সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৩৯ পূর্বাহ্ন

বরিশালে একটি ঘরের আশায় ভিক্ষুক রাজিয়া

বরিশাল ব্যুরো :
  • আপডেট সময় সোমবার, ৯ আগস্ট, ২০২১

ভিক্ষুক রাজিয়া গণমাধ্যম কর্মীদের জানান, তার সারাটা জীবন ভিক্ষায় ভিক্ষায় কেটে গেল। বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলার ১৩নং পাদ্রীশিপুর ইউনিয়নের বড় বগুনাতপুর গ্রামের রাজিয়া বেগম(৬৫) এর পরিবার মানবেতর জীবনযাপন করছে। অন্যের বাড়িতে বাড়িতে ভিক্ষায় চলে তার সংসার। খালের পারে ভাঙ্গা ঘরে চলছে তাদের বসবাস। জানা যায়, পাদ্রীশিবপুর ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের মৃত মোসলেম এর স্ত্রী রাজিয়া বেগম। তার পরিবারের সদস্য সংখ্যা ৪ জন। রাজিয়া বেগম মানুষের বাড়িতে বাড়িতে ভিক্ষা করে জীবিকা নির্বাহ করছে। তার কোন ছেলে না থাকায় মেয়ে নাতনী নিয়ে অসহায় হয়ে পড়েছেন। মেয়ের স্বামী না থাকায় মেয়ে ও নাতনীদের খরচ চলে তার ভিক্ষার চাউল দিয়ে। একধিকে তার স্বামী ২০ বছর আগে মারা যায়, অন্যদিকে মেয়ের জামাই খোজখবর না নেওয়ায় এখন তিনি দিশেহারা। বয়স হয়ে যাওয়ায় এখন তিনিও আগের মত ভিক্ষা করতে পারছেন না। থাকেন খাল পারে একটি ছোট ঘর তৈরি করে। এ বিষয়ে রাজিয়া বেগম বলেন , আমার জন্মের পরেই দরিদ্র পরিবারে হাতাশা লেগে রয়েছে। স্বামী ২০ বছর হয়েছে মারা গেছে। আমার কোন ছেলে না থাকায় আমাকে ধরতে হয় সংসারের হাল। বয়স হয়ে গেছে এখন আর ভিক্ষা করতে পারি না। আমার নেই কোন জায়গা জমি, নেই কোন ঘর। তিনি আরও বলেন, সুনেছি শেখ হাসিনা আমাদের গরীবদের নাকি ঘর দেয়। যদি আমি একটি ঘর পেতাম তাহলে বাকি জীবনটা সুখে কাটাতে পারতাম। ভাঙ্গা ঘরে আর থাকতে হত না। থাকত না বৃষ্টির ভয়। তিনি আরোও জানান, ২৫ বছর ধরে ভাঙ্গা ঘরে আমার বসবাস। মেঘ দেখলে বৃষ্টির ভয়! একটি ঘর পাওয়ায় আসায় মেম্বার থেকে শুরু করে ইউএনও অফিস পর্যন্ত বহু বার গেছি। চেয়ারম্যানের কাছ থেকে শুনেছে আমার নামে ঘর আইচে। ঘর পাওয়ার আসায় মেম্বার মজিবরের কাছে গেলে সে আমাকে থাপ্পর মারে। আমি মাটিতে পরে যাই, এই দেখেন আমার হাতে এখনও দাঘ পরে আছে। আমি তাকে ভোট না দেওয়ায় সে আমাকে কিছু দেবে না বলে মারতে থাকেন। ভিক্ষুক রাজিয়ার বিষয়, স্থানীয় সোবাহান মুন্সি, মো: নাছির উদ্দিন, শাহাবুদ্দিন শাহ, মো: বাদল মোল্লা বলেন, আসলেই রাজিয়া বেগম অসহায় ও মানবেতর জীবন যাপন করছেন। সরকারীভাবে একটি ঘর পেলে পরিবারটির অনেক উপকার হত। তবে আমরা আসা করি সরকারী ভাবে সব ধরনের সহযোগীতা তাকে যেনও করা হয়। মেম্বারের বিষয় তারা বলেন, আমরা সুনেছি ঘর চাইতে গেলে তাকে চর মেরেছে। আসলে বিষয়টি মেম্বারে অন্যায় করেছে। এ বিষয়ে বড় বগুনাতপুর ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের মেম্বার মজিবর প্রতিবেদকে বলেন, আসলে রাজিয়া বেগমকে আমি একটা ধাক্কা দিয়েছি। তবে তার নামে একটি ঘর ছিলো, সেই ঘরটি কি হয়েছে আমি জানিনা। অতিদরিদ্র নামের তালিকায় তার নামকি আছে? আসলে অতিদরিদ্র (ইজিপিপি) কর্মসুচীর কাজ আমরা লেভারকে চুক্তিতে দেই, তারা তাদের মতো করেন। অতিদরিদ্র মহিলাদের দিয়ে কাজ করানো হয় না। সরকারি ভাবে তাকে অন্যান্য সহযোগীতা করা হয় না কি। মেম্বার বলেন, বয়স্ক ভাতা পায়, আর কি দিবো। ভিক্ষুক রাজিয়ার বিষয় বাকেরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাধুবী রায় প্রতিবেদককে বলেন, বর্তমানে সরকারীভাবে কোন ঘর নেই। পরর্বতিতে যদি ঘর আসে সে পাবে। ইউপি সদস্যর বিষয় তিনি বলেন, সে যদি কোন অভিযোগ দেয় আমরা বিষয়টি তদন্ত করে মেম্বারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com