৫৪৪ দিন পর শ্রেণীকক্ষে ফিরলো শিক্ষার্থীরা। এরই মধ্যে শিক্ষার্থীদের স্কুলের বেতন পরিশোধে অভিভাবকদের যেন চাপ দেয়া না হয় স্কুল-কলেজগুলোকে সেই নির্দেশনা দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা: দীপু মনি। তিনি বলেছেন, শিক্ষার্থীদের বেতন নিয়ে অভিভাবকদের যেন চাপ দেয়া না হয়। করোনার এই সময়ে অনেকের অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে। গতকাল রোববার রাজধানীর আজিমপুর গভর্নমেন্ট গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজে পরিদর্শনে এসে তিনি এসব কথা বলেন। অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনারা অন্যান্য খরচ কমিয়ে আপনার সন্তানদের বেতন আগে পরিশোধ করতে পারেন। বেতনের টাকা কিন্তু খুব বেশি নয়।
তিনি আরো বলেন, করোনার সংক্রমণ কময় আমরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিয়েছি। এখন শুধু করোনা না ডেঙ্গুরও সিজন চলছে। ডেঙ্গু মশা কামড়ের সময়ই শিক্ষার্থীরা ক্লাসে থাকে। তাই তাদের ফুলহাতা জামা পরে আসার জন্য বলবো। এই সময়টাতে শিক্ষার্থীদের স্কুল ইউনিফর্ম নিয়ে কড়াকড়ি না করাই ভালো। দীর্ঘ সময়ের বন্ধে অনেক শিক্ষার্থী ইউনিফর্ম থেকে বড় হয়ে গেছে। আজ দেড় বছর পর শ্রেণীকক্ষে ফিরলো শিক্ষার্থীরা। দিনের হিসেবে ৫৪৪ দিন পর। দিনের শুরুতে ঢাকা ও ঢাকার বাইরের অনেক এলাকাতেই দেখা গেছে পথে পথে ছেলেমেয়েরা হেঁটে যাচ্ছে। কেউ অভিভাবকের সাথে। কেউ সহপাঠীদের সাথে দল বেঁধে। কেউবা একাকী। তাদের পরনে স্কুলপোশাক। পিঠে ব্যাগ। ঢাকার মহাখালীতে বিএএফ শাহীন স্কুলের ফটক দিয়ে সকাল আটটার কিছু আগে দলে দলে শিক্ষার্থীরা প্রবেশ করছিল। এ সময় অনেককেই জড়ো হয়ে গল্প করতে দেখা গেছে। তাদের চেহারায় ছিল খুশির ঝিলিক, অনেক দিন পর বন্ধু-সহপাঠীদের সাথে দেখা হবার আনন্দ ঢাকার বাইরে স্কুলের প্রথম দিনটি দেখতে নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলার কামরানীর চর নামে একটি গ্রামে গেছেন বিবিসির শাহনেওয়াজ রকি। তিনি জানাচ্ছিলেন, তিনি যে স্কুলটির সামনে আছেন, সেটিতে ৯টার পর থেকে ক্লাস শুরু হবার কথা। কিন্তু ভোর সাতটা থেকেই স্কুলের অনেক ছাত্রছাত্রী এসে ঘুরে যাচ্ছিল, সত্যিই স্কুল খুলছে কি না সেটা দেখতে। টেলিভিশনে প্রচারিত সরাসরি সম্প্রচারকৃত ভিডিওতে দেখা যায়, অনেকটা উৎসবমুখর পরিবেশেই স্কুলগুলোতে শিক্ষার্থীরা প্রবেশ করছে। স্কুলে প্রবেশের সময় মাস্ক আছে কিনা সেটি যাচাই, না থাকলে বিতরণ, হ্যান্ড স্যানিটাইজার দেয়া এবং শরীরের তাপমাত্রা মাপা হচ্ছে। এছাড়া শ্রেণীকক্ষের ভেতরেও সামাজিক দূরত্ব রেখে শিক্ষার্থীদের বসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। অনেক স্কুলেই শিক্ষার্থীদের ফুল এবং চকলেট দিয়ে স্বাগত জানাতে দেখা গেছে। স্বাস্থ্যবিধি অনুযায়ী ভিড় এড়াতে অনেক স্কুলেই অভিভাবকদেরকে ভেতরে প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি।