সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৩০ অপরাহ্ন

পছন্দ না হওয়ায় ভেঙ্গে ফেললো মুজিববর্ষের ঘর

মিজানুর রহমান বুলু কোটালীপাড়া (গোপালগঞ্জ) :
  • আপডেট সময় শনিবার, ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২১

আসমানীরে দেখতে যদি তোমরা যদি চাও, রহিমন্দীর ছোট্র বাড়ি রসুলপুরে যাও। বাড়ি তো নয় পাখির বাসা-ভেন্না পাতার ছানি, একটুখানি বৃষ্টি হলেই গড়িয়ে পড়ে পানি। পল্লী কবি জসীম উদ্দীনের আসমানী কবিতার রহিমন্দীরের মতো আর এক রহিমন্দীর সন্ধান পাওয়া গেছে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার হিরণ ইউনিয়নের বর্ষাপাড়া গ্রামে। তবে তার নামটি ভিন্ন। কিন্তু ঘরটি আসমানীদের মতো। তার নাম ইসমাইল বিশ^াস(৩৫)। পেশায় একজন ভ্যান চালক। স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে একটি ঝুঁপড়ি ঘরের মধ্যে বসবাস করছেন। একটু বৃষ্টি হলেই ঘরটি হয়ে ওঠে ব্যবহারের অনুপযোগী। অনুদানের একটি ঘরের জন্য স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ ও জনপ্রতিনিধিদের দ্বারে দ্বারে তিনি ঘুরেছেন। কিন্তু একটি ঘরের ব্যবস্থা কেউ তাকে করে দেয়নি। বাধ্য হয়ে এই ঝুঁপড়ি ঘরেই সে পরিবার নিয়ে বসবাস করছেন। ইসমাইল বিশ^াস বর্ষাপাড়া গ্রামের নুর ইসলাম বিশ^াসের ছেলে। অপরদিকে, একই গ্রামের মৃত রাঙ্গা মিয়া বিশ^াসের ছেলে ওবাইদুল বিশ^াস পেয়েছেন মুজিববর্ষের একটি ঘর। এই ঘরটি তার পছন্দ না হওয়ায় সম্প্রতি তিনি ভেঙ্গে ফেলেছেন। তবে তার বাড়িতে পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করার মতো বড় একটি টিন-কাঠের ঘর রয়েছে। আর্থিক ভাবেও ওবাইদুল বিশ^াস একজন স্বচ্ছল ব্যক্তি। এই ব্যক্তি কি ভাবে মুজিববর্ষের ঘর পেলো এমন প্রশ্ন এখন এলাকাবাসীর মুখে মুখে। এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে স্থানীয় ইউপি সদস্য লায়েকুজ্জামান বিশ^াস বলেন, ওবাইদুল বিশ^াস আমাদের এলাকায় একজন স্বচ্ছল ব্যক্তি। সে কোন ভাবেই মুজিববর্ষের ঘর পেতে পারেনা। তার চেয়ে অনেক দরিদ্র ব্যক্তি আমাদের এলাকায় রয়েছে। তাদের না দিয়ে ওবাইদুল বিশ^াসকে ঘর দেওয়াটা কোন ভাবেই উচিৎ হয়নি। তবে আমি শুনেছি স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতাকে ৫০হাজার টাকা দিয়ে এই ঘরটি এনেছেন। ঘর নির্মাণের পরে তার পছন্দ না হওয়ায় তিনি ঘরটি ভেঙ্গে ফেলেছেন। টাকা দিয়ে ঘর পাওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে ওবাইদুল বিশ^াস বলেন, হিরণ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ৬নং ওয়ার্ডের সভাপতি কামরুল বিশ^াস আমাকে ভালোবেসে এই ঘরটি দিয়েছেন। এই ঘর আনতে আমার কোন টাকা লাগেনি। ঘরটি নির্মাণের পরে আমার পছন্দ না হওয়ায় আমি ভেঙ্গে ফেলেছি। তবে ওবাইদুল বিশ^াসের স্ত্রী লাইলী বেগম ৫০হাজার টাকা দিয়ে ঘর পাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, আমার স্বামী ৫০হাজার টাকা দিয়ে ঘরটি এনেছেন । তবে কাকে টাকা দিয়েছেন তাহা আমার জানা নেই। হিরণ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ৬নং ওয়ার্ডের সভাপতি কামরুল বিশ^াস বলেন, এই ঘরটি আমি দেইনি। ঘরটি হিরণ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান খান দিয়েছেন। হিরণ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান খান বলেন, হিরণ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ৬নং ওয়ার্ডের সভাপতি কামরুল বিশ^াসের সুপারিশে আমরা মুজিববর্ষের ঘর পাওয়ার জন্য ওবাইদুল বিশ^াসের নামটি নির্বাচন করেছিলাম। উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফেরদৌস ওয়াহিদ বলেন, যেহেতু মুবিবর্ষের ঘরগুলো সরকারি অর্থায়ণে নির্মাণ করা হয়েছে। তাই এই ঘরগুলো ইচ্ছা হলেই ভেঙ্গে ফেলা যায় না। বিষয়টি আমি তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com