সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৫৮ অপরাহ্ন

কালিগঞ্জ থানার ওসির নেতৃত্বে অভিযানে ১৫ টি গরু উদ্ধার আটক ৭ চোর

হুমায়ুন কবির কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ) :
  • আপডেট সময় সোমবার, ১ নভেম্বর, ২০২১

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ থানার বিভিন্ন গ্রাম থেকে কিছুদিন যাবত প্রায়ই গরু চুরির ঘটনা ঘটে। ১৩ অক্টোবর ২০২১ পৌরসভার ফয়লা গ্রাম থেকে একসঙ্গে ৭টি গরু চুরির ঘটনা ঘটে। কিছুদিন পর ১৯ অক্টোবর ২০২১ এ ঝিনাইদহ সদর থানাধীন হামদহ ঘোষপাড়া এলাকা হতে জালাল গাজীর গরু চুরি হয়। গরু চোর ধরতে নড়েচড়ে বসে ঝিনাইদহ জেলার সদর ও কালিগঞ্জ থানা পুলিশ। অবশেষে ছোটো বড় ১৫টি গরু ও সাত জনকে আটক করতে পুলিশ সক্ষম হয়। কালীগঞ্জ থানাধীন ফয়লা গ্রাম থেকে চুরি হওয়া হালের বলদ পুলিশ কর্তিক উদ্ধার হয়েছে শুনতে পেয়ে মুখে হাসি ফুটেছে গনজের আলী ও তার স্ত্রীর। গত মাসে তাদের বাড়ি থেকে ৭টি গরু চুরি হওয়ার পর তারা নিঃস্ব হয়ে পড়েন। আয়ের একমাত্র গরুগুলো হারিয়ে তারা অনেকটা পাগলের মত হয়ে যান। থানায় মামলা করতে আসলে ওসি তাদের বলেন,” ধৈয্য ধরুন, আপনাদের গরু উদ্ধারের জন্য আমরা সর্বাতœক চেষ্টা করবো। “সেই গরু উদ্ধার করে তাদের মুখে হাসি ফিরিয়ে দিয়েছেন কালীগঞ্জ থানার ওসি মাহফুজুর রহমান।তিনি তার কথা রাখতে পেরেছেন। পাশাপাশি অভিযান চালিয়ে আন্তঃজেলা গরু চোর চক্রের ৭ সদস্যকে গ্রেপ্তারও করেছেন। রোববার রাতে খুলনা ও বাগেরহাট জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় গ্রেপ্তার হওয়া চোরদের হেফাজত থেকে ছোট বড় ১৫টি গরু উদ্ধার করে পুলিশ।এ সময় চোরদের নিকট থাকা বেশ কয়েকটি মোবাইল ফোনও জব্দ করা হয়। সোমবার (১ নভেম্বর) সকালে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ থানার আয়োজনে অফিসার ইনচার্জ মাহফুজুর রহমানের পক্ষে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।উক্ত সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আবুল বাশার জানান, গত ১২ অক্টোবর ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ শহরের ফয়লা গ্রামের মৃত কুসুই মন্ডলের ছেলে গনজের আলীর ৭টি ও ১৯ অক্টোবর দিনগত রাতে ঝিনাইদহ সদর থানার হামদল ঘোষপাড়া এলাকা থেকে মৃত তাজুল গাজীর ছেলে জালাল গাজীর ৬ টি গরু চুরি হয়। ঘটনার পর কালীগঞ্জ ও সদর থানায় পৃথক দুইটি চুরি মামলা দায়ের হয়। পুলিশ তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার ও সিসি টিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে চোরদের সনাক্ত করে খুলনা ও বাগেরহাট জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান শুরু করে।অভিযানে গ্রেপ্তার হওয়া আসামিরা হলো, বাগেরহাট জেলার কচুয়া থানার নরেন্দ্রপুর গ্রামের আকুব্বর কাজীর ছেলে উজ্জ্বল কাজী(৩৫), খুলনা জেলার বটিয়াঘাটি উপজেলার লক্ষীখোলা গ্রামের মৃত আব্দুল্লাহ শেখের ছেলে জিয়া শেখ(৪২), বাগেরহাট জেলার চিতলমারী উপজেলার শ্যামপাড়ার মৃত লিয়াকত আলীর খানের ছেলে সুজন খান ওরফে মিলন(৪২), বাগেরহাট জেলার ফকিরহাট উপজেলার ছোট বাহিরদিয়া গ্রামের মৃত নুর মোহাম্মদ কাজীর ছেলে আল আমিন কাজী(২৯), খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলার জিলেরডাংগা গ্রামের মৃত আব্দুল আজিজ ফকিরের ছেলে সেকেন্দার আলী ফকির(৪৫), খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলার খলসি গ্রামের আব্দুল হালিম গাজীর ছেলে রুবেল গাজী(৩৫) ও বাগেরহাট জেলার জেলার ফকিরহাট উপজেলার বড় খাজুরা গ্রামের মৃত মজিদ শেখের ছেলে শেখ ওহাব(৫০)।
সংবাদ সম্মেলনের সময় কালীগঞ্জ থানার ওসি মুহাঃ মাহফুজুর রহমানসহ থানার অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। কালীগঞ্জ থানার অফিসার-ইন-চার্জ (ওসি) মাহফুজুর রহমান মিয়া বলেন, গরু চুরির ঘটনায় গত ১৩ অক্টোবর থানায় মামলা হয়। মামলার পর তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই সুজাত আলী তদন্ত কার্যক্রম শুরু করেন। পরে সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ ও তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে আসামিদের সনাক্ত করে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ সময় উদ্ধার করা হয়েছে ছোট বড় ১৫ টি গরু। তিনি আরো জানান, একটি অসহায় পরিবারের হালের বলদ উদ্ধার করে তাদের কাছে ফিরিয়ে দিতে পারব ভাবতেই নিজের কাছে খুবই ভাল লাগছে। এছাড়া এটি তাদের দায়িত্ব বলেও তিনি জানান। অপরদিকে হালের বলদ চুরির পর নিঃস্ব হওয়া গনজের আলী ও তার স্ত্রী গরু ফিরে পাওয়ায় পুলিশকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞা জানিয়েছেন। তারা বলেন, পুলিশ আমাদের গরু উদ্ধার করে দিবে এটা আমরা কখনো ভাবতেও পারিনি। তারা আরো জানান, পুলিশ সম্পর্কে তাদের ধারনা পাল্টে গেছে। পুলিশ আর আগের মত নেই। এখন পুলিশ সত্যিই জনগনের ও অসহায় মানুষের বন্ধু।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com