স্বাধীনতার ৫০ বছর পার হলেও দেশের মানুষ এর সুফল পায়নি। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা, মৌলিক মানবাধিকার ও মানবিক বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। জনগণকে এখনো সংগ্রাম করতে হয় অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য। তিনি বলেন, জনগণের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়ে একদলীয় নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার ক্ষমতা আঁকড়ে থাকায় মানুষের দুর্দশা বাড়ছে। জবাবদিহিতা না থাকায় কর্তৃত্ববাদী শাসনে অভ্যস্থ হয়ে উঠছে ক্ষমতাসীনরা। মুক্তির জন্য ৪৭ ও ৭১ সালে দুই দুইবার স্বাধীনতা অর্জনের পরও মানুষের প্রকৃত মুক্তি মেলেনি। তাই দেশের মানুষকে ইসলামের জন্য ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। ন্যায় ও ইনসাফভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য জাগতে হবে, দেশবাসীকে জাগাতে হবে। গত শুক্রবার বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান নরসিংদী জেলা শাখা কর্তৃক ভার্চুয়ালি আয়োজিত এক কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপরোক্ত কথা বলেন।
আমিরে জামায়াত আরো বলেন, জামায়াতে ইসলামী গতানুগতিক কোনো রাজনৈতিক দল নয়। নবীগণের আ:-এর রেখে যাওয়া দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে আল্লাহর রেজাবন্দি হাসিলের চেষ্টা করতে হবে। জুলুম-নিপীড়ন, মামলাসহ শত নির্যাতন করে জামায়াতকে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন করা যায়নি। জনগণের প্রকৃত মুক্তির জন্য গণতন্ত্র ও অধিকার প্রতিষ্ঠায় অতীতের মতোই জামায়াত নিরলসভাবে কাজ করে যাবে। বিশ্বব্যাপী ইসলাম ও এর অনুসারীরা সন্ত্রাসবাদের শিকার। বাংলাদেশও এর বাইরে নয়। দেশে ইসলামের দাওয়াত ও প্রচার-প্রচারণা আজ ঝুঁকিপূর্ণ। তিনি বলেন, শীর্ষ নেতৃবৃন্দ আদর্শ বিকিয়ে দেননি, মাথাও নত করেননি। বরং ফাঁসির রশিতে চুমু খেয়ে ইসলামী আদর্শকে ধারণ করে শহিদী মরণকে আলিঙ্গন করে বিশ্ববাসীর সামনে শাহাদাতের হকের নজির উপস্থাপন করেছেন। সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মা’ছুম, কেন্দ্রীয় নির্বাহ পরিষদ সদস্য সাইফুল আলম খান মিলন, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির নুরুল ইসলাম বুলবুল ও কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য আব্দুল জব্বার।
এছাড়া জেলা ও উপজেলা নেতৃবৃন্দ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন। জেলা সেক্রেটারি অধ্যাপক আমজাদ হোসাইনের সঞ্চালনায় সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন জেলা আমির মাওলানা মোছলেহুদ্দীন। ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মা’ছুম বলেন, নবীদের মিশন ছিল আল্লাহর জমিনে আল্লাহর দ্বীনের জন্য কাজ করা। দ্বীনকে মজবুত করা। এজন্য ইকামাতে দ্বীনের কাজকেই শক্তিশালী করতে হবে। সমাজ থেকে জুলুমের অবসান, লুটপাট ও দুর্নীতি রোধে ইসলামী সমাজ কায়েমের বিকল্প নেই। হাদীসের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, যে জাতি দ্বীন বিজয়ের চেষ্টা সাধনা থেকে সরে গিয়ে দুনিয়া নিয়ে পড়ে থাকে, সে জাতির উপর অপমানজনক ক্ষমতা চাপিয়ে দেয়া হয়। তাই জিল্লতি থেকে দেশ ও জাতিকে বাঁচাতে সবাইকে ইনসাফভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠায় এগিয়ে আসতে হবে। মো: সাইফুল আলম খান মিলন বলেন, জাহেলিয়াতের ঘুনেধরা অন্ধকার সমাজ পরিবর্তনে মহানবী সা:-সক্ষম হয়েছেন। দি হান্ড্রেড বইয়ের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি আরো বলেন, আমাদের নবী শ্রেষ্ঠ, তার প্রতিষ্ঠিত সমাজ ব্যবস্থা শ্রেষ্ঠ। জীবন বিধান হিসাবেও ইসলাম সর্বশ্রেষ্ঠ। তাই উম্মাহ হিসাবে আমাদেরও শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করতে হবে ইসলামের ভিত্তিতেই।
বিশেষ অতিথি মো: নুরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, মানুষকে কুরআন শিক্ষা দিতে হবে। হিকমাহও শিখতে হবে। ইসলামের ছায়াতলে বিশুদ্ধ জীবন যাপন করে ঈমানী শক্তি অর্জন করতে হবে। নেতা-কর্মীদেরকে দ্বীন কায়েমে এগিয়ে আসতে হবে। আব্দুল জব্বার বলেন, যেখানে ইসলামের জন্য রক্ত ঝরে, সেখানে ইসলামের শক্ত ঘাঁটি হয়। শীর্ষ নেতৃবৃন্দ জীবন দিয়ে দেশের মাটিকে উর্বর করে গেছেন। আমাদের এখানে ফসর ফলাতেই হবে। প্রেস বিজ্ঞপ্তি