বলিউড মেগা স্টার শাহরুখ খানের পুত্র আরিয়ান খানের গ্রেফতারের পিছনে রাজনীতি রয়েছে বলে প্রশ্ন তুলেছেন রাজনৈতিক নেতা থেকে শুরু করে কয়েকজন তারকা। আরিয়ানকে গ্রেফতারের রাতের একটি ভিডিও প্রকাশ করে ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টির নেতা নবাব মালিক পুরো ঘটনা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি দাবি করেছেন, বিজেপি ও মাদক নিয়ন্ত্রণ দফতর (এনসিবি)-র যোগসাজশের জেরেই শাহরুখপুত্রকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মহারাষ্ট্র সরকার ও বলিউডের ভাবমূর্তি নষ্ট করতেই এই চক্রান্ত করা হয়েছে বলেও দাবি করেছেন তিনি। একই দাবি করেছেন বলিউড তারকা রাবিনা ট্যান্ডনও। তিনি এই ঘটনাকে লজ্জাজনক রাজনীতি হিসেবে উল্লেখ করেছেন। নবাব মালিকের নতুন প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা গেছে, শাহরুখ পুত্র যে রাতে গ্রেফতার হন সেই রাতে মাদক নিয়ন্ত্রণ দফতর (এনসিবি) কার্যালয়ে প্রবেশ এবং বের হচ্ছেন কিরণ পি গোসাভি এবং মনিশ ভানুশালি নামের দুই ব্যক্তি। কিরণ পি গোসাভির সঙ্গে আরিয়ান খানের একটি সেলফি ভাইরাল হয়েছে। এনসিবি এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ভাইরাল ছবিতে দেখা যাওয়া ব্যক্তির সঙ্গে তাদের কোনও সম্পর্ক নেই। এছাড়া ভানুশালির সঙ্গে দেখা গেছে আরিয়ানের বন্ধু আরবাজ মার্চেন্টকে। মালিক দাবি করেছেন, ভানুশালি একজন বিজেপি নেতা। গত বুধবার এনসিবি দাবি করেছে তারা কোনও অন্যায় করেনি, তবে কেউ ক্ষুব্ধ হলে আদালতে যেতে পারে।
এনসিবি কর্মকর্তা সমির ওয়াংখেড়ের এক ভিডিও নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন নবাব মালিক। ওই ভিডিওতে ওয়াংখেড়ে বলেন, প্রমোদ তরীতে অভিযান চালিয়ে ৮-১০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি বলেছেন, ওই সময়ে আট জনকে গ্রেফতার করা হয়। তাহলে তিনি কেন গ্রেফতারের সংখ্যা নিয়ে নিশ্চিত ছিলেন না। তারা কি আরও দুই জনকে ফাঁসাতে চেয়েছে? মালিক প্রশ্ন তোলার পর এনসিবি’র কার্যক্রম নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্ক শুরু হয়। শাহরুখ পুত্রকে গ্রেফতারের সময়ে নিয়ম ভেঙেছেন অভিযোগ তুলে এতে জড়িত এনসিবি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি করেছে মহারাষ্ট্র কংগ্রেস।
কংগ্রেস নেতা সচিন সাওয়ান্তও গ্রেফতারের ঘটনায় এনসিবি’র বিরুদ্ধে আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ এনেছেন। তিনি বলেছেন, মাদক জব্দ ও অভিযানে উপস্থিত দুই ব্যক্তির পরিচয় নিয়ে এনসিবি কর্মকর্তাদের বক্তব্যে গরমিল রয়েছে। কর্মকর্তারা বলছেন মানিশ ভানুশালি একজন স্বতন্ত্র প্রত্যক্ষদর্শী। কিন্তু ভানুশালি নিজেই এই মামলায় একজন তথ্যদাতা হিসেবে দাবি করেছেন। আমরা অভ্যন্তরীণ তদন্ত চাই। অন্যথায় এনসিবি মহারাষ্ট্র সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছে বলে ভাবার সুযোগ থাকবে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবর অনুসারে, কিরণ পি গোসাভি একজন প্রাইভেট ইনভেস্টিগেটর এবং মানিশ ভানুশালি একজন বিজেপি নেতা। এই মামলায় উভয়েই এনসিবি’র তথ্যদাতা হিসেবে কাজ করে থাকতে পারেন। এনসিবি তাদের পরিচয় স্পষ্ট করেনি। অভিযানে তাদের উপস্থিতি নিয়েও কোনও মন্তব্য করেনি সংস্থাটি। তারা শুধু বলেছে, অভিযানের সময় ও পরে তোলা ছবিতে থাকা ব্যক্তি এনসিবি কর্মকর্তা নন।
আরিয়ান খানের গ্রেফতার ও কারাদ-ে ক্ষোভ প্রকাশের তালিকায় যুক্ত হয়েছেন বলিউড সেলিব্রেটি রাবিনা ট্যান্ডন। বৃহস্পতিবার এক টুইট বার্তায় তিনি লিখেছেন, ‘কলঙ্কিত রাজনৈতিক খেলা চলছে… এক তরুণের জীবন ও ভবিষ্যত নিয়ে তারা খেলছে… হৃদয় বিদারক।’ রাবিনা ট্যান্ডন একা নন। হৃতিক রোশন, আলিয়া ভাটসহ বলিউডের বহু সেলিব্রেটি শাহরুখ পুত্রের গ্রেফতারের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছেন।