দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলায় প্রায় ৮৫ বছর বয়সেও হাতে কাঠ কাটার কুড়াল নিয়ে ঘুরছেন বাড়ি বাড়ি কাঠ,গাছের গুল কেটে জীবিকা নির্বাহ করছেন হযরত আলী। এই বয়সে অন্য দশ জন বয়োবৃদ্ধের মতো বিছানায় পিঠ লাগিয়ে বিশ্রাম নেওয়ার কথা তার। পোলাও – কোরমা না হোক, এক মুঠো ভাত-মাছ খাওয়ার কথা ছিলো তারও। পেটের দায়ে বিশ্রাম মেলে না হযরত আলীর। তার জম্ম স্থান উপজেলার ৪ নং ইউপির চেংগাও গ্রামে কিন্তু তার বয়স যখন ৬ বছর তখন তার বাবা মৃত্যুবরণ করেন। তারপর থেকে তিনি হিজলগাড়ী গ্রামে নানা-নানির কাছেই লালিত পালিত হয়। পৈতৃক সূত্রে কোন জমা-জমি পান নাই বলে জানান হযরত আলী। তার সংসার জীবনের মিলেনি কোন সুখ শান্তি প্রথম স্ত্রী দুই সন্তান,এক ছেলে এবং এক মেয়ে। স্ত্রী এবং ছেলে হযরত আলীকে পিটিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। পরবর্তীতে হযরত আলী ২ নং পালশা ইউপির মাঝিয়ান গ্রামে মরহুম হযরত আজহার আলীর খামার বাড়িতে ১৪ বছর চাকরি করেন। হযরত আলী সেখানে দ্বিতীয় বিয়ে করে নতুন সংসার জীবন শুরু করেন। সেখানেও হলো না তার ঠাঁই। দ্বিতীয় পক্ষের এক ছেলে এবং স্ত্রী তাকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। ২ বছর পূর্বে ফজরের সালাত আদায় এর জন্য অজু করতে গিয়ে টিউবয়েলের হ্যান্ডেল লেগে ডান চোখ হারানো হযরত আলী। হযরত আলীর দাবি বয়স বাড়ার কারণে কেউ কাজ দিতে চায় না। চেয়ে খেতেও শরম লাগে, তাই বাড়ি বাড়ি এবং রাস্তার পাশে কাঠ ,গাছের গুড়ি কেটে যে টাকা উপার্জন করি সেটা দিয়ে পৌরসভার মৌয়ারবাগ এলাকায় মেয়ের বাসায় থাকেন তিনি। হযরত আলী বলেন আমি কোন ভাতা পাই না। বয়স্ক ভাতা এবং প্রতিবন্ধী ভাতা কোন টায় পান না তিনি। তিনি বলেন এই বয়সে কেউ কাজ দিতে চায় না এবং কাঠ কাটা শক্তি পাই না, খুব কষ্টকর হয়ে পরেছে এবং ডান চোখের কারণে বাম চোখ দিয়ে একটু করে ঝাপসা দেখতেছি,শরীরের অবস্থা তেমন ভালো না। সরকারি ভাতা সহ যে সকল সুযোগ-সুবিধা রয়েছে তা চান হযরত আলী।