সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:২১ অপরাহ্ন

রোস্তম আলী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সভাপতির বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ

হুমায়ুন কবির কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ) :
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০২১

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার অন্যতম একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হলো রোস্তম আলী মাধ্যমিক বিদ্যালয়। সম্প্রতি বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি গঠন নিয়ে নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠছে। প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাতা ও দাতা সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা (যুদ্ধকালীন কমান্ডার) বি এম গোলাম সারওয়ার রেজা স্বাক্ষরিত একটি অভিযোগপত্র কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাদিয়া জেরিনের নিকট দাখিল করেন ২০ ডিসেম্বর ২০২১ তারিখে। অভিযোগপত্রে তিনি উল্লেখ করেন, রোস্তম আলী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আতিয়ার রহমান অবৈধভাবে মোহাম্মদ আমির হোসেনকে দীর্ঘদিন সভাপতি পদে রেখে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতি করে চলেছেন। প্রধান শিক্ষক ও সভাপতির যোগসাজসে উক্ত প্রতিষ্ঠানের অর্থ আত্মসাৎ করাসহ ১১ জন অযোগ্য শিক্ষককে দুর্নীতির মাধ্যমে মোটা অঙ্কের ঘুষ লেনদেন করে নিয়োগ দিয়েছেন। এভাবে একের পর এক প্রতিষ্ঠান কেন্দ্রিক প্রধান শিক্ষক আতিয়ার রহমান নানা দুর্নীতি করেই চলেছেন। তিনি অনৈতিক ও দুর্নীতিযুক্ত কার্যক্রম প্রতিষ্ঠানটিতে চলমান রাখার জন্য সব সময় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিকে নিজ আয়ত্বে রাখেন। যাতে করে যেকোনো ধরণের অনিয়ম-দুর্নীতি তিনি সহজেই করতে পারেন। আর এ লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যকে সামনে রেখেই প্রতিবার তিনি ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও সদস্য নিজ পছন্দের ব্যাক্তিদের বানানোর জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করেন। এবার রোস্তম আলী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের যে ম্যানেজিং কমিটি গঠন হয়েছে সেখানেও তিনি নানা কৌশল অবলম্বন করে নিজের পছন্দ নয় এমন ব্যক্তিদের বাদ দিয়ে ম্যানেজিং কমিটি পাস করে এনেছেন। এর প্রতিবাদ স্বরূপ ম্যানেজিং কমিটির ৪ জন সদস্য পদত্যাগ করেন। তারা হলেন- গোলাম সরোয়ার রেজা, আজিজুল হক, সুনীল কুমার ও মোক্তারআলী। প্রধান শিক্ষক আতিয়ার রহমানের এহেন দুর্নীতি ও অনিয়মের খবর বিভিন্ন গণমাধ্যমে বারংবার প্রকাশিত হলেও তিনি বহাল তবিয়তে চেয়ারে বসে আছেন। ম্যানেজিং কমিটির সদস্য হওয়ার জন্য ২০-১০-২০২১ তারিখে প্রধানশিক্ষকের নিকট থেকে মনোনয়ন ফরম কিনেছিলেন আসাদুজ্জামান আসাদ। এই ফরমটি প্রাধান শিক্ষক গায়েব করে দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেন আসাদ। সরোয়ার রেজা আরও জানান, স্কুলের শিক্ষার্থীরা প্রতি মাসের বেতন নিয়মিত দিলেও তাই স্কুল ফান্ডে জমা করেন না প্রধান শিক্ষক। স্কুলের পেছনে একটি বড় পুকুর রয়েছে, যেটি নামমাত্র মূল্যে লিজ দিয়ে সেখান থেকে টাকা আত্মসাৎ করেন প্রধান শিক্ষক। স্কুলটির নিজস্ব সম্পত্তি হিসেবে পরিগণিত পুকুরটি পুন:খননের জন্য সম্প্রতি মোটা অঙ্কের অর্থ বরাদ্দ হয়েছে। আবার শোনা যাচ্ছে কিছুদিনের মধ্যেই স্কুলের শিক্ষক ও কর্মচারী পদে বেশকয়েকজন নিয়োগ দেওয়া হবে। তাই প্রধান শিক্ষক তড়িঘড়ি করে পছন্দের লোক নিয়ে ম্যানেজিং কমিটি করেছে। তার একমাত্র উদ্দেশ্যই হলো নিয়োগ বাণিজ্য ও পুকুর খননের প্রজেক্ট থেকে টাকা লোপাট করা। এলাকার জনগণের মধ্যে এখন তাই প্রশ্ন উঠেছে প্রধান শিক্ষক আতিয়ারের খুটির জোর কোথায়? দুর্নীতিবাজ এই শিক্ষকের কি কিছুই হবে না? কালীগঞ্জ উপজেলার রঘুনাথপুরে যশোর-খুলনা মহাসড়কের পাশেই অবস্থিত এই ঐতিহ্যবাহী মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি। ১৯৭৩ সালে প্রতিষ্ঠিত এই বিদ্যালয়টির অবকাঠামোগত দিক লক্ষ্য করলে দেখা যায়, উপজেলার অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেভাবে উন্নয় হয়েছে সে অন্যুায়ী এখানে তেমন কোনো উন্নয়ন হয়নি। বিদ্যালয়ের ভবন গুলোর জরাজীর্ণ অবস্থা দেখে মনে হয় যেন প্রতিষ্ঠানটির দেখভাল করার কেউ নাই। প্রায় ৭০০ শিক্ষার্থীর পাঠদানকারী এই প্রতিষ্ঠানটির প্রধান শিক্ষকের এরূপ দুর্নীতি ও অনিয়মের রামরাজত্ব চলতে থাকলে শিক্ষার মান নিয়ে প্রশ্ন ওঠাই স্বাভাবিক। তাই প্রতিষ্ঠানটিতে দুর্নীতি ও অনিয়মের সাথে জড়িত প্রধান শিক্ষকসহ সকলের বিরুদ্ধে অতিসত্বর ব্যবস্থা গ্রহণ করে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে এলাকার জনগন সংশ্লিস্টদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। উল্লেখ্য গোলাম সরোয়ার রেজার স্বাক্ষরকৃত অভিযোগপত্রটি চেয়ারম্যান মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড যশোর, মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার, কালিগঞ্জ ও দুর্নীতি দমন কমিশন বরাবর ডাকযোগে প্রেরণ করেছেন বলে জানা যায়।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com