বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৩৫ অপরাহ্ন
শিরোনাম ::
ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সভা অনুষ্ঠিত মাইলস্টোন কলেজে দ্বাদশ শ্রেণির বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা বনফুল আদিবাসী গ্রীনহার্ট কলেজে মনমাতানো ক্লাস পার্টি অনুষ্ঠিত ব্যবসায়ীদের সরকারের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান অধ্যাপক ইউনূসের রাষ্ট্রপতির কাছে সুপ্রিম কোর্টের বার্ষিক প্রতিবেদন পেশ প্রধান বিচারপতির দেশমাতৃকার বিরুদ্ধে দেশী-বিদেশী চক্রান্ত থেমে নেই: তারেক রহমান তুর্কি রাষ্ট্রদূতের সাথে জামায়াতের সৌজন্য সাক্ষাৎ চিন্ময় সমর্থক জঙ্গীদের হামলায় আইনজীবী সাইফুল ইসলাম নিহত অভ্যন্তরীণ বিষয় হস্তক্ষেপ: চিন্ময় ইস্যুতে ভারতের উদ্যোগ শাপলা চত্বরে গণহত্যায় হাসিনাসহ ৫০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ

নাইন-ইলেভেন বার্ষিকীতে শপথ অনুষ্ঠান করলো না তালেবান

আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
  • আপডেট সময় শনিবার, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২১

যুক্তরাষ্ট্রে নাইন-ইলেভেনের সন্ত্রাসী হামলার ২০ বছর বার্ষিকীতে আফগানিস্তানের নতুন অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের শপথ অনুষ্ঠানের আয়োজন করছে না তালেবান। গত শুক্রবার দলটির কালচারাল কমিশনের সদস্য ইনামুল্লাহ সামানগানি এক টুইট বার্তায় এই মন্তব্য করেন। এর আগে ১১ সেপ্টেম্বর শনিবার আফগানিস্তানের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেয়া তালেবানের ঘোষিত দেশটির নতুন অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের শপথ নেয়ার খবর এসেছিলো। টুইট বার্তায় ইনামুল্লাহ সামানগানি বলেন, ‘নতুন আফগান সরকারের শপথ অনুষ্ঠান কিছুদিন আগেই বাতিল করা হয়েছিলো। জনগণ যাতে বিভ্রান্ত না হন, তাই ইসলামি আমিরাত আফগানিস্তানের নেতৃবৃন্দ মন্ত্রিসভার কিছু অংশের ঘোষণা দেন এবং ইতোমধ্যেই কাজ শুরু করেছে।’

১১ সেপ্টেম্বর সরকারের শপথ নিতে যাওয়ার বিষয়টিকে গুজব হিসেবে উল্লেখ করে টুইট বার্তায় তিনি বলেন, এর কোনো ভিত্তি নেই। এর আগে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে খবর বেরিয়েছিলো, ১১ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে নাইন-ইলেভেনের সন্ত্রাসী হামলার ২০ বছর বার্ষিকীতে আফগানিস্তানের নতুন অন্তর্র্বতী সরকারের শপথের আয়োজন করছে তালেবান। শপথ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের জন্য তুরস্ক, ইরান, কাতার, পাকিস্তান, চীন ও রাশিয়াসহ বিভিন্ন দেশকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। তবে রাশিয়া শপথ অনুষ্ঠানে না থাকার ঘোষণা দেয়।

২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্রে নাইন-ইলেভেনের সন্ত্রাসী হামলার জেরে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ হামলার জন্য আফগানিস্তানে আশ্রয়ে থাকা আলকায়েদা প্রধান ওসামা বিন লাদেনকে দায়ী করেন। ওই সময় আফগানিস্তানের ক্ষমতাসীন তালেবান সরকারের কাছে ওসামা বিন লাদেনকে মার্কিন প্রশাসনের হাতে তুলে দেয়ার দাবি জানান বুশ। তালেবান সরকার ওসামা বিন লাদেনকে তুলে দেয়ার পরিবর্তে যুক্তরাষ্ট্রে সন্ত্রাসী হামলার সাথে তার সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে মার্কিনিদের কাছে প্রমাণ চায়। প্রমাণ ছাড়া তারা ওসামা বিন লাদেনকে মার্কিন প্রশাসনের কাছে তুলে দিতে অস্বীকৃতি জানায়।
বুশ প্রশাসন ও তালেবানের মধ্যে বিরোধের জেরে ২০০১ সালের অক্টোবরে আফগানিস্তানে আগ্রাসন শুরু করে মার্কিন বাহিনী। অত্যাধুনিক সমরাস্ত্রসজ্জ্বিত মার্কিন সৈন্যদের হামলায় তালেবান সরকার পিছু হটতে বাধ্য হয়। তবে একটানা দুই দশক যুদ্ধ চলতে থাকে দেশটিতে। এরইমধ্যে আফগান যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে ন্যাটো জোটের সদস্য দেশগুলোও যুক্ত হয়। মার্কিনিদের সমর্থনে নতুন প্রশাসন ও সরকার ব্যবস্থা গড়ে উঠে দেশটিতে।
২০১১ সালের ২ মে পাকিস্তানের অ্যাবোটাবাদে মার্কিন সৈন্যদের এক ঝটিকা অভিযানে নিহত হন ওসামা বিন লাদেন। ২০১৩ সালে অজ্ঞাতবাসে তালেবানের প্রতিষ্ঠাতা মোল্লা মোহাম্মদ ওমরের মৃত্যু হয়। তা স্বত্ত্বেও তালেবান যোদ্ধারা আফগানিস্তানে মার্কিন নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনীর দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে লড়াই অব্যাহত রাখে। দীর্ঘ দুই দশক আফগানিস্তানে মার্কিন নেতৃত্বের বহুজাতিক বাহিনীর দখলের পর ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে কাতারের দোহায় এক দ্বিপাক্ষিক চুক্তিতে আফগানিস্তান থেকে মার্কিন বাহিনী প্রত্যাহার করতে সম্মত হয় যুক্তরাষ্ট্র। এর বিপরীতে আফগানিস্তানে শান্তি প্রতিষ্ঠায় অংশ নিতে তালেবান সম্মত হয়।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ঘোষণা অনুসারে ৩১ আগস্ট আফগানিস্তান থেকে বহুজাতিক বাহিনীর সম্পূর্ণ প্রত্যাহারের ডেডলাইন থাকলেও ৩০ আগস্ট সম্পূর্ণ সৈন্য প্রত্যাহার সম্পন্ন হয়। মার্কিনিদের সাথে চুক্তি অনুসারে ক্ষমতাসীন থাকা মার্কিন সমর্থনপুষ্ট আফগান সরকারের সমঝোতার জন্য তালেবান চেষ্টা করলেও দুই পক্ষের মধ্যে কোনো সমঝোতা হয়নি। তালেবানের অভিযোগ, আশরাফ গনির নেতৃত্বাধীন আফগান সরকার দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠায় তাদের আহ্বানে সাড়া দেয়নি। এর পরিপ্রেক্ষিতে মে মাসে বহুজাতিক বাহিনীর প্রত্যাহারের মধ্যেই পুরো দেশের নিয়ন্ত্রণে অভিযান চালানো শুরু করে তালেবান।

৬ আগস্ট প্রথম প্রাদেশিক রাজধানী হিসেবে দক্ষিণাঞ্চলীয় নিমরোজ প্রদেশের রাজধানী যারানজ দখল করে তারা। যারানজ নিয়ন্ত্রণে নেয়ার ১০ দিনের মাথায় কেন্দ্রীয় রাজধানী কাবুলে পৌঁছে যায় তালেবান যোদ্ধারা। তালেবানের অগ্রসরে আশরাফ গনির কাবুল ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার জেরে আফগান প্রশাসন ভেঙে পড়ার পরিপ্রেক্ষিতে ১৫ আগস্ট কাবুলে প্রবেশ করে তালেবান যোদ্ধারা। তবে কাবুলের উত্তরের দুর্গম পাঞ্জশির প্রদেশ শুধু তাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে রয়ে গিয়েছিলো। আফগানিস্তানে রুশ আগ্রাসন প্রতিরোধ যুদ্ধের কিংবদন্তি যোদ্ধা আহমদ শাহ মাসুদের ছেলে আহমদ মাসুদের নেতৃত্বে তালেবানবিরোধী বিদ্রোহী যোদ্ধারা এই উপত্যকায় অবস্থান নিয়েছিলো। সোমবার পাঞ্জশির নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে পুরো আফগানিস্তানের ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে তালেবান। এর পর মঙ্গলবার নতুন আফগান সরকার প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেয় দলটি। সূত্র : তাস




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com