লামা উপজেলা পরিষদের প্রথম নির্বাচিত চেয়ারম্যান আধুনিক লামার রূপকার, গণ মানুষের প্রিয় নেতা সরকারী মাতামুহুরী কলেজের প্রতিষ্ঠাতা, সকল সম্প্রদায়ের প্রিয় ব্যক্তিত্ব বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব মোঃ আলী মিয়ার ১১ তম মৃত্যু বার্ষিকী আজ। তিনি ২০১০ সালের ২২ আগষ্ট চট্রগ্রাম মেট্রোপলিটন হাসপাতালে বার্ধক্য জনিত কারণে মৃত্যু বরণ করেন। তিনি ১৯২৩ সালের ১ জানুয়ারী নোয়াখালী জেলার রামগঞ্জ উপজেলাধীন দেবনগর গ্রামে পবিত্র ঈদুল ফিতরের দিন এক খন্দকার পরিবারে জন্ম গ্রহন করেন। তাঁর পিতার নাম মোঃ আনছার আলী খন্দকার, মাতার নাম ফুল বানু। ১৯৬২ সালের শেষ দিকে রামগড় মহকুমা প্রশাসক কর্তৃক মোঃ আলী মিয়ার নেতৃত্বে ২ শত উদ্ভাস্তু পরিবারকে বান্দরবানের লামা উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নে প্রেরন করেন। ওই সময় আলী মিয়া পাহাড়ী-বাঙ্গালীদের সমর্থন নিয়ে লামা ইউনিয়ন পরিষদে বিনা প্রতাদ্বন্ধিতায় সদস্য(মেম্বার) নির্বাচিত হন। বীর মুক্তিযোদ্ধা আলী মিয়া বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগ সরকার কর্তৃক স্থানীয় সরকার ত্রাণ ও পুনর্বাসন কমিটির লামা উপজেলার চেয়ারম্যান নিযুক্ত হন। এ ছাড়া তিনি ১৯৭৩-১৯৭৪ সালে বাংলাদেশের প্রথম ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিপুল ভোটে তিনি বৃহত্তর লামা ইউনিয়ন পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হন। ১৯৭৭ সালে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচণে তিনি লামা ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ১৯৭৬ সালে তিনি লামা ফাঁসিয়াখালী সড়ক নির্মাণ কাজ,১৯৭৯ সালে লামা থানাকে মহকুমায় রুপান্তর ও আশির দশকে লামাকে বিদ্যুতায়নে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। ১৯৮৫ সালে তিনি প্রথম লামা উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। দ্বিতীয় মেয়াদেও তিনি উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। সেই সময় তিনি অত্র উপজেলায় অসংখ্য স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা,পাঞ্জাখানাসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করে গেছেন। এ সব প্রতিষ্ঠানে জমি দাতাও তিনি। এ ছাড়াও তিনি উপজেলার দূর্গম পাহাড়ি এলাকায় যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নতি করণের লক্ষ্যে রাস্তা, ঘাট, ব্রিজ, কালভার্ট, ক্লিনিক স্থাপনসহ অত্র উপজেলায় ব্যাপক উন্নয়ন করে লামাকে আলোকিত করেন। আলহাজ্ব মোঃ আলী মিয়া ১৯৮৬ সালের ১৫ নভেম্বর লামা পৌরসভা’র টি টি এন্ড ডিসিতে “আলী মিয়া কলেজ” নাম করণ ও প্রতিষ্ঠা করেন। পরবর্তীতে উক্ত কলেজ এর বহুতল ভবন নির্মাণ ও প্রশাসনিক কার্যক্রম এবং কলেজে যুগ উপযোগী, শিক্ষার মান উন্নয়নে সরকারী করণ করার লক্ষ্যে নাম পরিবর্তন করে মাতামুহুরী ডিগ্রী কলেজ নাম করণ করা হয়। পরর্তীতে উক্ত কলেজ এর ভবন লামা পৌরসভার ৮ নং ওয়ার্ড লাইনঝিরি এলাকায় স্থানান্তরীত করা হয়। কলেজের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ ছিলেন মরহুম মোঃ আশরাফুল ইসলাম। পরবর্তীতে পার্বত্য চট্রগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি’র সর্বাত্মক সহযোগিতায় কলেজটিকে সরকারী করা হয়। বর্তমানে সরকারী মাতামুহুরী কলেজ নামে শিক্ষা কার্যক্রম ও পাঠ দান অব্যাহত রয়েছে। মৃত্যুকালে তিনি ৪ স্ত্রী, ১০ ছেলে, ১১ মেয়ে সহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে যান। আজ রবিবার বাদে জোহর বেলা ২ ঘটিকার সময় মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষ্যে মরহুমের পূত্র মোঃ তৈয়ব আলীর বাস ভবনে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। সকল আত্মীয়-স্বজন ও গুনগ্রাহীদের যথা সময়ে উপস্থিত থাকতে মরহুমের পরিবারের পক্ষ থেকে বিশেষ ভাবে অনুরোধ করা হয়েছে।