কুমিল্লা মহানগরী থেকে সীমান্তবর্তী বুড়িচং, ব্রাহ্মনপাড়া সড়কটির পরিচিতি শালদা নদী (বাগড়া) সড়ক নামে। সড়কটির কুমিল্লা থেকে দুরত্ব প্রায় ৩০ কিলোমিটার। গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি দিয়ে জেলা সদর থেকে উত্তরের সীমান্তবর্তী বুড়িচং ব্রাহ্মনপাড়ার হয়ে পাশ্ববর্তী ব্রাহ্মনবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলায়ও সহজে যাতায়াত করা যায়। সড়কটিতে দফায় দফায় উন্নয়নের নামে সংস্কার হলেও এর স্থায়িত্ব স্বল্প সময়ের। ফলে কোনভাবেই জনদুর্ভোগ থেকে এই পথে যাতায়াতকারী যানবাহনের চালক, যাত্রীদের মুক্তি মিলছে না। তবে খেয়াল নেই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কিংবা স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের। ফলে দুর্ভোগ সাথে নিয়েই প্রতিদিন এই সড়ক পথে চলাচল করছে লোকজন। কুমিল্লা মহানগরী থেকে উত্তর দিকে জেলার সীমান্তবর্তী বুড়িচং হয়ে ব্রাহ্মনপাড়া উপজেলার শশীদল ইউনিয়নের বাগড়া পর্যন্ত সড়কটির স্থানীয়ভাবে পরিচিতি কুমিল্লা-বাগড়া সড়ক নামে। এই সড়কে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালামালসহ ব্যক্তিগত কাজে শত শত সিএনজি অটোরিক্সা, প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস, পিক-আপ, মালবোঝাই ট্রাক কাভার্ডভ্যান, ইজিবাইক,মোটরসাইকেল চলাচল করছে। গত বেশ কিছুদিন ধরে সড়কটির ব্রাহ্মনপাড়া উপজেলার বাগড়া,শশীদল বিজিবি কাম্পের দু’পাশ, শশীদল বাজার, শশীদল হাইস্কুল ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনের স্থান, মল্লিকাদিঘী, সেনেরবাজার, লোহারপুল, তেতাভূমি, আনন্দপুর, হরিমঙ্গল বাজারের আশপাশ, চড়নল বাজারের উত্তর অংশছাড়াও বুড়িচংয়ের চড়নল, পাঁচোরা, শঙ্কুচাইল, দক্ষিণ গ্রাম, ধর্মনগর, ছয়গ্রাম, কোদালিয়া, কালিকাপুর, ফকিরবাজার, তেলকুপি বাজারের বিভিন্ন স্থানেও ছোটখাটো বেশ কিছু খানা-খন্দক সৃষ্টি হওয়ায় যানবাহন চালকদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে প্রতিদিন। সবচেয়ে দুর্ভোগের স্থানটি এই সড়কের সেনের বাজার এলাকায়। ব্যস্ততম সড়কটির এই স্থানের অংশটি এতটাই অনুপযোগী হয়ে পড়েছে যেটা চোঁখে না দেখলে বিশ্বাস করা কষ্টকর হবে। সড়কটিতে নিয়মিত যাত্রী নিয়ে চলাচলকারী একাধিক সিএনজি অটোরিক্সা চালকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে এই স্থানের সড়কটি ব্যবহারের অনুপযোগী হলেও এটা সংস্কারের কোন উদ্যোগ নেই। ফলে দুর্ভোগ নিয়ে প্রতিদিন যাত্রী পরিবহন করতে হচ্ছে। তারা আরো বলেন, শুধু ব্রাহ্মনপাড়ার বিভিন্ন স্থান ছাড়াও কুমিল্লা পর্যন্ত সড়কের বিভিন্নস্থানজুড়ে রয়েছে ছোট-ছোট অনেক খানা খন্দক। সেনেরবাজার এলাকায় কথা হয় একাধিক ইজিবাইক চালকসহ স্থানীয়দের সাথে। তারা বলেন,সড়কটি শুধু যান চলাচলের অনুপযোগী না, হাটা-চলারও অনুপযোগী। তারা আরো বলেন, প্রতিদিন এইস্থানটি পারাপার হতে গিয়ে অনেক সময় ইজিবাইক, অটোরিক্সা উল্টে গিয়ে দুর্ঘটনাকবলিত হচ্ছে। সামান্য বৃষ্টিতে সড়কটি কর্দমাক্ত হয়ে গেলে বোঝার উপায় নেই এটি একটি ব্যস্ততম সড়ক। উল্লেখ্য বিগত ২০২০ ইং ব্রাহ্মনপাড়া উপজেলা উপনির্বাচনে বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান আবু জাহের প্রার্থী হওয়ার পর নিজ অর্থায়নে সড়কটির এই অংশে সংস্কার কাজ করেছিলেন। এরপর বিগত সময়ে সওজ’র পক্ষ থেকে কোন সংস্কার হয়নি। এব্যাপারে শশীদল ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ গিয়াস উদ্দিন মাষ্টার বলেন, সড়কটি দীর্ঘদিন ধরে জনগনের চলাচলে দুর্ভোগের কারন হয়ে দাড়িয়েছে। তিনি আরো বলেন, প্রতিদিন এই সড়ক পথে ৩/৪ হাজার বিভিন্ন শ্রেনীর যানবাহন চলাচল করে। এতে প্রতিনিয়ত ছোটখাটো দুর্ঘটনাও ঘটছে। তিনি দ্রুত সড়কটির সংস্কারের দাবী জানান। বিষয়টি জানতে চাইলে সড়ক ও জনপথ কুমিল্লার নির্বাহী পকৌশলী রেজা-ই রাব্বী বলেন, সড়কটির বেশ কিছু অংশে সংস্কার কাজ হয়েছে। বাকী অংশেও অচিরেই কাজ শুরু হবে।