সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০:২৯ অপরাহ্ন

কালীগঞ্জের আলামিন অদম্য ইচ্ছাশক্তির বলেই আজ সফল উদ্যোক্তা

হুমায়ুন কবির (কালীগঞ্জ) ঝিনাইদহ :
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২১

মানুষের ভেতর এক বিশাল শক্তি লুকিয়ে আছে তার নাম ইচ্ছাশক্তি। যে শক্তি অফুরন্ত সম্ভাবনার দ্বার। এই অফুরন্ত ইচ্ছাশক্তিকে যদি সত্যিকারার্থে জাগ্রত করা যায় তাহলে সাত সমুদ্র তেরো নদী পাড়ি দিয়ে হলেও বিজয় ছিনিয়ে আনা সম্ভব। অদম্য ইচ্ছাশক্তি সাফল্যের অন্যতম সোপান। অদম্য, অজেয় ইচ্ছাশক্তি যার রয়েছে বিজয়ী হওয়ার শতভাগ সম্ভাবনা তারই থাকে। তেমনি ইচ্ছা শক্তি সম্পন্ন একজন তরুণ উদ্যোক্তার কথা বলছি। যার নাম মোঃ আলামিন শেখ(৩০), পিতা মোঃ শাহজাহান আলী শেখ, মাতা মোছা: জাহারুল নেসা।ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার ত্রিলেচানপুর ইউনিয়নের বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের তরুণ এই যুবক তার পরিবারে পাঁচ ভাইবোনের মধ্যে সবার ছোট। বাবা ব্যবসায়ী হওয়ার সুবাদে স্কুল জীবন থেকেই অবসর সময়ে বাবার ব্যবসা দেখাশোনা করতেন আলামিন। আর তখন থেকেই মনের মধ্যে একটি স্বপ্ন বাসা বাঁধতে থাকে। বাবার মতো নিজেকে একজন সফল ব্যবসায়ী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার তীব্র আকাঙ্ক্ষা তাকে সবসময় তাড়িত করে বেড়াতো। শুরু করার মত ছিলনা কোন মূলধন। পরিবারের সদস্যরা চাইতেন লেখাপড়া শেষ করে আলামিন বড় চাকরি করবে। যে কারণে পরিবারের পক্ষ থেকে মেলেনি কোন সাড়া। তবুও থেমে যাননি আলামিন। একমাত্র মনের জোরে স্বপ্নবাজ এই যুবক ছাত্রজীবনের গচ্ছিত কিছু অর্থ দিয়ে ২০০৫ সালে পৈত্রিক জমিতেই শুরু করেন রাইস মিল দিয়ে। পর্যায়ক্রমে তিনি বাউন্ডারি নেট, চার কোণা খুটি ও গোল খুটি তৈরির কারখানাও করেন।আলামিন কারখানার কাঁচামাল ঢাকা পঞ্চগড় কুস্টিয়াসহ বিভিন্ন জায়গা থেকে সংগ্রহ করেন। সীমিত মূলধন দিয়ে শুরু করলেও বর্তমানে তার চলমান চারটি প্রজেক্ট এ ৫০ লক্ষ টাকার অধিক বিনিয়োগ করা রয়েছে বলে তিনি জানান। বালিয়াডাঙ্গা গ্রাম ও আশেপাশের এলাকার চল্লিশ জন শ্রমিক তার প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন জীবিকা নির্বাহ করেন। কারখানায় উৎপাদিত বাউন্ডারি নেট, চার কোণা খুটি ও গোল খুটি স্থানীয় বাজারসহ আশেপাশের এলাকার ক্রেতাগণ কারখানায় এসেই কিনে নিয়ে যান। অনেক ক্রেতা আবার কারখানায় এসে ওয়াডার করে যান। ফলে বেচাবিক্রিও ভালো হয়। এই কারখানার একজন শ্রমিক হলেন সাজ্জাদ হোসেন। বালিয়াডাঙ্গা গ্রামেই তার বাড়ি। এই কারখানায় কাজ করে চলে তার সংসার। তিনি বলেন, আলামিন চাকরির পেছনে না দৌড়ে আমাদের এলাকায় যে কারখানা তিনি স্থাপন করেছেন সেখানে কাজ করে আমি ও আমার মত অনেকেই জীবিকা নির্বাহ করছে। এক কথায় প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের এই প্রতিষ্ঠানটি কর্মসংস্থানের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে বলে আমি মনে করি। প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার আলামিন শেখ জানান, বাবা ব্যবসায়ী হওয়ায় ছোটবেলা থেকে আমার মধ্যে ব্যবসায়ীক মনোভাব তৈরি হয়। স্বপ্ন দেখতে শুরু করি বড় ব্যবসায়ী হওয়ার। ১৩ বছরের ব্যবসায়িক জীবনের শুরুটা ছিল আমার কাছে বেশ কঠিন। কেননা পরিবার থেকে কেউ চাইত না আমি ব্যবসায়ী হয়ে উঠি। তবুও আমি থেমে না গিয়ে ধীরে ধীরে এগিয়ে যেতে থাকি। চলার পথে বিভিন্ন সময় নানা বাধা বিপত্তির সম্মুখীন হতে হয় আমাকে। ২০২০ সালে রডের দাম বৃদ্ধির কারণে আমার সাত লক্ষ টাকা ক্ষতি হয়। ২০২১ সালেও রডের দাম বৃদ্ধি থাকায় পুনরায় বড় ধরনের ক্ষতির আশঙ্কা করছি। ব্যবসায় লাভ লোকসান দুইটাই যেহেতু থাকে সেহেতু সব মেনে নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছি। এই প্রতিষ্ঠান থেকে আমার সব খরচ বাদে এক লাখ টাকার অধিক মাসে আয় হয়। স্থানীয় বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো থেকে আর্থিক সহযোগিতা পেলে আমার স্বপ্ন আছে আরো দুইটি কারখানা প্রতিষ্ঠা করার।একটি পিভিসি পাইপ ও প্লাস্টিক কারখানা অন্যটি সুতা তৈরির কারখানা। আর এজন্য ৫০ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করার প্রয়োজন। এক্ষেত্রে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর আন্তরিক সহযোগিতা পেলে আমি তা করতে পারবো।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com