রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন। গতকাল শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টায় ভাসানী পরিবারের ৫ সদস্যের একটি দল বেগম জিয়ার সাথে সাক্ষাৎ শেষে মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর মেয়ে মাহমুদা খানম ভাসানী সাংবাদিকদের একথা জানান। সকাল ১০টায় খালেদা জিয়ার সাথে দেখা করতে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে আসেন। ৩০ মিনিটের মতো তারা হাসপাতালে অবস্থান করেন। সাক্ষাৎ শেষে বেরিয়ে যাওয়ার সময় গণমাধ্যমের সাথে কথা বলেন ভাসানীর পরিবারের পক্ষ থেকে তার ছোট মেয়ে মাহমুদা খানম ভাসানী। তিনি বলেন, বেগম জিয়া কথা বলতে পারছেন, তবে খুব ধীরে ধীরে। তিনি খুবই দুর্বল। তার সাথে কথা হলে তিনি সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন। তার শারীরিক অবস্থা বিবেচনা করে আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে তাকে বিদেশে পাঠিয়ে সুচিকিৎসার সুযোগ দেয়ার জোর দাবি জানাই।
ভাসানীর নাতি হাবিব হাসান মনার বলেন, আমরা বেগম জিয়াকে দেখতে গিয়েছিলাম। তার ডাক্তাররা বলেছেন, বেগম জিয়ার অবস্থা খারাপ। তাকে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসা দেয়ার দাবি জানাই ভাসানির পরিবারের পক্ষ থেকে। নাতি মাহমুদুল হক শানু বলেন, মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানী আজীবন মজলুমের পক্ষে লড়াই করেছেন। যেখানে অন্যায় সেখানেই তিনি ছিলেন প্রতিবাদী কণ্ঠ। পাকিস্তান সরকারের ফাঁসির দড়ি থেকে তিনি যেমনিভাবে শেখ মুজিবুর রহমানকে মুক্ত করেছিলেন। তেমনি দেশের গণতান্ত্রিক সংগ্রামের অসংখ্য নেতাকর্মীকে নিপীড়নের হাত থেকেও তিনি রক্ষা করেছিলেন। বেগম খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার সুযোগ দেয়ার জন্য মওলানা ভাসানীর পরিবারের পক্ষ থেকে আমরা সরকারের কাছে আমাদের জোর দাবি জানাচ্ছি। ভাসানীর পরিবারের অন্য সদসরা হলেন, ভাসানীর বড় মেয়ে রিজিয়া ভাসানী ও নাতনি সুরাইয়া সুলতানা। অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, চেয়ারপারসনের ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা রহমান, বিশেষ সহকারী অ্যাডভোকেট শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাহ উদ্দিন টুকু ও চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইংয়ের সদস্য শামসুদ্দিন দিদার।
খালেদা জিয়াকে দেখতে হাসপাতালে ভাসানীর মেয়ে ও টুকু: রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে দেখতে এসেছেন মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর মেয়ে মাহমুদা খানম ভাসানী ও যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দীন টুকু। গতকাল শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টায় তাদের সাথে হাসপাতালে আসেন মাওলানা ভাসানীর নাতি মাহমুদুল হক শানু। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপি চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইং সদস্য শামসুদ্দিন দিদার বলেন, তারা ম্যাডামের শারীরিক অবস্থা জানতে এবং তাকে দেখতে এসেছেন। সাক্ষাৎ শেষে হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় তারা গণমাধ্যমের সাথে কথা বলবেন।
এ সময় আরো দুজনকে বেগম জিয়ার সাথে সাক্ষাৎ করতে যেতে দেখা গেছে। তবে ওই দুজনের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
খালেদা জিয়ার কিছু হলে দায় সরকারের : বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সভাপতি এম আবদুল্লাহ কালবিলম্ব না করে বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে উন্নত চিকিৎসার সুযোগ দেয়ার দাবি জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, যথাযথ চিকিৎসা-বঞ্চিত হয়ে খালেদা জিয়ার কিছু হলে তার দায় সরকারকে নিতে হবে। উন্নত চিকিৎসায় বাধা দেয়া শুধু অমানবিকই নয়, একজন মুমূর্ষু মানুষকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়ে এক ধরনের হত্যার শামিল। গত বৃহস্পতিবার সিলেটের হোটেল পানশী ইন মিলনায়তনে স্থানীয় সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএফইউজে সভাপতি এ কথা বলেন। দেশে গণমাধ্যমের সামগ্রিক নাজুক অবস্থা তুলে ধরে এম আবদুল্লাহ বলেন, অনির্বাচিত ও অগণতান্ত্রিক সরকার সংবাদমাধ্যমকে তাদের দলীয় ও সরকারি প্রচারমাধ্যমে পরিণত করেছে। অনুসন্ধানি সাংবাদিকতার পথ রুদ্ধ করেছে। শত শত সাংবাদিক বেকারত্বের গ্লানি নিয়ে ধুঁকছেন। নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন প্রতি মাসে অন্তত ছয় জন সাংবাদিক। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে সাংবাদিক সমাজকে ঐক্যবদ্ধ ও সোচ্চার হতে হবে। স্থানীয় জনপ্রিয় দৈনিক ‘সিলেটের ডাক’- এর প্রধান বার্তা সম্পাদক ও প্রবীণ সাংবাদিক এনামুল হক জুবেরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএফইউজে মহাসচিব নুরুল আমিন রোকন, সহসভাপতি ওবায়দুর রহমান শাহীন, সাংগঠনিক সম্পাদক খুরশীদ আলম ও সাবেক সিনিয়র সহকারী মহাসচিব আহমদ মতিউর রহমান। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন স্থানীয় সিনিয়র সাংবাদিক মোহাম্মদ বদরুদ্দোজা বদর, মুহাম্মদ আমজাদ হোসাইন, খালেদ আহমদ, এম এ মতিন, সেলিম আউয়াল, মো: আফতাব উদ্দিন, খালেদ আহমদ (খালেদ মেহেদী), মোহাম্মদ এনামুল হক, মো: শাফী চৌধুরী, ইফতেখার মো: নাবিল, তৌহিদ চৌধুরী প্রদীপ প্রমুখ।
বিএফইউজে মহাসচিব নুরুল আমিন রোকন বলেন, দেশে গণতন্ত্র ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা পুনরুদ্ধারে সাংবাদিকদের ঐক্যের কোনো বিকল্প নেই। বিএফইউজে সারাদেশে সাংবাদিক ইউনিয়নের কার্যক্রম স¤প্রসারণের যে উদ্যাগ নিয়েছে তার অংশ হিসেবে সিলেটে কাজ শুরু হয়েছে। মতবিনিময় সভায় গুরুত্বপূর্ণ বিভাগীয় শহর সিলেটে বিএফইউজের অঙ্গ ইউনিয়ন হিসেবে সাংবাদিক ইউনিয়নের কার্যক্রম শুরুর সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত হয়। একটি প্রস্তাবিত কমিটিও গঠন করা হয় যা বিএফইউজের নির্বাহী পরিষদের অনুমোদন সাপেক্ষে কার্যক্রম পুরোদমে শুরু করবে।