মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার ১নং রহিমপুর ইউয়িনস্থিত চৈত্রঘাট বাজারে সংঘটিত চাঞ্চল্যকর ব্যবসায়ী নেতা নাজমুল হাসানকে প্রকাশ্য দিবালোকে কুপিয়ে হত্যা ঘটনার মূল আসামীকে সহযোগীসহ গ্রেফতার করেছে মৌলভীবাজার জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। ৪ নভেম্বর বৃহস্পতিবার ভোর ৪টার দিকে ঢাকার কমলাপুর এলাকা থেকে তাদেরকে গ্রেফতার এবং তাদের কাছ থেকে পাসপোর্ট, বিমান টিকিট, ড্রাইভিং লাইসেন্স, মোবাইল ফোন, দেশী ও বিদেশী সীমকার্ড এবং দেশী ও বিদেশী মুদ্রা জব্দ করা হয়েছে।
সকাল সাড়ে ১১টার দিকে জেলা পুলিশ সুপারের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলন করে মৌলভীবাজারের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকারিয়া জানান- গত ৩১ অক্টোবর দুপুর দেড়টার দিকে চৈত্রঘাট বাজারে চৈত্রঘাট বাজার বণিক সমিতির সভাপতি নাজমুল হাসান(৩৬)-কে হত্যা ঘটনার মূল আসামী তফাজ্জল আলী(৩৫) ও তার সহযোগী খালেদ মিয়া(৫৩)-কে আজ ৪ নভেম্বর ভোর ৪টার দিকে মৌলভীবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এবিএম মুজাহিদুল ইসলাম পিপিএম এর নেতৃত্বে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের একটি চৌকস অভিযানিক দল ঢাকার কমলাপুর এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে। এসময় গ্রেফতারকৃত তফাজ্জল আলীর কাছ থেকে ১টি পাসপোর্ট, এমিরেটস এয়ারলাইনসের বিমানটিকিট, ২টি ড্রাইভিং লাইসেন্স, ২টি মোবাইল ফোন, ৪টি বিদেশী সীমকার্ড, ১টি দেশী সিমকার্ড ও নগদ ৩৩৮ দিরহাম এবং খালেদ মিয়ার কাছ থেকে ১টি মোবাইল ফোন, ১টি দেশী সিমকার্ড ও নগদ ১৯,৩০০ টাকা জব্দ করা হয়। তিনি আরও জানান- এর আগে গত ১ নভেম্বর ভোররাতে হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত অপর ২ আসামী জুয়েল মিয়া(৪৫) ও কাজী আমির হোসেন হিরা(৪০)-কে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত অস্ত্র ও মাইক্রোবাসসহ গ্রেফতার করা হয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের ভাই ১৪ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৪/৫ জনের বিরুদ্ধে ৬ জুন কমলগঞ্জ থানায় ১নং হত্যামামলা দায়ের করেন। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি ও হত্যাকান্ডের সিসি টিভি ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে দেশব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি হয়। আসামীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনতে পুলিশ সুপারের নির্দেশে আসামীদেরকে গ্রেফতারে অভিযান শুরু করে মৌলভীবাজার জেলা পুলিশের সকল ইউনিট।
এর ধারাবাহিকতায় এ পর্যন্ত ৪ আসামীকে গ্রেফতার করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়- প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তফাজ্জল আলী ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে জানিয়েছে, নিহত নাজমুল ২০২০ সালের ২ জুন জুয়েলকে পঙ্গু করে দেয়। ওই হামলার পর থেকে নিহত নাজমুলের উপর প্রতিশোধ নেয়ার পরিকল্পনা করে তারা। গত ৩১ অক্টোবর চৈত্রঘাট কালী মন্দিরের সামনে মাইক্রোবাসসহ আসামীরা অপেক্ষমান ছিল। এদিন বাজার কিছুটা জনশূন্য এবং নাজমুল একা থাকার সুযোগে তফাজ্জলের নেতৃত্বে তার উপর হামলা করে আসামীরা দ্রুত সটকে পড়ে এবং পরে তারা বিভিন্ন স্থানে আতœগোপন করে। তফাজ্জল আরও জানায়, পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী বিদেশে পালানোর জন্য আগেই টিকিট কাটা ছিল। পুলিশ সুপার বলেন- গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন। জড়িত অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।