শহীদ নূর হোসেনের রক্তদানের মধ্য দিয়ে দেশে বহুল কাক্সিক্ষত গণতন্ত্র এসেছে। তবে সেই গণতন্ত্র এখনও প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পায়নি বলে মনে করেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। গতকাল বুধবার (১০ নভেম্বর) সকালে শহীদ নূর হোসেন দিবস উপলক্ষে গুলিস্তান জিরো পয়েন্টে নূর হোসেন চত্বরে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এই মন্তব্য করেন।
শহীদ নূর হোসেনের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘এই দিনে গণতন্ত্র শৃঙ্খলমুক্ত হলেও প্রাতিষ্ঠানিক রূপ লাভ করেনি। বাংলার মানুষকে অর্থনৈতিক মুক্তি ও গণতন্ত্র নিশ্চিতে কাজ করছে শেখ হাসিনা সরকার। গণতন্ত্রের ক্রমবিকাশিত ধারা অব্যাহত রাখতে সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার কোনো বিকল্প নেই।’ সকাল ৮টায় আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের নূর হোসেনের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানান। এরপর নূর হোসেনের পরিবার শ্রদ্ধা জানান। এ সময় আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ, উত্তর আওয়ামী লীগ, বাংলাদেশ যুবলীগ, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, নূর হোসেন স্মৃতি সংসদ, ঢাবি ছাত্রলীগ, বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টি, গণসংহতি আন্দোলনসহ বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানানো হয়।
গতকাল পালিত হয়েছে শহীদ নূর হোসেন দিবস। ১৯৮৭ সালের এই দিনে যুবলীগ নেতা নূর হোসেনের রক্তে রঞ্জিত হয়েছিল ঢাকার রাজপথ। সেদিন সচিবালয়ের সামনে ১৫ দল, ৭ দল ও ৫ দলের অবস্থান ধর্মঘট কর্মসূচি ছিল। সেই কর্মসূচির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছাত্র সংগঠনগুলোর সমর্থনে অবস্থান ধর্মঘট ঘেরাও কর্মসূচিতে রূপ লাভ করে। স্বৈরশাসকের সকল বাধাকে উপেক্ষা করে ১০ নভেম্বর সকাল থেকেই সচিবালয়ের চারদিকে আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতার মিছিল সমবেত হয়। তখন তোপখানা রোডের মুখে পুলিশ বক্স পেরিয়ে শুরু হয় নূর হোসেনদের সাহসী মিছিল, সাহসী যুবক উদাম গায়ে লিখেছিল ‘গণতন্ত্র মুক্তিপাক-স্বৈরাচার নিপাত যাক’। সমাবেশ শুরুর সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় পুলিশের বেধড়ক লাঠিচার্জ, টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ। পল্টন তখন রণক্ষেত্র। এরই মধ্যে খবর আসে পুলিশের গুলির্বষণে শহীদ হয়েছেন নূর হোসেন। আহত হয়েছেন অসংখ্য। নূর হোসেনের আত্মদানের মাধ্যমে সেদিন গণতন্ত্রের নতুন সংগ্রাম শুরু হয় । সেই সংগ্রামের ধারায় ১৯৯০ সালের ৪ ডিসেম্বর স্বৈরাচারী শাসক পদত্যাগের ঘোষণা দেন।