ব্যবসায়ীদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বিনষ্ট হবে। পাশাপাশি সরকারের বিরাট অংকের ব্যয় বাড়বে। আমরা সেতুর ডিজাইন পরিবর্তনের দাবী জানাই। এব্যাপারে নড়িয়া বৈশাখী পাড়া এলাকার বাসিন্দা আবদুল আলী সিকদার,সুলতান চৌকিদার, সবুজ সেক বলেন, পূর্বের ডিজাইনে সেতু নির্মাণ করা হলে আমাদের অনেক বেশী সুবিধা হবে। সেতুর ভাঙ্গন ঝুকি কম থাকবে। এলাকার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের তেমন ক্ষতি হবেনা। সরকারের টাকা বাঁচবে। আর নুতন ডিজাইনে সেতু নির্মাণ করা হলে আমাদের অনেক ক্ষতি হবে। এব্যাপারে নড়িয়া উপজেলা এলজিইডি’র প্রকৌশলী মোঃ শাহাব উদ্দিন খান বলেন, এ সেতুটি অনেকদিন যাবৎ ক্ষতিগ্র¯’ হয়েছে। এরপূর্বে একবার সেতুর দরপত্র আহবান করে কার্যাদেশ দেয়া হয়েছিল। ঠিকাদার কিছু কাজ করে আর করেনি। কোন যোগাযোগও করেনি। এরপর নুতন ভাবে ঢাকা থেকে বিশেষজ্ঞ কনসালটেন্ট এসে সরেজমিন সার্ভে করে ডিজাইন তৈরী করে মূল সেতুর সাথে (ভায়া ডাক) উড়াল সেতু যোগ করে দেয়া হয়েছে। এব্যাপারে শরীয়তপুর এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ শাহজাহান ফরাজী বলেন, শরীয়তপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য ও পানি সম্পদ উপমন্ত্রী একেএম এনামূল হক শামীম এবং ¯’ানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সাথে আলোচনা করে ডিজাইন করা হয়েছে। মূল ব্রীজ থেকে সোজা এপ্রোচ দিলে দু’পাশের দোকানপাট বেশী ক্ষতি হবে। তাই ব্রীজটি দৃষ্টিনন্দন করার জন্য এভাবেই ডিজাইন করা হয়েছে।