বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলায় দুরারোগ্য রোগের চিকিৎসা সেবা প্রদান করে চলেছেন আধ্যাত্মিক চেতনায় বিশ্বাসী মতুয়া সংঘের অন্যতম সেবক শ্রীমৎ নরেশ গোসাই। তিনি পেশায় ছিলেন শিক্ষক। অবসর জীবনে এসে অসংখ্য মানুষকে তিনি সেবা দিয়ে সুস্থ্য করে তুলেছেন। চিতলমারীর আরুলিয়া গ্রামে তার বাড়িতে গড়ে তুলছেন সেবাশ্রম। প্রতি বছর প্রায় ২৫-৩০ হাজার মানুষ সেখানে উপস্থিত হন বলে তিনি জানান। বিশেষ এই ব্যক্তির নাম শ্রীমৎ নরেশ গোসাই(৭৪)। নরেশ জানান, ক্যান্সার, যক্ষ্মা, বসন্ত, কলেরা, ডায়রিয়া রোগীকে সুস্থ্য করা, সাপে কাটা রোগীকে জীবন দেয়া, ধুলা পড়ে দিয়ে শরীরের বিষ নামানো, ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ায় মনোযোগী করা, চাকুরী পাইয়ে দেয়া, সন্তানহীন নারীকে সন্তান দান, গোয়ালের গরুর দুধ আনা, মা মনসার আশ্রয় থেকে মুক্তি, জীন পরী ভূত প্রেত থেকে মুক্তি, মাথা খারাপ রোগীকে সুস্থ্য করেছেন। এছাড়াও তিনি আকাশের মেঘ সরিয়ে রোদ আনতে পারেন এবং পাতালের পাথর সরিয়ে নলকূপ বসানো সহ হরেক সমস্যার সমাধান করতে পারেন বলে জানিয়েছেন। ফকিরহাটের মূলঘর ইউনিয়নের পুটিয়া গ্রামের নিরঞ্জন বিশ্বাস ও জয়মন্ত বিশ্বাসের ছেলে নরেশ চন্দ্র বিশ্বাস বর্তমানে চিতলমারীর আরুলিয়া গ্রামে বসবাস করেন। তার বাড়িতেই ২০০৯ সালের ২৩ ডিসেম্বর গড়ে তোলেন ‘‘নবঘাট শ্রী শ্রী হরি গুরুচাঁদ সেবাশ্রম’’। নরেশ চন্দ্র বিশ্বাস জানান, তার কাছে সেবা নিতে আসা প্রত্যেক রোগী ১০৫ টাকা জরিমানা জমা দিলে রোগীর সমস্যা সমাধান হয়ে যায়। এমন অসংখ্য উদাহরণ রয়েছে বলে তিনি জানান। নরেশ চন্দ্র বিশ্বাস আরো জানান, তার সেবাশ্রম পরিচালনার জন্য সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তিগণদের নিয়ে কমিটি আছে। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন, কমিটির উপদেষ্টা কমিটির সদস্য চিতলমারী সরকারী বঙ্গবন্ধু মহিলা কলেজের শিক্ষক বিজন রায়, সভাপতি আইনজীবি বিধানচন্দ্র মন্ডল, সাধারণ সম্পাদক খড়িয়া আরুলিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মুকুল কিশোর মজুমদার, চিতলমারী উপজেলা সাবরেজিষ্ট্রি অফিসের সহকারী প্রধান জগবন্ধু মন্ডল, সহ-দপ্তর সম্পাদক দলিল লেখক রাইমোহন মজুমদার, সাংগঠনিক সম্পাদক কলকলিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নির্মল মন্ডল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আরুলিয়া গ্রামের সন্দীপ মজুমদার এমএ। নরেশ চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, তিনি বিএবিএড, এমএ (দর্শন) পর্যন্ত লেখাপড়া করেছেন। এছাড়াও তিনি ফকিরহাটের পুটিয়া গুড়গুড়িয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, কাথুলি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, খড়লিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, আট্টাকা মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, সৈয়দ মহল্লা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, মৌভোগ মধ্যপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, বাগেরহাট সদরের পাইকপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক ছিলেন। ২০১৬ সালের মার্চ মাসে তিনি শিক্ষকতা হতে অবসর গ্রহণ করেন। তিনি জানান, সরকারী সাহায্য সহযোগিতা পেলে তার সেবাশ্রমটি আরো বড় করতে পারতেন। তাই তিনি সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।