বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার। প্রতি বছর পুরোনো বছরকে বিদায় ও নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে লাখো পর্যটকের ঢল নামে সৈকতে। কিন্তু এবার আশানুরূপ পর্যটক নেই বললেই চলে।
এই অবস্থার জন্য দুটি বিষয়কে দায়ী করা হচ্ছে। এর মধ্যে একটি হলো খাবারের দাম নিয়ে অপপ্রচার এবং এক নারীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ। জেলা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বলছেন, ‘বিচ্ছিন্ন’ কিছু ঘটনায় তারা কিছুটা বিব্রত। তবে পর্যটকবান্ধব কক্সবাজার গড়তে কাজ করে যাচ্ছেন।
সী গাজীপুর রিসোর্টের মহাব্যবস্থাপক আব্দুল জব্বার বলেন, করোনা সংক্রমণের আগে থার্টি ফাস্ট নাইট ঘিরে কম করে হলেও ৯৫ শতাংশ কক্ষ অগ্রিম ভাড়া হয়ে যেত। এবারও আমরা তেমন আশা করেছিলাম। কিন্তু এবার পর্যটক সমাগম কম দেখছি। মাত্র ৪০ শতাংশ রুম বুকিং হয়েছে।
হোটেল আমিন ইন্টারন্যাশনালের মালিক মুন্না জানান, প্রতি বছর এই সময়ে সব রুম বুকিং হয়ে যায়। কিন্তু এবার তেমন বুকিং হয়নি। একবারে ফাঁকা বললেই চলে।
লাইফ গার্ডকর্মী ইউছুফ আলী বলেন, প্রতি বছর থার্টি ফার্স্ট নাইটে কক্সবাজারে লাখো পর্যটকের সমাগম হয়। এবার পর্যটক নেই বললেই চলে। বুধবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত সুগন্ধা পয়েন্ট ২ হাজার পর্যটকও ছিল না। যে সুগন্ধা পয়েন্টে পা রাখার জায়গা থাকত না সে সুগন্ধা পয়েন্ট এখন পর্যটক নেই বললে চলে। সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, স¤প্রতি সময়ে কক্সবাজারে ঘটে যাওয়া কিছু ঘটনার কারণে ও থার্টি ফার্স্ট নাইটের আয়োজন না থাকায় শূন্যতা বিরাজ করছে কক্সবাজারের পর্যটনে।
কক্সবাজার ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আনোয়ার কামাল জানান, কিছু বিছিন্ন ঘটনার কারণে এবারের থার্টি ফার্স্ট নাইটে কক্সবাজার সৈকতে প্রভাব পড়েছে। ঢাকার মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে আসা শেলী চৌধুরী (৩৫) বলেন, ‘সন্তানদের স্কুল ছুটির পর কক্সবাজারে বেড়াতে এসেছি। উদ্দেশ্য ছিল স্বামী-সন্তানসহ সবাই মিলে থার্টি ফার্স্ট নাইট উদযাপন করব। কিন্তু কক্সবাজারে কোথাও থার্টি ফার্স্ট নাইটের অনুষ্ঠান হবে না। এ কারণে আমরা খুব হতাশ।
চট্টগ্রামের হালিশহর এলাকা থেকে এসেছেন ইরানুল হক ও রাহেলা পারভিন দম্পতি। চীনের একজন পর্যটককে সঙ্গে নিয়ে এক সপ্তাহ ধরে কক্সবাজারে আছেন তারা। থার্টি ফার্স্ট নাইট উদযাপন করাই ছিল তাদের এতদিন থাকার উদ্দেশ্য। কিন্তু থার্টি ফার্স্ট নাইটে অনুষ্ঠান হচ্ছে না। তবে পরিস্থিতি ঠিক থাকলে নতুন বছরের প্রথম সপ্তাহে প্রচুর পর্যটক সমাগম হবে বলে আশাবাদী পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। কক্সবাজার মেরিন ড্রাইভ হোটেল রিসোর্ট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মুখিন খান ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘অন্যান্য বার বছরের বিদায়ী সূর্যাস্ত দেখতে কক্সবাজারে যেভাবে পর্যটক আসত, এবার তা দেখা যায়নি। তবে আমরা আশা করছি চলতি সপ্তাহে পর্যটক বাড়বে।
কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহিউদ্দিন বলেন, থার্টি ফার্স্ট নাইটে অনুষ্ঠান না থাকায় পর্যটক কম সৈকতে। তবে স্থানীয় ভ্রমণপ্রেমীদের কিছুটা আগমন ঘটেছে। এরপরও পর্যটকদের নিরাপত্তায় পর্যাপ্ত ট্যুরিস্ট পুলিশ রয়েছে।